নন্দিনীকে ভুলতেই বসেছিলেন
সুনন্দবাবু। এতবড় বাড়ী,গাড়িবারান্দা,লন,ফুলের
বাগান সব কেমন চুপচাপ। বিমর্ষ। বাগানের মালী বিভুর শত চেষ্টাতেও বিষন্নতা কাটছে
না।
রক্তের ক্যান্সারে নন্দিনী যেদিন
মুম্বই টাটা ক্যন্সার হসপিটালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করল সেদিনও বাড়ীটাকে ভীষণ বিষন্নতায় পেয়ে
বসেছিল। সেদিনটা ছিল সুনন্দবাবুর একমাত্র সন্তান সৌরদীপের সপ্তম জন্মদিন।
সাতবছরের সৌরদীপ বাবাকে প্রশ্ন করেছিল " বাবা মা কোথায় গেল? আর ফিরে আসবে না"? সুনন্দ ছেলেকে বলেছিলেন " না বাবা। তোমার মা আকাশের নক্ষত্র হয়ে গেছেন। দেখতে পাবে রাতের আকাশে। খুঁজে নিও।"
সাতবছরের সৌরদীপ বাবাকে প্রশ্ন করেছিল " বাবা মা কোথায় গেল? আর ফিরে আসবে না"? সুনন্দ ছেলেকে বলেছিলেন " না বাবা। তোমার মা আকাশের নক্ষত্র হয়ে গেছেন। দেখতে পাবে রাতের আকাশে। খুঁজে নিও।"
সৌরদীপ
হাজার চেষ্টা করেও খুঁজে পায় নি।
আজ ওর বারোতম জন্মদিন। সেই টাটা
মেমোরিয়াল ক্যান্সার হসপিটালের আট নং কেবিনের বেডে শয্যাশায়ী,এবং
রক্তক্যান্সারে।
মাথায় একটাও চুল নেই। ফ্যাকাশে
মুখ। ছোট্ট শরীরে বারংবার ক্যামোথেরাপী নেওয়ার ধকলে ক্লান্ত শরীর। গোধুলির ক্ষীন
আলোটুকু আসছে সবুজ পর্দা ভেদ
করে। রুমে বেডের পাশে বসে সুনন্দবাবু ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে আছেন একমাত্র ছেলের
দিকে। নার্স ইঞ্জেকশেন পুশ করতে করতে স্বগতোক্তি করলেন,' ও
মাই গড'।
হঠাৎ সৌরদীপ বাবাকে বলল,"বাবা
সন্ধ্যে হয়ে গেল তাই না? সবুজ পর্দাগুলো খুলে দাও। রাতের
আকাশে তারা দেখব। মায়ের কাছে যাবো। নিশ্চয় খুঁজে পাবো, দেখে
নিও।"
সৌরদীপ
নিভে গেল আকাশের উজ্জলতা বাড়াতে।