এই সংখ্যায় ৮টি গল্প । লিখেছেন ঝর্না চট্টোপাধ্যায়,
সুবীরকুমার রায়, মৌ দাশগুপ্তা, আবু রাশেদ পলাশ, নীতা মন্ডল, রুখশানা কাজল, দেবাশিস কোনার ও সোহাগ বিশ্বাস
গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।
সোমবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৫
সোমবার, ১৭ আগস্ট, ২০১৫
ঝর্না চট্টোপাধ্যায়

ইদানীং লালু স্যাকরার ভাইপো
রতন আর তাঁতিপাড়ার নিমাই তাঁতির ছোট ব্যাটা শিবুর বেশ ভাবসাব। রতন মাঠের ধারে বড়
রাস্তার ওপরে একটা তেলেভাজার দোকান
দিয়েছে। কিন্তু তেলেভাজা দিয়ে শুরু করলেও সেখানে ডিমভাজা,
যাকে ওরা বলে মামলেট সঙ্গে পাঁউরুটি, মুড়ি-চপ,
ঘুঘনি এসবও পাওয়া যাচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে লালু স্যাকরার ছো্ট
মেয়ে বীণা ইশ্কুল থেকে ফিরবার পথে দাদার দোকানে এসে খানিক সময় কাজ করে দিয়ে যাচ্ছে। লালু স্যাকরার ছেলে নেই,
ভাইপোই ছেলের মত। বীণা
এসে রতনের দোকানে পরোটা করে দিয়ে যাওয়ার ফলে ঘুঘনির সঙ্গে বিকোচ্ছেও দেদার।
গ্রামের মেয়ে-ইশ্কুলে ক্লাস নাইনে পড়ে বীণা। দেখতে-শুনতে ভালো। পরিষ্কার চোখ-মুখ, মাজা রঙ। কথাবার্তাতেও বেশ টরটরে। বীণাকে দেখে শিবুর একটু ইয়ে হয়েছিল,গদগদ হয়ে এগিয়ে কথা বলতেও এসেছিল, পাত্তা
পায়নি। উলটে বীনা কটকট করে দুকথা শুনিয়ে দিয়েছে শিবুকে। বন্ধুর দোকানে বসে বসে
গুলতানি না করে কিছু একটা তো করলেই পারে! নিজের কিছু হয় না তাতে, অন্যেরও সময় নষ্ট।
চুপ্
কর...’ এক ধমক দেয় বোনকে রতন। বীণা তখনকার মত চুপ
করলেও মেয়েটার নজর আছে সবদিকে। ক্যাশ বাক্স এমন জায়গায় রেখেছে, কোনভাবেই সেখানে হাত দেওয়া যাবে না। দোকানে লোকজন আসা-যাওয়া, খদ্দের দেখা সবদিকে নজর এই মেয়ের। এভাবে কাজ করলে রতন তো দুদিনেই
কলাগাছ!
--ইশ্,
এমন যদি তার একজন থাকত! মাইরি, করে
দেখিয়ে দিত শিবু। মনে মনে ভাবে সে। কিন্তু ভাবা হয়
না, আবার খ্যাঁক করে ওঠে বীণা---কই, বাড়ি গেলে না শিবু দা? এখানে বসে থেকে কি করবে,
দেখছই তো, দাদা খদ্দের নিয়ে ব্যস্ত...’।
দীর্ঘশ্বাস
ফেলে শিবু। একটা দোকানও যদি দিত তার বাবা।কিন্তু দোকান যে দেবে,
সে রেস্ত কই? স্যাকরা আর তাঁতি কি এক!
(২)
সেদিন
তখন বেলা এগারোটা। রতন ক্যাশের সামনে
বসে একজনের হাতে টাকা
গুণে দিচ্ছে, আগামীকাল দোকান বাজারের
জন্য। বীণা বাড়তি ঘুঘনি-পরোটা
একটা ছোট টিফিন কৌটায় ঢেলে নিচ্ছে, বাড়ি
নিয়ে যাবে বলে। মায়ের জ্বর দেখে এসেছে, আজ আর বাড়ি গিয়ে
রান্নার ঝামেলা করবে না সে, এই দিয়েই চালিয়ে দেবে। লালু
স্যাকরা সকাল হতে না হতেই একেবারে প্রথম ট্রেনেই কলকাতা গেছে, পুরনো মনিবদের কাছে যদি কিছু কাজ পায়!
দোকানে
এখন ভিড় কম। মা লক্ষ্মীর কৃপায় বিক্রিবাটা ভালই চলছে। দাদার জন্যই বীণা অপেক্ষা
করছে, কথা বলা শেষ হলেই সে বাড়ি যাবে, মা একা আছে। রতনকে সে আগেই খাইয়ে দিয়েছে, বোনের
জন্য রতন আজকে বাড়ি থেকে ভাত আনতে বারণ করেছে। বেচারী ইশ্কুল থেকে এসে এতটা
ঝক্কি-ঝামেলা পার করে আবার
বাড়িতেও মা’কে নিয়ে পড়ে থাকবে, তাই রতন আজ আর ভাতের ঝামেলা করেনি। বীণা একেবারে বিকেলে চা দিয়ে যাবে।
তখন সঙ্গে মুড়ি-টুড়ি কিছু খেয়ে নিলেই হবে।
হঠাৎ
শিবু এসে বসল রতনের পাশে। দেখেই মুখ কালো ও রুক্ষ হয়ে উঠল বীণার। কেন যেন দাদার এই
বন্ধুতাকে দুচোক্ষে দেখতে পারে না বীণা। ফাঁকিবাজ, কাজে-কর্মে মন নেই। খালি বড়বড় কথা, আর অন্যের
ঘাড় ভেঙ্গে খাওয়া। দাদাকে নষ্ট করারা তালে আছে। এক নম্বরের বদমাইশ,ওর মতলব ভাল নয়। আজ ঘুচিয়ে দেবে ওর বাহাদুরি। কাছে আসুক, বলুক কিছু কথা, তারপর দেখে নেবে বীণা।
কিন্তু
আজ সেসবের দিকেই গেল না শিবু। কানে কানে কি সব বলল রতনকে,
তারপর দুজনেই এক ছুটে দোকানের বাইরে। রতন শুধু ইশারায় বীণাকে বলে
গেল ‘দোকানটা একটু দেখিস’...তারপর
দুজনেই মিলিয়ে গেল।
(৩)
এখন রাত প্রায় একটা। রতন আর বাড়ি ফেরেনি। রাত ন’টা নাগাদ কয়েকজন মিলে মাঠ পেরিয়ে রেললাইনের ধার থেকে দুটো দেহ ধরাধরি করে নিয়ে এসেছে।
রতনকে চেনা যাচ্ছিল না, সারা শরীর ক্ষতবিক্ষত।
রতনের শুধু মৃতদেহ আনা হয়েছিল। শিবুর আঘাত খুব গুরুতর কিছু নয়, হাসপাতালে নিয়ে গেছে, মনে হয় বাঁচানো যাবে। কি ঘটেছিল, কেন
এমন হল...কেউ জানে না। হাসপাতাল থেকে বেঁচে ফিরে এলেও শিবু যে বেশিদিন বাঁচবে না,
বীণা বাঁচতে দেবে না, সেকথা বীণা জানে।
কিন্তু তারও আগে তার জানা দরকার, কেন শিবু এ কাজ করল। কেউ
দেখেনি, কিন্তু বীণা দেখেছে, দাদার
হাতের মুঠোয় শিবুর ছেঁড়া জামার একটা টুকরো ধরা ছিল। শিবুকে আটকানোর চেষ্টা করেছিল
রতন, পারেনি। দোকানের জন্য এত ঈর্ষা! কি চেয়েছিল শিবু রতনের
কাছ থেকে? জানতেই হবে তাকে, তার
জন্য তাকে যত ঘুঘনি-পরোটা খাওয়ানো দরকার সে খাওয়াবে।
কঠিন
চোখে বাইরের অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে রইল বীণা, উত্তরটা
খুঁজছে...।
সুবীর কুমার রায়

অমল বাবু
অফিসে অমল বাবু নামে নতুন এক অফিসার জয়েন
করলেন। ইনি অতি কৃপণ, তবে চেহারা ও ব্যবহার একবারেই শিশুসুলভ। তিনি স্থানীয় এলাকার
দীর্ঘদিনের বাসা ছেড়ে অচেনা অজানা কোন্নগরে একটা বাড়ি কিনে বসলেন। অতদুরে হঠাৎ এক
অচেনা জায়গায় চলে যাবার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি শুধু বললেন, “আপনার কোন ধারণা
নেই, জায়গাটা খুব ভালো ও সস্তা। আমার বাড়ির কাছেই একটা দোকান আছে, রুটি কিনলে
তরকারী ফ্রী”। শুধু বিনা পয়সার তরকারীর লোভে যে কেউ বাড়ি কেনার জায়গা পছন্দ করে,
জানা ছিল না।
এই অমল বাবু কথায় কথায় বাজি ধরে বসতেন।
তবে খাওয়া ছাড়া অন্য কোন বিষয়ে তাঁকে বাজি ধরতে কখনও দেখি নি। একদিন হঠাৎ কে কত
তাড়াতাড়ি রাজভোগ খেতে পারে তাই নিয়ে গুলতানির মাঝে ঢুকে পড়ে অমল বাবু ঝাঁ করে বাজি
ধরে বসলেন যে, তিনি ত্রিশটা রাজভোগ রস না চিপে, পনের মিনিটে খেয়ে নেবেন। সকলেই
একটা করে ঘটনার কথা বলতে শুরু করায়, ত্রিশটা রাজভোগ খাওয়ার ঘটনা যে পৃথিবীতে আগে
অনেক ঘটেছে, এবং অনেক কম সময়ে খেয়ে সেইসব ব্যক্তিরা যে আজও অমর হয়ে আছেন— এটা তাঁর
কাছে জলের মতো পরিস্কার হয়ে গেল। ফলে বাধ্য হয়ে সময়টা সাত মিনিটে নামিয়ে আনতেই হল।
শেষে দুই পক্ষের মধ্যে একটা অলিখিত চুক্তি (MOU)
হ’ল, যে তিনি সাত মিনিটে ত্রিশটি রাজভোগ রস না চিপে
খেয়ে নিতে পারলে তাঁকে আর একদিন পেট ভরে মাংস ভাত খাওয়ানো হবে। না পারলে তিনি
রাজভোগের দাম ফেরৎ দিতে বাধ্য থাকবেন। মিষ্টির হাঁড়িতে পড়ে থাকা অবশিষ্ট রসটাও
খেয়ে নেবার ও সময়ের মধ্যে খেতে না পারলে মিষ্টির দাম ফেরৎ ছাড়াও সবাইকে মাংস ভাত
খাওয়ানোর প্রস্তাব পেশ হলেও, শেষে সেই প্রস্তাব বাতিল করা হয়।
পরের দিন অফিস ছুটির পরে বড় হাঁড়ি করে
ত্রিশটা রাজভোগ নিয়ে আসা হল। বিকেল পাঁচটা-সাড়ে পাঁচটায় ত্রিশটা রাজভোগ খেতে হবে
জেনেও তিনি দুপুরে অন্যান্য দিনের মতোই টিফিন করেছিলেন। তবে খাওয়া শুরু করার আগে
তিনি পেশাদার খেলোয়ারের মতো রাজভোগের সংখ্যা একবার গুণে দেখে নিলেন।
খাওয়া শুরু হল। অতি দ্রুত গতিতে এক একবারে
দু-তিনটে করে রাজভোগ তুলে মুখে পুরে তিনি খেতে, থুরি প্রায় গিলতে শুরু করলেন। এরমধ্যেও অপর পক্ষ আপত্তি
জানালো — হাঁড়ি থেকে রাজভোগ তোলার সময়
তিনি এত জোরে ধরছেন, যে অনেক রস হাঁড়িতে পড়ে যাচ্ছে। কাজেই অত জোরে মিষ্টি ধরে
তোলা চলবে না।
অমল বাবু যখন খাওয়া শেষ করলেন, তখনও সাত
মিনিট সময় অতিক্রান্ত হয় নি। কনুই পর্যন্ত হাত, জামার বুকের কাছটা, এমন কী
প্যান্টেরও কোথাও কোথাও মিষ্টির রস মেখে তিনি বাজিমাৎ করার ঘোষণা শুনবার জন্য অধীর
আগ্রহে অপেক্ষা করতে লাগলেন। অপরদিকে এপক্ষের দু-একজন ঘড়ির দিকে ও মাঝেমাঝে
মিষ্টির হাঁড়ির দিক লক্ষ্য রেখে অপেক্ষা করে অবশেষে ঘোষণা করলো— “সময় শেষ। অমল
বাবু নির্দিষ্ট সময়ে বাজিমাৎ করতে পারেন নি, কারণ মিষ্টির হাঁড়িতে এখনও মিষ্টি পড়ে
আছে”। দেখা গেল তাড়াহুড়ো করে এক একবারে দু-তিনটে করে রাজভোগ তুলে মুখে পুরতে গিয়ে,
অণু পরিমান একটা টুকরো হাঁড়িতে পড়ে আছে। অমল বাবু এটা দেখতে পান নি, তা নাহলে তাঁর
হাতে সেটা খেয়ে নেবার মতো অনেক সময় ছিল। এই নিয়ে তুমুল অশান্তি শুরু হলে, অমল বাবুর
প্রতি এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করে ম্যানেজার অমল বাবুর পক্ষে রায় দিয়ে তাঁকে জয়ী
ঘোষণা করলেন। ততক্ষণে তাঁর জামা প্যান্টের রস শুকিয়ে চিনি হয়ে গেছে। পরে একদিন
অবশ্য তাঁকে কথামতো মাংস ভাতও খাওয়ানো হয়।
পরবর্তীকালে অফিসের অন্য এক শাখায়
শুনেছিলাম যে, অমল বাবু অফিসের আর সকলের সঙ্গে একজনের বিয়ের নিমন্ত্রণ খেতে যাওয়ার
আগে ঐ শাখার এক চতুর্থ শ্রেণী কর্মীর পরামর্শে খিদে বাড়াবার জন্য জামা প্যান্ট
খুলে আন্ডারওয়ার পরে দীর্ঘক্ষণ অফিসের ভিতর পায়চারি করেছিলেন। অমল বাবু তখন ঐ
শাখার ম্যানেজার ছিলেন।
এই অমল বাবু একদিন অফিস থেকে বেশ দুরে এক
বড় বাজার এলাকায় গেলেন একটা বালতি কিনতে। বালতি কেটে তিনি একটি তোলা উনন তৈরী
করবেন। অফিসের নীচেই বেশ কিছু দোকান থাকা সত্ত্বেও অত দুরে যাওয়ার কারণ হিসাবে
জানা গেল, ওখানে অনেক দোকান থাকায় পছন্দমতো মজবুত বালতি অনেক সস্তায় পাওয়া যাবে।
যাহোক্, তিনি অনেক দোকান ঘুরে, অনেক দরদাম করে “লক্ষ্মী” মার্কা এক বালতি কিনে, কোথা
থেকে একবারে উননের উপযোগী বালতির নীচের দিকে বেশ খানিকটা কেটে ও ফুটো করে করে
প্রয়োজনীয় শিক লাগিয়ে অফিসে ফিরলেন। বাড়ি ফিরে শুধু মাটি লাগাতে হবে।
দিন দু’-এক পরে কী কারণে ঐ এলাকায় গিয়ে
তিনি হঠাৎ এক দোকানের সন্ধান পেয়ে, মনোকষ্টে একবারে ভেঙ্গে পড়লেন। কারণ ঐ দোকানে “লক্ষ্মী”
মার্কা বালতি দু’টাকা কম দামে বিক্রী হচ্ছে। এই ক্ষতি ও অসততা মেনে নিতে না পেরে,
তিনি তৎক্ষণাত পূর্বের দোকানে গিয়ে ক্ষোভ ও অভিযোগ জানিয়ে টাকা ফেরৎ চাইলেন।
দোকানদার জানালেন “কোন দোকান কী দামে বিক্রী করছে জানি না, তবে আমার দোকানে বালতি
এই দামেই বিক্রী হয়”। এই নিয়ে বিস্তর কথা কাটাকাটির পর, দোকানদার বিরক্ত হয়ে, বালতি
ফেরৎ দিয়ে টাকা ফেরৎ নিয়ে যেতে বললেন। বালতি ফেরৎ দেবার কোন সুযোগ না থাকায়, আর
কেউ হলে হয়তো হৃদরোগে আক্রান্ত হতেন, কিন্ত অমল বাবু ভেঙ্গে পড়ার লোক নন। ঠান্ডা
মাথায় অনেক চিন্তা করে, শেষে অপর দোকান থেকে দু’টাকা কম দামে লক্ষ্মী মার্কা আর
একটা বালতি কিনে, এই দোকানে এসে বালতি ফেরৎ দিয়ে লোকসানের হাত থেকে বাঁচলেন।
মৌ দাশগুপ্তা

ছিঁটেফোঁটা স্বাধীনতা
(১)
--কি ব্যাপার এত রাত হল ফিরতে?
কটা বাজে জানো? কোন চুলোর দোরে ছিলে?
-- রাগ কোরনা লক্ষ্মীটি..কাল বাদ
পরশু স্বাধীনতার দিন কিনা.. দোকানে তেরঙ্গার প্রচুর অর্ডার..সেই সেলাই করছিলাম..
(২)
দিলু .. আজ কাগজ কুডাতে যাবি না?
না..আজ সত্যমামার দোকানের সামনে ঐ সাদা
সবুজ কমলা কাগজের পতাকাগুলো বেচবো..দুডজন বিকতে পারলে মামা একটাকা করে দেবে
বোলেচে..বিকেলে দ্যাক না সেই পতাকাগুনোই ছিঁড়েখুঁড়ে গিয়ে রাস্তায় পড়ে থাকবে
নে..তখন কুড়িয়ে নিয়ে কেজি দরে বেচলে আবার পয়সা...
(৩)
ও কেদারকাকু আজ হাপপেলেট ঘুগনি আর
পাউরুটির সাতে একটা মামলেটও দিও গো...একদম গরমাগরম...
কি ব্যাপার রে তপাই?
লটারি জিতেছিস নাকি?
না গো..আজ ঐ কি য্যানো স্বাধীন দিন টিন কি
আছে না গো তোমাদের..হেব্বি ফুল বিকিয়েছি আজ..এক্কেবারে কিলোদরে...দোকানের স্বপনদাও
তাই আজ হেব্বি খুশ... নগদ বিশ টাকা দ্যাছে..আরে খালি ভাট বকায়..তাড়াতাড়ি মামলেটটা
দ্যাও দিহিন..
কি ব্যাপার দাদুভাইরা? এখনই চাঁদার বই নিয়ে
ঘুরছ? পুজোর তো ঢের দেরী..
কাল স্বাধীনতার জন্য ক্লাবের কাঙালীভোজন
দাদু..
স্বাধীনতার জন্য?
ঐ স্বাধীনতা দিবসের জন্য..দুটো তো একই..
তাই বুঝি?তা বলো দেখি স্বাধীনতার হীনতায় কে বাঁচিতে চায় কার লেখা?
বলেছিলাম চাঁদু এ মাল বড় কিচাইন করবে...
কবে কোন স্কুলের হেডমাস্টার ছিল তাই ধুয়ে এখনও বুড়ো জল খাচ্ছে.. এই যে দাদু ভালোয়
ভালোয় মাল্লু ছাড়ো নয়ত...
নয়তো?
নয়তো ঐ বাগানে টব ফুলগাছ বিক্কিরি করে
পয়সা তুলে নেব ...তারপর রাতবিরেতে কিচাইন হলে আমাদের দোষ দিবি না..বুঝলি বে...
বুঝলাম দাদুভাইরা ... এতদিন ধরে আমিই
স্বাধীনতার ভুল মানে শিখিয়ে এসেছি..
(৫)
আজ কি পুজো গো সারি দিদি?
পুজো? কই
জানি নাতো..
তাহলে এই যে আজ অনাথ আশ্রমের সবাইকে সকাল
সকাল উটে সেজেগুজে তৈরী থাকতে কইলে..মাইক বাজলো..নোকজন এলো.. ভালোমন্দ খেলাম..নতুন
পিরানও পেলাম একটা..তাও বলছ পুজো না?
--দূর বোকা মেয়ে আজ হল গিয়ে আমাদের
স্বাধীনতা..বুঝলি?
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)