গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

শুক্রবার, ২৭ মে, ২০১৬

সালাউদ্দিন আহমেদ




ভালবাসি বলে ফোনটা রাখলো হিমেল। রুনা রিসিভারটা ঠেকিয়ে রাখলো গালো আরও কিছুক্ষণ। যেন শেষ কথাটা প্রতিধ্বনি হয়ে রিপিট হচ্ছে। রুনার সাথে তার প্রেমের বয়স ২ বছর। ২ বছর প্রেমের পর পারিবারিকভাবে বিয়ের জন্য কথাবার্তার সূচনা। সামনের বছর তাদের বিয়ে করার কথা। অফিস থেকে আজ তাড়াতাড়ি বের হতে বলেছে রুনা, তাকে নিয়ে একটু ফুচকা খেতে যাবে লেকের পাড়ে।
কাজগুলো দ্রুত গুছিয়ে নিয়ে ৫টা বাজতেই বেরিয়ে পরে হিমেল। সিঁড়ি বেয়ে ২ তালা নামার পর আবার ফেরত আসে, ধুর! তাড়াহুড়োতে নতুন জয়েন করা কলিগকে না বলেই চলে যাচ্ছে? মাত্র দুমাস আগে জয়েন করেছে টিনা। দেখতে শুনতে বেশ ভালো। টিনাকে অবশ্য রুনার কথা বলেনি হিমেল। কাজের ফাঁকে মাঝে মাঝে তার সাথে কথা বলে, হাসি তামাশা করে। মেয়েটা ভালোই! সৌন্দর্য আর বুদ্ধিমত্তার এমন মিলন তো খুব বেশি একটা হয় না। রুনা শুধু দেখতেই সুন্দর, কিন্তু পড়ালেখা বা ক্যারিয়ারে তেমন আগ্রহ নেই! হিমেল ভাবে রুনা যদি টিনার মত হতো! অথবা টিনার সাথে যদি তার রুনার আগে পরিচয় হতো! আচ্ছা একদিন টিনাকে ফুচকা খেতে নিয়ে গেলে মন্দ হয় না !
 একটা ফাইল ফেলে যাওয়ার ছুতো দিয়ে ফিরে আসে অফিসে। তারপর টিনার টেবিলের দিকে এগিয়ে যায়। দু চারটা সৌজন্যমূলক কথা আর অহেতুক আলাপ শেষে বাই বলে আবার বেরিয়ে পরে। ফুচকার জন্যে আমন্ত্রণ দিতে গিয়েও দিতে পারেনি আসেপাশে অন্য কলিগরা থাকায়।
  একটা রিকশা নেয় হিমেল। রুনাকে ফোন করার জন্যে মোবাইল্টা বের করে। কিন্তু মোবাইল হাতে নিয়ে টিনার নাম্বারে মেসেজ লিখতে শুরু করে, “কালকে অফিস শেষে লেকের ধারে যাবেন ফুচকা খেতে?” সেন্ড করতে যাবে এমন সময় মেসেজ টোন বেজে উঠে। এই, বেরিয়েছো? কতক্ষন লাগবে?” রুনার মেসেজ।
হিমেল টিনাকে লেখা মেসেজটা দেখতে থাকে আর ভাবে- এ কি করছে সে? ব্যভিচার কি শুধু দেহেরই হয় নাকি মনেরও?
 হিমেল টিনাকে লেখা মেসেজটা ডিলিট করে রুনাকে কল দেয়,
এইতো আসছি! …রিকশাতে……, …আর ১৫ মিনিট লাগবে