গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

শুক্রবার, ২৭ মে, ২০১৬

জুবায়ের আহম্মদ




আত্মার টান

গোরস্তানের এই পাশটায় নাকি ভূতের আনাগোনা সবচে বেশি। আমি সেটা কখনোই পাত্তা দিইনি। গ্রাম থেকে প্রথম দেশের বাইরে পড়তে যাওয়া ছেলে আমি। তার উপর মেডিকেলের ছাত্র। মর্গে লাশের সাথে যে রাত কাটিয়েছে তাকে কি আর ভূতে ধরবে? যত্তসব কুসংস্কার! ওসব কথায় পাত্তা না দিয়ে গ্রামে এসে সহজে বাড়ি পৌছানোর জন্য নিলাম গোরস্তানের পথটাই।
ট্রেন এসেছে রাত তিন টায়। এখন চারটা বাজে। ফজরের এখনো ঘন্টাখানেক বাকি। মা পুকুরঘাটায় এসে যদি আমাকে দেখেন তবে তার অবস্থা কি হবে ভাবতেই আনমনে হাসলাম।দু কদম এগিয়েছি কি এগোইনি আচমকা একটা গর্তে পড়ে গেলাম আমি। পুরানো কবর বোধহয়। অনেক গভীর গর্ত। বিশাল লাগেজ নিয়ে উঠতে বেশ কষ্টই হচ্ছে। তখনই কে যেন হাত বাড়িয়ে বলল,“উঠি আয়ো বাজান। আর হাত ধরো।”
আমি উঠেই প্রাণখোলা হাসি দিলাম। জ্যাঠাব্বাকে কতদিন পর দেখলাম!বুকে জড়িয়ে ধরতেই হুঁ হুঁ করে কান্না উপচে এলো। খুব কাঁদলাম। পরে জিজ্ঞেস করলাম,“আপনি এখানে কেন? ঘরে আসেন।”
তিনি বলেন, “বাজান বেগেরে এডে আয়োন লাগবো। আই আগেদি করিই আইলাম।”
জ্যাঠার প্রায়ই পাগলামি উঠতো। তাই তাকে বিদায় বলে ঘরে এলাম। এসে দেখি সবাই কাঁদছে। মা আমাকে দেখেইবলে উঠলো, “তোর জ্যাঠার মরার খবর টা কে দিলো আর এতো তাড়াতাড়ি এলি কি করে?