এল ভাইরাস
এলাকায় উদ্ভট উদ্ভট ক্রিয়াকলাপ চলছে ।“এল ভাইরাসের আক্রমণ দেখা দেছে”
সদু পাগলা বলে বেড়াতে লাগল । সদু ৪ বার স্কুল ফাইনাল ফেল করেও নিজেকে পণ্ডিত মনে করে
।সদু বলল,"আগে অল্প বয়সী ছেলেমেয়েরা এল ভাইরাসে আক্রান্ত হতো ৩০,৩৫ বছরের আন্টিরা
এল ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে । "
সদুর কথা শুনে পানু পরামিক বলল,"নিপা ভাইরাস,জিকা ভাইরাসের কথা
শুনেছি । এল ভাইরাসে কথা তো জীবনে শুনিনি ।"
"তুমি তো বইয়ে
মুখ গুজে পড়ে থাক । বর্তমান কালের এল ভাইরাসের কথা শুনবে কোথা থেকে ! " সদু অস্বস্তি
প্রকাশ করে বলল ।
"এল ভাইরাসে ধরেছিল দুই ছাওয়ালে মা ৩০/৩১বছর বয়সী ছবিরণকে , এক রাতে সোমত্ত
বয়সী ছবিরণ ছাওয়াল দুটো ও সোয়ামীকে ফেলে রেখে লাপাত্তা ।
ছবিরণের সোয়ামী কালু ব্যাপারী
তো পাগল হবার দশা ,বুকে দুধ দেয়া ছাওয়ালটাকে রেখে দশ বছর ঘর করা ছবিরণ কোথায় গেল !
ছবিরণের স্তন দুটো দুধে টসটসে , সেই স্তনের দুধ না খায়িয়ে ছবিরণ কারো সাথে পালাত পারে
তা কালু বিশ্বাস করতেই পারছে না ।
কালু মা নিজের ছাওয়াল কালুকে
বলল," কয়েকদিন ধরে গোলাপ তরফদার ছাওয়াল ময়না তরফদার তুই বাড়ি না থাকলি তোর বৌয়ের
কাছে আসতে দেখিছিলাম ,ভাবী ভাবী বলে ঘরে ঢুকে গপ্পটপ্প করতি দেহিছি ।"
মায়ের কথা শুনে কালু মনে মনে
ভাবল , লিকলিকে চেহারার ময়নাকে তো আমিও আমাগেরে বাড়ির পাশে কয়েকদিন ঘোরাফিরা করতি দেহিছি
। তবে কী ! ছবিরণের মোবাইলটা না পেয়ে কালু নিশ্চিত হয় ছবিরণ কারো না কারো সাথে পালিয়ে গেছে ।কালু তার
বৌয়ের খোঁজ পায় না তিন মাসের মধ্যে ,এদিকে ময়না তরফদারকেও বাড়িতে পাওয়া যায় না । মাস
বছর খানেক পরে কালু খবর পায় ময়না নাকি ঢাকার বক্সি বাজারে রিক্সা চালায় ।তাদের গ্রামের
মুন্সির পোলা তালেব আলি নাকি দেখেছে ।
কালু মা ভাবে,নচ্ছার মেয়ে লোকটা
ময়নার সঙ্গেই ভাগিছে । কিন্তু তা সে নিজের ছাওয়ালের কাছে বলতে সাহস পায় না । কালুর
তক্কে থাকে তরফদার বাড়ির খোঁজ খবরের প্রতি । তরফদার বাড়ির বড় মহলে ঘুনিপাড়ার কানা ফতেউল্ল
বৌ কাজ করে । কালুর মা তাকে লাগায় ময়নার মার থিকে খোঁজ খবর এনে দেবার জন্য । পানপাতা
খাওয়ার অছিলায় কানা ফতেউল্লার বৌ ময়নার মা কাছে যায় । কোন কোন দিন সে কালুর মা কাছ
থিকে দু একটা সুপারীও নিয়ে ময়না মা দেয় । ময়নার মা তাতে বেজায় খুশি হয় । সে সুখ দুঃখের
গল্প বলে তার কাছে । ময়নার মা বলে , "আমার কপালে সুখ লেহা নেই লো । সুখ থাকলি
ময়নার বাবা অকালে মরবি বা ক্যানে ।এতগুলো ছাওয়ালপল নিয়ে আমারিবা দুয়োরে বেড়াতি হতি
হবি ক্যানে ।"
"কী কতা যে কও ময়নার মা ! তুমার বড় ছাওয়াল ময়না তো ডাংগর হয়ে উঠিছে,তারে
তো বাড়িতি দেহিনে কত কাল,তারে কি মামু বাড়ি পাঠাই দিছো ,বু ?
"তার প্রশ্নশুনে ময়নার মা দু চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে ।তার মুখ
দিয়ে কথা সরে না ।" ছাওয়ালের অনেক দিন দেহি না এতদিনি মর্দসর্দ হয়ে উঠিছে । মামুবাড়ি
থিকে বাড়ি কাজেকর্মে লাগিয়ে দিলিই পার,আয়টায় করা ধরলি জোয়ান মিয়্যার সঙ্গে সাদি দিলি
পারে তুমার ছাওয়াল ঘর ধরবিনি,যেকালের যে দাওয়াই তা দিলি পারে জুয়ান ছাওয়ালপল ঘর ধরে,তা
তুমি বোঝ না বু !"কানা ফতেউল্লার বৌয়ে কথা শুনে ময়নার মা হাউ হাউ কেঁদে উঠে এক
সময় হাটে হাঁডি ভেঙে দেয় ।
"ছিনাল মাগীটার পাল্লায় পড়ে আমার ময়ধা কী আর ময়না আছে !”
ময়নার মা কথা শুনে কানা ফতেউল্লায় বৌয়ের মনে আশার
আলো দেখা দেয় । সে ভাব,তাহলি পারে কালুর রসেবসে টসটসে বৌটাকে নিয়ে ময়নাকে কি মজা লুটতিছে
? সাতঘাটের পানি খাওয়া কানা ফতেউল্লায় শেষ পক্ষের বৌয়ের এসব বিষয়ে জ্ঞানগম্মি পাকা
। সে ভাবে , সত্যিই যদি ময়নার মায়ের কতা মত ছিনাল মাগীটা ছবিরণ হয় তবে ময়না মালটা ভাল
ভাগাইছে । উঠতি জুয়ান ছাওয়ালা পালি ছবিরণের মতো বয়সী ছিনাল মাগীরা পাগল হয়ে ওঠে ।
ওদিন সে ফিরে এসে কালুর মাকে বলে,ময়নার মায়ের কখায় মনে হল কালু বৌ ময়নার
লগেই আছে ।রাতে একটু ফিরনি বানায়ে রাখবা,সকালে ওটা নিয়ে ময়নার মার কাছে আবার যাব ।দেহি
ফিরনি থাওয়ায়ে তার কাছ থিকে কতা বের করতি পারি নাকি ।"সে ময়নার মাকে ফিরনি
রান্না করে দিতে বলে ।
পরদিন কানা ফতেউল্লায় বৌ ফিরনি নিয়ে ময়নার মার কাছে গিয়ে বলে ,"ফিরনির কথা বলিছিলে
বু ,তাই এটা নিয়ে এলাম ।" ফিরনি পেয়ে তো ময়নার মা বেজায় খুশি । একথা সেকথার পর
কানা ফতেউল্লার বৌ বলে," ফিরনি বানাতো কালুর বৌ , তা য্যনো এহন মুখি লাগে আছে
।"
এবার তার কথা শুনে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে বলে ময়নার মা," ওই ছিনালে
কতা আমারে কবা না ।ক্যানে ? "তুমরা জান না,কালু বৌ ছবিরণ মুইয়ের ছাওয়ালটারে তুক
করে নিয়ে ঢাকায় পলাইছে । "কী কও বু !"
"কী আর কব ! তুই ধুসসো মাগি,না হয় তোর গা গতরে জুয়ানকি রসে ভরা
,তাই বলে দুধ খাওয়ানে বাচ্চা ফেলে মুইর বাচ্ছা ছাওয়ালটাকে নিয়ে ভাঙলি ।মুইর ছাওয়ালেরও
বলিহারি দেই,তুই ফরসা চমড়া দেহে পিরিতি মজে গেলি !"
কানা ফতেউল্লার বৌ খবরটা কালুর মার কাছে পৌছে দিতে দেরি করে না । এমন
একটা খোঁজ ময়না তরফদারের খালাতো ভাই জলিলের কাছ থেকে আগেই কালু পেয়েছ ।জলিল তাকে কথা
দেছে যে সে ওদেরকে গ্রামে ফিরিয়ে আনবে ।সত্যি সত্যিই সে কথা রাখে,রমজানের ঈদের আগে
ময়না ও ছবিরণ গ্রামে ফিরে ময়নার বাড়ি ওঠে ।কালুরা ছাড়া গ্রামের অনেকেই ছবিরণকে দেখতে
ময়নার বাড়ি যায় , তাদের মধ্যে কানা ফতেউল্লার বৌও ছিল । সে ছবিরণকে দেখে ভাবে,ওর স্বাস্থ্য
চেহারার জেল্লা যেন আগের চেয়ে বেড়েছে ! কালুও থেমে থাকে না,সে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম্য
আদালয়ে ময়না ও ছবিরণে নামে কেস করে ।
যথারীতি কেস বিচারের জন্য উঠলে
কালু ও ময়না উভয়েই তাদের নিজ নিজ বৌ বলে দাবী । ময়না ছবিরনকে বিয়ে করার কাগজ দাখিল
করে । ছবিরণ যে বিয়ে করা বৌ তার প্রমাণ কালুকে দিতে হয় না,কারণ তার প্রমাণ তো সবাই
জানে । অনেক বাকবিতন্ডার পর বিচারকরা রায় দেয় ছবিরন তার ইচ্ছে মত দু’জনের মধ্যে একজনকে
সোয়ামী হিসেবে বেছে নিতে পারে ।
সবাই ভেবেছিল ছবিরন জোয়ান বয়সী ময়নাকেই সোয়ামী হিসাবে বেছে নেবে । ছবিরনের
স্বামী সন্তানের কথা ভেবে মাথার ঘোমটার আড়াল থেকে যেন একটা বক্তৃতা ঝাড়ে ," আমি
কি অজ্ঞানী মেয়ে,অমি একটা সৎ ভদ্র মেয়ে! আমি এক কতার লোক আমি কি
সোয়ামী ও ছাওয়াল ঘরে যাব না আফনারা ভাবতি পারলেন কেমনে ?
"সদু পাগলা বলে উঠে একেই
বলে এল ভাইরাস মানে লাভ ভাইরাস ! দেখে শুনে মনে হচ্ছে ছবিরন এখন এল ভাইরাস থেকে
মুক্ত!