গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

সোমবার, ১৮ জুলাই, ২০১৬

দেবাশিস মুখোপাধ্যায়




রবিবার

প্রতিদিন পাগলটাকে পাড়ায় দেখা যায় । উলঙ্গ । কোনো হেলদোল নেই । সমাজের নগ্ন রূপ পাছে ধরা পড়ে তাই ধরে বেঁধে সবাই পোশাক পরিয়ে দেয় । সে আবার ছিঁড়ে ফেলে । পাড়ার ছেলে ছোকরা মুখ টিপে হাসে । মেয়েরা মুখ ফিরিয়ে পালায় । দোকানদার বিস্কুট ছুঁড়ে দেয় আর মিস্টির দোকান বাসি সিঙ্গাড়া । পাগল বেঁচে থাকে কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই । সেদিন রবিবার । সবাই অনেকক্ষণ বিছানায় । উঠতে উঠতে অনেক বেলা । একটা গোল শোনা গেল মোড়ে । বাজার মাথায় উঠল সবার । মাংসের গন্ধ নেই ব্যাগে । সবাই জড়ো একই চাতালে । সবারই দারুণ কৌতূহল । সবাই যেন পাগল হয়ে গেছে । ছুটির দিনে ছুটি উঠেছে মাথায় । কি কান্ড ! পাগল জামা কাপড় পড়ে শুয়ে আছে এক পাগলির পাশে । পাগলির সূতোটুকু নেই ! রবিবার হঠাৎই নীরব হয়ে গেছে সেই আকস্মিক আঘাতে ।

কান্না

রোজ রাতে বিপিনবাবু একটি কবিতা লেখেন । পরের দিন তার বউকে শোনান । বউ শোনে , হুঁ হুঁ করে । বিপিনবাবু উৎফুল্ল হন এবং পত্রিকা সম্পাদকের কাছে পাঠিয়ে দেন । একদিন অনেক রাত পর্যন্ত বিপিনবাবু একটি দীর্ঘ কবিতা লিখলেন । বউ চা দিয়েছেন । বিপিনবাবু পাঠ করছেন আর বউ কেঁদে ভাসাচ্ছে । বিপিনবাবু অবাক । তিনি তো কোনো বিষাদ কাব্য লেখেন নি । " কি হলো গিন্নি কাঁদছো কেন ?"
গিন্নি পা দুটা মেলে আরো কাঁদতে লাগলেন ।
বিপিনবাবু দেখলেন সেখানে সারিসারি লাল পিঁপড়ে ।