গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

বুধবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০১৯

সোনালি ভট্টাচার্য মুখার্জী

শুনে যা ও সখী


অমলতাস ।
ওই কাঁচা হলুদ থোকা থোকা ঝুলন্ত ফুলগুলোর নাম । বাহারের ফেসবুকের প্রোফাইল পিকচার। অমিতা মুগ্ধ হয়ে চেয়ে থাকে।

ফার্স্ট ইয়ারের প্রথম দিনে ,কলেজের ফার্স্ট বেঞ্চে পাশাপাশি বসার দৌলতে আলাপ হয়েছিল দু জনের ।
অমিতা নেহাত মধ্যবিত্ত ছাপোষা যৌথ পরিবারের রোগা কালো সেফটিপিন দিয়ে ওড়নাপিনকরা সাধারন মেয়ে ।
বাহারের বাবা মা দুজনেই বিদেশী ব্যাঙ্কের উপরতলার অফিসার ।
অমিতা প্রথমদিন ওর পাশে বসেই প্রেমে পড়ে গিয়েছিল ।
একটু হিংসেও খোঁচা দিচ্ছিল অমিতার বুকের মাঝখানটায় ।
যে পায়,সে কি সবই পায় একসাথে ? আমি রোগা,কালো,না হয় বাড়ি গাড়িওয়ালা বাবামাকেই পেতাম ?
কিন্তু রাজেন্দ্রাণীর মত গ্রীবাভঙ্গি নিয়ে বাহার ওর দিকে তাকিয়ে হেসে কথা বলতেই গলে জল হয়ে গিয়েছিল অমিতা।
সেই থেকে এরা জুটি ।
আগ্রহী ছেলেরা খোঁচা দিয়েছে অনেক সময় ।
-ওকি তোর পোষা ডগি নাকি রে ?
-ছাড় না  বলে হালকা হেসে এড়িয়ে গেছে বাহার ।


জীবনটা এই প্রথম বড় সুন্দর মনে হয় অমিতার । বাবার লাগাতার খ্যাচখ্যাচ, জবাব না-আসা সম্বন্ধের চিঠিরা, রড দেওয়া জানালায় পুরোনো শাড়ির পর্দা,সব ভুলে যায় অমিতা,যেই মনে পড়ে ক্লাসে গেলেই বাহারের সংগে দেখা হবে ।

বাহারকে নিতে গাড়ি এসেছিল সেদিন কলেজে ।
ও বলল, “ যাবি মিতা আমার সংগে ?”
বুকের মধ্যে ঢিপঢিপ করছিল অমিতার । সত্যি বাহার নিয়ে যাবে ওকে ? স্বপ্ন দেখছে না তো ?
দুবার ঢোঁক গিলে, “হ্যাঁ যাবোবলে ঘাড় কাত করেছিল ।
কেউ ছিলনা বাড়িতে দুপুরবেলা । মস্ত বাথরুমের বাথটবে প্রথমবার বাবল বাথে ডুব দিল অমিতা । তার শরীরের খাঁজগুলোতে আলতো ঘুরতে থাকল টাবের পাশের ম্যাটে বসা বাহারের সাবানমাখা আঙ্গুল ।
সেতারের মত রিন্ রিন করে বেজে উঠছিল অমিতা,গলে যাচ্ছিল ভাললাগায় ।
ভালবাসি বাহার,ভীষণ ভালবাসি তোকে” ।
আত্মসমর্পনকরা একটা পুতুল পেয়ে হেসে উঠেছিল সুন্দরী ।
বুকের চূড়ায়,পাশে,নাভি বেয়ে আরও নীচে স্পর্শেরা ছুঁয়ে যেতেই শিউরে শিউরে উঠছিল অমিতার অনাদরে বেড়ে ওঠা কুমারী শরীর । বাহারের আঙ্গুল ততক্ষণে পৌঁছে গেছে অমিতার স্নায়ুকোষের গর্ভগৃহে ।
বিদ্যুৎস্পৃষ্টের মত টানটান হয়ে গিয়েই তীব্র শীৎকারে চরম শিখর ছুঁল অমিতা জীবনে প্রথমবার। চোখ মেলতেই বাহারের সংগে চোখাচোখি ।
কিরে আবার অন্যকারো আদর খেতে পালিয়ে যাবি নাতো” ?


শক্ত করে বাহারকে জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে ওঠে অমিতা, “ আমি কোনদিন আর কাউকে আমার গায়ে হাত রাখতে দেব না বাহার । কিন্তু তুই প্লিজ আমায় ছেড়ে চলে যাসনা, প্লিজ”
পাশে রাখা নরম তোয়ালে দিয়ে যত্নে অমিতাকে জড়িয়ে নেয় বাহার ।
চল বেডরুমে যাই । মাম্মি কাল একটা নতুন বডিলোশন কিনে দিয়েছে । তোকেই মাখাই আগে ।তারপর না হয় তুইও--- ”