হৃত
ছোটবেলা
থেকেই বুকুনের হারিয়ে যেতে ভাল লাগে। এটাই ওর সবচেয়ে প্রিয় খেলা। মা স্কুল থেকে
ফিরে দেখলেন বুকুন নেই। কোথায় গেল...কোথায় গেল...খোঁজো বুকুনকে। বুকুন তখন আলমারির
পাশে ঘরের কোণে চুপটি করে দাঁড়িয়ে। এদিক-সেদিক দেখার পর চিনিমাসি কোলে করে মায়ের
কাছে হাজির। এমন হামেশাই হয়।
আরেকদিন
মা নেই, স্কুলের মিটিং, আসতে
দেরি হবে বলে বাবা তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু বুকুন কই? কোথায় সে, খোঁজো তাকে! বুকুন তখন ছাদের রেলিং
টপকে জানালার কার্ণিশে। শেষে সেই চিনিমাসি তাকে ধরে নিয়ে এসে বাবার কাছে। বাবা
চিনিমাসির চোখে চেয়ে বললেন—কি করা যায় বলত!’ চিনিমাসি গম্ভীর স্বরে—শাসন’ বলেই নিচে। চিনিমাসির আসল নাম চূণিবালা। বুকুন ছোট থেকেই চিনিমাসি বলে।
চিনিমাসি না ছাই, একটুও চিনি নেই, খালি তেতো। ওয়াক্ থুঃ। মনে মনে বলল বুকুন। দেখ না কিরকম হারাই!
তারপর
সেই দিন। বুকুন তখন স্কুলের উঁচু ক্লাসে। একদিন ফিরে দেখে চিনিমাসি আর দুটো লোক
সোফায় বসে গল্প করছে। --মা কই, বাবা? --ওমা, এখন
ফেরে নাকি? তুমি এখানে বোস, তুমি
হারিয়ে যেতে ভালবাস বলে ওনারা তোমার কাছে গল্প শুনবেন।‘ পায়ে
পায়ে এগিয়ে এসে সোফায় বসে বুকুন। একটা লোক রুমাল দিয়ে মুখ মুছছিল। তারপর আর কিছু
মনে নেই। বুকুন এখন কোথায় তাও সে জানে না। সে পুরোপুরি হারিয়ে গেছে।
তাকে
কি কেউ খুঁজছে...মা, বাবা...!!