গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

রবিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৮

অলভ্য ঘোষ

ভগবান কোথায়

ভগবান কোথায়? মন্দিরে,মসজিদে,গির্জায় মানুষ ভগবান খুঁজতে যায়তন্ন তন্ন করে খোঁজে গয়া,কাশী,মক্কা,মদিনা,জেরুজালেম তীর্থে তীর্থে এবং হতাশ হয়ে ফিরে আসে
অথচ আমাদের শরীরের চাইতে বড় কোন তীর্থক্ষেত্র- কুরুক্ষেত্র বড় কোন মথুরা- বৃন্দাবন নেই আমারা আত্মা প্রত্যেকে শরীরী সেই তীর্থে ঘুরতে এসেছি
একটা প্রচলিত কাহিনী আছে এক ব্যবসায়ী অনেক গুলো নগদ টাকা নিয়ে ট্রেনে তিন দিনের সফর করছেনট্রেনে উঠেই আসন গ্রহণ করেই তিনি তার নগদ টাকা গুনতে শুরু করেন সেই কামরাতে একটা চোরও উঠেছিল সেও ভদ্র লোকের দিকে ড্যাব ড্যাব করে দেখতে থাকে

ভদ্র লোকের অতগুলো নগদ টাকা নিয়ে চিন্তার শেষ ছিলনা আর চোরের চিন্তার শেষ ছিল না তা কিভাবে হরপ করাযায় তা নিয়েকেউ বলতে পারেন অতোগুলো ক্যাশ টাকা হাতে নিয়ে ঘোরার কি দরকার বাপু এই ডিজিটাল ইন্ডিয়াতে এটি-এম কার্ডে কোথায় টাকা মেলে না!
গল্পের খাতিরেই না হয় মেনে নিন ডিজিটাল ইন্ডিয়ার শর্ত না মেনে ব্যবসায়ী লোকটা সাথে করে টাকা নিয়ে ঘুরছে
যাই হোক লোকটা বোধয় কোনও পথ খুঁজে পেলেনটাকা নিয়ে তার আর দুশ্চিন্তা রইলো না রাতে তিনি গভীর নিদ্রায় গেলেনএদিকে চোরের চোখে ঘুম নেই খুব সন্তর্পণে হাতের কৌশলে চোর ঘুমন্ত ব্যবসায়ীর প্যান্টের পকেটে হাত গলাল একটা একটা করেপকেট ফাঁকাব্যবসায়ী পাশ-ফিরলে চোর বুক পকেট থেকে হাত গুটিয়ে নেয় আবার তিনি স্থির হয়ে নাক ডাকা শুরু করলে চোরের কৌশলী হাত ঘুরতে থাকে ব্যবসায়ীর শরীরে শরীরের কু স্থান তন্ন তন্ন করে খুঁজেও চোর টাকার সন্ধান পায় নারাত গিয়ে দিন হয়ব্যবসায়ী ঘুম থেকে উঠে আবার টাকা গুনে দেখতে থাকে গুনতি ঠিক আছে নাকি
চোর আড় চোখে দেখতে থাকেচোর ঠিক করে দ্বিতীয় দিনের রাতে সে জুতোর কিংবা মোজার ভেতরটা খুঁজে দেখবেকিন্তু কোথায় কিদ্বিতীয় রাতে ব্যবসায়ীর সাথের ব্যাগটাও তন্ন করে খুঁজে কিছুই মিলল না আবার যথারীতি সকালে ব্যবসায়ী তার টাকা গুলি সর্ব সমক্ষে গোনে এবং চোর সে দিকে ড্যাট ড্যাব করে চেয়ে থাকে তার আফসোসের শেষ থাকে নানিজেকে নিজেই সে গালি দিতে থাকে সে কত বোকা লোকটা নির্ঘাত তার হাওয়া বালিশের তলায় টাকাটা রাতে লুকিয়ে রেখে ঘুমায়তৃতীয় রাতে চোর টা হাওয়া বালিশের তলায় হাত গলায় কিন্তু কোথায় কি; কিছুইতো নেই এখানে
তবে কি হাওয়া বালিশের ভিতরে?আস্তে আস্তে বালিশের হাওয়া ছেঁড়ে দেয়টাকা তো দূর একটা পিঁপড়ে থাকার সম্ভাবনা তার ভেতর মেলে নাপরের দিন সকালে ব্যবসায়ী লোকটার গ্রন্তব্যের স্টেশন এসে যায় সে ট্রেন থেকে জিনিসপত্র গুছিয়ে নামতে উদ্যত;এমন সময় চোর হাত জড়ো করে বলে-
- অপরাধ নেবেন না আপনাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করতে পারি?
ব্যবসায়ী ভদ্রলোক হাসেন
-টাকা গুলোর কথা জানতে চান তাই তো?
চোর বিব্রত বোধ করে তবে কি ভদ্রলোক মটকা মেরে শুয়ে ছিল সে যে চোর সে সব জানে
ব্যবসায়ী ভদ্রলোক বলেন;
- টাকা গুলো কাছে রেখে দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে তো লাভ নেই তাই না তাই আমার টাকার ভার আমি আপনাকে দিয়ে দিয়েছিলাম
চোর বলল;
- কই কখন
ভদ্রলোক বলল;
-যখন আপনি পেচ্ছাপ করতে গেছেন ঠিক তখন
ভদ্র লোক ব্যাগ কাঁধে উঠে দাঁড়ায় এবং চোরের বালিশের তলা দিয়ে সে তার নোটের বান্ডিল টা নিয়ে গন্তব্য স্টেশনে নেমে যায়