গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

সোমবার, ১৮ জুলাই, ২০১৬

নিবেদিতা ঘোষ মার্জিত



বিষ-অভয়া

“এ্যাতো কেঁদে কিছু হ্যবে না ...বুলে দিছি। উ জল পাছায় মুছে মুন টো শক্ত কর্‌। শাওরি রা অমুন হাজার কথা বুল্বে।” ভেজা কাপর ছাড়তে ছাড়তে অভয়া নতুন বিয়ে হওয়া কাজলি কে বলে।“উরা বুলছে ছুতলকের মেয়ে... খালি হাতে আলছে... জামাই ঠও কে তো কিছু দিয়া লাগে... ” নাক টেনে টেনে বলে কাজলি। “ ঠিক ই তো বুলছে... তুর বাপ কি বাবু..  ছুটলোক ত।বুল্বে এক্কান দিং শুনবি উন্য কান দিং ফেল্যা দিবি।” অভয়া কাপড়ের জল চিপে উঠানের তারে মেলে দেয়।মেয়ের পিঠে হাত রাখে গলা নরম হয়। “ কত পয়সা  চাহিছে?তুর গায়ে হাত তুল্যাছে”। “ শুতে ল্যায়নি... তুমার জামাই ...বুল্যাছে টাকা লিয়ে না গ্যালে ... লিবে না” কাজলির চোখে মুখে অজস্র নদী। “ লিবে না মানে... ঝাঁটা খেক্যার ছেল্যা... এমুন সন্দর মেয়্যা আমার ... ” অভয়া  আগুন হয়ে ওঠে।“ বিশহাজার টাকা লিয়ে যেতে বুলাছে...”বুকের সব টুকু আগুন ঢেলে দেয় মার সামনে।অভয়া চুপ করে যায়। চোয়াল শক্ত হয়। মাটিতে থেবড়ে বসে। কিছু সময় কাজলির নাক টানার আওয়াজের সাথে বয়ে যায়।অভয়া হাঁক দেয় “ সাবিত্তিরি... ইখানে শুনো।”ছেলে কোলে বড়ছেলের বউ এসে দাঁড়ায়। “দশ হাজার টাকা কানু কে দিতে বল্ভ্যা তো।”

সাবিত্রি অবাক হয়ে তাকায় , “ ক্যানে মা? উ টাকা আপনার ব্যাটা ছেল্যার অপ্রাসনের লেগ্যা জমাছে...” । কাজলি দেখল মা কেমন হিস হিস করে বলছে, “উ ছেল্যা জ্যানো অপ্রাসন করলে বাঁচবে... টাকা টা লস্‌টো... তুমি বল্ভ্যা কানু কে...”।