গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

শুক্রবার, ১০ জুন, ২০১৬

সতীশ বিশ্বাস



  আইসক্রীমওয়ালা
                                          
বাস থেকে নেমে পুলকেশ তার চার বছরের মেয়ে তিতলিকে নিয়ে হেঁটে ফিরছে। সময়টা দুপুর,তাই পথঘাট ফাঁকা। একটা আইসক্রীম-ওয়ালা আসছে উলটো দিক থেকে। আর একটা ভিখিরি বেরিয়ে আসছে ডানদিকের গলি থেকে।   তাকে দেখেই তিতলি বায়না ধরল—‘বাবা,আইস্ক্রীম খাব। পুলকেশ বলল, ‘দাও তো ভাই, একটা কাপ।আইসক্রীমওয়ালা বলল,‘১০ টাকা
১০টাকার নোটতো নেই। ১০০টাকার চেঞ্জ হবে?
না,বাবু।
তাহলে থাক।
বাবু, আমি আপনার বাড়ি চিনি। ৬/৫ জিরোজিরো। না?
হ্যাঁ,ডিরোজিও পথ।
হ্যাঁ,হ্যাঁ, আপনি কাপটা নিন,কাল আমি গিয়ে আপনার বাড়ি থেকে দাম নিয়ে আসব।সে কাপটা তিতলির হাতে দিল। ভিখিরিটা একটু দূরে দাঁড়িয়ে সব শুনছিল। পুলকেশ ও তিতলি খানিকটা গিয়ে বাঁক ঘুরতেই সে আইসক্রীমওয়ালাকে ১০টাকার একটা নোট দিয়ে বলে, ‘এই নাও তোমার দাম।
আরে! তুমি কেন দিচ্ছ?
ওর বয়সী আমার একটা নাতনি আছে গো। কতদিন যে দেখি না তার মুখখানা! জানো, একদিন এই মেয়েটাও আমাকে দাদু বলে ডেকেছিল।
আইসক্রীমওয়ালা বোঝার ভঙ্গীতে মাথা নেড়ে চলে যায়। পরদিন সকালে সে পুলকেশের বাড়িতে টাকাটা আনতে যায়। টাকাটা নিয়ে সে খুঁজে খুঁজে সেই ভিখিরিটাকে বের করে। তাকে ১০ টাকাটা ফেরৎ দিয়ে বলে,‘চালাকি করার জায়গা পাওনি,না?  কাল আমাকে একটা জাল নোট গছিয়ে দিয়েছ।বলেই ওকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে-- জোরসে তার ভ্যানগাড়ি চালিয়ে দেয়।