গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

শনিবার, ২৫ জুন, ২০১৬

সতীশ বিশ্বাস



কার্যকারণ
                 

এবারই এস-এস-সি পাশ করে স্কুলে ঢুকেছে সুচেতা। প্রথম দিন সে চুড়িদার পরে গট গট করে তার নতুন স্কুলে ঢোকে। সবাই তার পোশাকের দিকে আড় চোখে তাকালেও-- মুখে কিছু বলে না । পরের দিনও সে একই পোশাকে স্কুলে যায়। আজ কিন্তু দিদিমণিরা তাকে হাসতে হাসতে জানিয়ে দেয়-‘এখানে ভাই, চুড়িদার চলবে না। শাড়ি পরতে হবে। গ্রামের স্কুল তো। কিন্তু বাসে যাতায়াত করতে হয় বলে সুচেতা পরের দিনও চুড়িদার পরেই যায়। আপাতশান্ত ঘাঁটীবাবু আজ তাঁর আস্তিনের তলা থেকে ছোরা বের করলেন। সরাসরি সুচেতার দিকে তাকিয়ে বললেন, দেখুন নতুন দিদিমণি, এ দুদিন আমি আপনাকে কিচ্ছু বলি নি। কিন্তু কাল থেকে আপনাকে শাড়ি পরে আসতেই হবে। নইলে কিন্তু হেডস্যারও আপনাকে বাঁচাতে পারবে না।...আমি সেক্রেটারির কাছে কমপ্লেন করব।খামোখা ঘাঁটীবাবু এ রকম রেগে গেলেন কেন-সুচেতা তা ভেবে পেল না। কিন্তু চুরিদার পরে যেতেও তার আর সাহস হল না। যাইহোক,  সুচেতা পরদিন থেকে শাড়ি পরেই যেতে শুরু করল।

পরের সপ্তাহের শণিবার। শেষ ক্লাশ করে ফিরে এসে সুচেতা দেখল-স্টাফরুমে সব দিদিমণিরা একজন শাড়িউলির কাছ থেকে শাড়ি কিনছেন। সুন্দর সুন্দর শাড়ি। সেও বেছে বেছে পছন্দমতো এক খানা কিনল। শাড়িউলি চলে গেলে-- সুচেতা জিজ্ঞেস করল, ‘উনি কি মাঝেমাঝেই এখানে শাড়ি নিয়ে আসেন?’                                                                                                                       অঞ্জলি দিদিমণি বললেন, ‘, তুমি চেনো না, না? উনিতো আমাদের ঘাঁটীস্যারের ওয়াইফ।’ *