
একটি অ-রাজনৈতিক গল্প
মহারাজ বললেন , আমিই সব । যা কিছু দেখছো সব আমার হাতেই করা । এই অলীক নগরের নব রূপকার আমি । এতকাল কিছুই হয়নি । দেখ ,সুমেরু থেকে কুমেরু -- সব ঠাণ্ডা করে দিয়েছি । এখন ডাকাতের হাতে কেউ মরে না । সব ক্লাবে টাকা দিয়েছি -- সুইমিং পুল হবে । রাস্তায় রাস্তায় জ্বলছে আলো । তোমরা সবাই আমার পুজো করো ।
এক
কৃষক বললে্ , কিন্তু রাজামশাই ,আমরা খেতে পাই না দুবেলা দুমুঠো । ফসলের দাম
পাইনা যে...
কথা শেষ হবার আগেই রাজা জনগনের দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে বললেন ,দেখেছ এই একটা গুপ্তচর , ধরে দিলুম । এরা ভাল কিছু দেখবে না । কেবল আমার দোষ খোঁজে । আর নিন্দা করে । রাজার নির্দেশে সিপাহীরা সেই কৃষককে বন্দী করলে ।
একদিন স্নাতকোত্তর এক ছাত্র বললে ,মহারাজ ,এত যে পড়াশুনো করলাম ,চাকরী কই ? রাজা বললেন , চাকরী চাকরী করিস কেন ? হাতের কাজ করে খা । কত কাজ আছে চারিদিকে একটা করলেই তো হয় ,কেবল চাকরী । চাকরী কি ছেলের হাতের মোয়া নাকি !
এটা গনতন্ত্র ।ভোট হয় ।আগের মত রাজার ছেলে রাজা হতে পারে না । তাই এখানে পাঁচ বছর পর পর রাজা পালটে যায় ।এটাই নিয়ম । রাজা আসে রাজা যায় । জনগনতন্ত্র অলীক নগরের বিশেষ বৈশিষ্ট্য । এই অলীক নগর শিক্ষা,স্বাস্থ্য , কর্মে ,শিল্পে সবার ওপরে ,বলে ভাষণ দিচ্ছেন রাজার অনুচর । আগামী পাঁচ বছরে আপনারা যদি আরো ভালো থাকতে চান , এই রাজাকেই ভোট দিন । মহারাজ দয়ার প্রতিমূর্তি ।
কথা শেষ হবার আগেই রাজা জনগনের দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে বললেন ,দেখেছ এই একটা গুপ্তচর , ধরে দিলুম । এরা ভাল কিছু দেখবে না । কেবল আমার দোষ খোঁজে । আর নিন্দা করে । রাজার নির্দেশে সিপাহীরা সেই কৃষককে বন্দী করলে ।
একদিন স্নাতকোত্তর এক ছাত্র বললে ,মহারাজ ,এত যে পড়াশুনো করলাম ,চাকরী কই ? রাজা বললেন , চাকরী চাকরী করিস কেন ? হাতের কাজ করে খা । কত কাজ আছে চারিদিকে একটা করলেই তো হয় ,কেবল চাকরী । চাকরী কি ছেলের হাতের মোয়া নাকি !
এটা গনতন্ত্র ।ভোট হয় ।আগের মত রাজার ছেলে রাজা হতে পারে না । তাই এখানে পাঁচ বছর পর পর রাজা পালটে যায় ।এটাই নিয়ম । রাজা আসে রাজা যায় । জনগনতন্ত্র অলীক নগরের বিশেষ বৈশিষ্ট্য । এই অলীক নগর শিক্ষা,স্বাস্থ্য , কর্মে ,শিল্পে সবার ওপরে ,বলে ভাষণ দিচ্ছেন রাজার অনুচর । আগামী পাঁচ বছরে আপনারা যদি আরো ভালো থাকতে চান , এই রাজাকেই ভোট দিন । মহারাজ দয়ার প্রতিমূর্তি ।
গাছের
ডালে বসেছিল ব্যাঙ্গমা আর ব্যাঙ্গমী । তাঁরা ফিক করে হেসে উঠল । রাজার অনুচর তাকাল
এদিক- ওদিক । না কেউ
কোথাও নেই । রাজার অনুচর আবার বলতে লাগলেন , আমরা সততার পথে চলি । সবাই হাততালি দিল । --ঠিক ঠিক । তাই
তোমরা ঘুষ নাও না , অনুদান নাও । বললে
ব্যাঙ্গমা ।
থেমে গেল ভাষণ । খোঁজ খোঁজ শুরু , কে বললে এসব কথা ? ওসব বিরোধীদের চক্রান্ত ... বললে একজন ।
ঠিক সেই সময় গাছের ডালে বসা কাকগুলি সমস্বরে ডেকে উঠল । রাজার অনুচর দেখলে ,কে যেন বিষ্ঠা ফেলেছে তাঁর শ্বেত - শুভ্র পাঞ্জাবীর গায়ে ।
থেমে গেল ভাষণ । খোঁজ খোঁজ শুরু , কে বললে এসব কথা ? ওসব বিরোধীদের চক্রান্ত ... বললে একজন ।
ঠিক সেই সময় গাছের ডালে বসা কাকগুলি সমস্বরে ডেকে উঠল । রাজার অনুচর দেখলে ,কে যেন বিষ্ঠা ফেলেছে তাঁর শ্বেত - শুভ্র পাঞ্জাবীর গায়ে ।
একটি দোলের গল্প
আয়নার সামনে এসে দাঁড়ালো ঋজু ।ভেসে উঠলো সে আয়নার ভেতরে ।বাইরের ঋজু আর ভেতরের ঋজু--দুজনের কথা হল ।এভাবেই কথা হয় ওদের ।
-- আজ তো দোল । রং খেলা । কতকাল রং খেল না জানো ?বললে আয়নার ভেতরের ঋজু ।
--হুম দশ বছর ।
--সেই যে শ্রেয়ার সাথে শেষবার...
--হুম ।
--দোলের আগের দিন শ্রেয়া এসেছিল ।তোমাকে যে পাগলের মত ভালোবাসতো !তুমি ওকে হলুদ আর সবুজ আবির মাখিয়ে ছিলে ? আরো কীসব করেছিলে...
হাসি ফুটে উঠলো বাইরের ঋজুর ঠোঁটে ।কী আর করেছিলাম !জড়িয়ে ধরেছিলাম ।ঠোঁটে ঠোঁট ।ও আমাকে ভূত করে দিয়েছিল আবিরে ।
--আর কিছু করোনি ?
--করেছিলাম ।ঐ একটু মাথা ফাটা রঙ আবিরের ভিতর লুকিয়ে রেখেছিলাম ।
--হুম ।সেইটেই তো বলছি ।তারপর...
--তারপর ? তার পর...তার বছর তিনেক পর শ্রেয়া চলে গেল ।
একথা বলতেই চোখে জল এল বাইরের ঋজুর ।
ভেতরের ঋজু স্বাভাবিক ।শক্ত ।বললে ,সকলকেই তো একদিন চলে যেতে হয় ।কেউ আগে যায় ,কেউ বা পিছে ।ও চলে গেছে বলে আর রং খেলবে না এটা কোনো কাজের কথা নয় ।জীবন রঙিন ,কারও জন্য কিছু থেমে থাকে না ।
বাইরের ঋজু যেন তাকিয়ে থাকে উদাস । ভোর হল । বাইরে সকাল নেমেছে ।পাখি ডাকছে ।
ভেতরের ঋজু আবার বললে ,এভাবে আর কতদিন চলবে ? টেবিলে এসব কী...
হা হা করে হেসে উঠলো বাইরের ঋজু ।বললে ,জীবন--যা বাঁচিয়ে রেখেছে আমায় ।
এই যে দেখছ কাচের অ্যাসট্রে ,এটা কার দেওয়া জানো ?
--জানি । শ্রেয়ার দেওয়া তোমাকে শেষ উপহার ।
আবার হেসে উঠল বাইরের ঋজু । ঘর কেঁপে উঠল সেই হাসির গমকে । হয়ত আয়নাটাও । তারপর হাতের চিরুনিটা ছুঁড়ে মারল ভিতরের ঋজুর দিকে । সে তবু ঠায় দাঁড়িয়ে থাকল নির্লজ্জের মত আয়নার ভিতরে ।
আয়নার সামনে এসে দাঁড়ালো ঋজু ।ভেসে উঠলো সে আয়নার ভেতরে ।বাইরের ঋজু আর ভেতরের ঋজু--দুজনের কথা হল ।এভাবেই কথা হয় ওদের ।
-- আজ তো দোল । রং খেলা । কতকাল রং খেল না জানো ?বললে আয়নার ভেতরের ঋজু ।
--হুম দশ বছর ।
--সেই যে শ্রেয়ার সাথে শেষবার...
--হুম ।
--দোলের আগের দিন শ্রেয়া এসেছিল ।তোমাকে যে পাগলের মত ভালোবাসতো !তুমি ওকে হলুদ আর সবুজ আবির মাখিয়ে ছিলে ? আরো কীসব করেছিলে...
হাসি ফুটে উঠলো বাইরের ঋজুর ঠোঁটে ।কী আর করেছিলাম !জড়িয়ে ধরেছিলাম ।ঠোঁটে ঠোঁট ।ও আমাকে ভূত করে দিয়েছিল আবিরে ।
--আর কিছু করোনি ?
--করেছিলাম ।ঐ একটু মাথা ফাটা রঙ আবিরের ভিতর লুকিয়ে রেখেছিলাম ।
--হুম ।সেইটেই তো বলছি ।তারপর...
--তারপর ? তার পর...তার বছর তিনেক পর শ্রেয়া চলে গেল ।
একথা বলতেই চোখে জল এল বাইরের ঋজুর ।
ভেতরের ঋজু স্বাভাবিক ।শক্ত ।বললে ,সকলকেই তো একদিন চলে যেতে হয় ।কেউ আগে যায় ,কেউ বা পিছে ।ও চলে গেছে বলে আর রং খেলবে না এটা কোনো কাজের কথা নয় ।জীবন রঙিন ,কারও জন্য কিছু থেমে থাকে না ।
বাইরের ঋজু যেন তাকিয়ে থাকে উদাস । ভোর হল । বাইরে সকাল নেমেছে ।পাখি ডাকছে ।
ভেতরের ঋজু আবার বললে ,এভাবে আর কতদিন চলবে ? টেবিলে এসব কী...
হা হা করে হেসে উঠলো বাইরের ঋজু ।বললে ,জীবন--যা বাঁচিয়ে রেখেছে আমায় ।
এই যে দেখছ কাচের অ্যাসট্রে ,এটা কার দেওয়া জানো ?
--জানি । শ্রেয়ার দেওয়া তোমাকে শেষ উপহার ।
আবার হেসে উঠল বাইরের ঋজু । ঘর কেঁপে উঠল সেই হাসির গমকে । হয়ত আয়নাটাও । তারপর হাতের চিরুনিটা ছুঁড়ে মারল ভিতরের ঋজুর দিকে । সে তবু ঠায় দাঁড়িয়ে থাকল নির্লজ্জের মত আয়নার ভিতরে ।