গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

শুক্রবার, ২৭ মে, ২০১৬

দীপঙ্কর বেরা



বালির বাঁধ

নদীতে বান ডেকেছিল। তিন চার দিন ধরে প্রায় শাঁখ বাজিয়ে তাই জানানো হচ্ছিল। সবাই যাতে সর্তক হয়। বিনি আজ সকালেই চলে গেল বাঁধের কাছে। চড়া পড়া নদীতে এখন জলে টইটুম্বুর। সারা বছরই তো জল থাকে না। সবাই চাষবাস করে। আজ যেন চেনাই যাচ্ছে না। রাস্তায় কাতারে কাতারে লোক। কত বালির বস্তা নিয়ে গ্রামের অনেকেই এদিক ওদিক যাচ্ছে আসছে ।
উঁচু বাঁধ। তাই উপচে জল গ্রামে ঢুকবে না। কিন্তু ছোট খাটো যে সব গর্ত তাই বড় আকার ধারণ করছে। কিছুটা নদীর দিক থেকে বালির বস্তায় আটকানোর চেষ্টা হচ্ছে। জলের তলায় যে গর্ত তাকে সামাল দিতে হচ্ছে গ্রামের দিকের বাঁধে বালির বস্তা দিয়ে। সেখানেই বিলুর সাথে দেখা।
-কি রে বিনি, হাত লাগা না হলে গ্রাম ভেসে যাবে?
-যা দেখছি কিছু করা যাবে বলে মনে হয় না।
-তবুও চেষ্টার ক্রুটি রাখতে নেই।
দুজনেই বালির বস্তা গর্তটার কাছে আনল। কেউ কেউ বাঁশ পুঁতছে। সেখানের একজন বলল আগে থেকে নদী সংস্কার করে বাঁধ মেরামত করলে এমনটা হত না। এখন
 এসব করে কিছু কি হবে?
বিলু কাজের ফাঁকে বিনিকে বলে তোর মা কি আলাদাই থাকে?
-হ্যাঁ রে।
-তোর বউ তাহলে তোর মাকে মানিয়ে নিতে পারল না ।
-আর আমি বউকেও মানিয়ে নিতে হিমসিম খাচ্ছি। সম্পর্কের এই উথাল পাথালে কোন কুল বাঁচাই। ভুল ঠিকের মাঝে নানান গর্ত। শেষে না সব বালির বাঁধ হয়ে যায়।
বলতে বলতে
 নদীর বাঁধের একদিক গর্ত বরাবর ভেঙে গেল। আর আটকানো গেল না। সবাই গ্রামের দিকে নিজেদের বাঁচাতে ছুটল। দেখা যাক তাদের মত বিনি তার সংসার বাঁচিয়ে বড় রাস্তায় দাঁড়াতে পারে কি না?