সানু চৌধুরীর প্রটোকল সমস্যা
সানু
চৌধুরী ওরফে সঞ্চয়ন চৌধুরী একটা সমস্যার মাঝে এখন কালাতিপাত করছেন । সমস্যাটা হলো প্রটোকল সংক্রান্ত । ঘরে বাইরে তার এখন একটাই ভাবনার বিষয় তা
হচ্ছে প্রটোকল নিয়ে ।চাকুরী ক্ষেত্রে তিনি নাকি প্রটোকল ভেঙ্গেছেন ! এ অপরাধে তাকে প্রথমে সো কজ নোটিশের উত্তর দিয়ে শ্বশুরালয়ে হাজির হয়ে সেখানেও প্রটোকল এর মুখোমুখি ।
স্কুল মাস্টার জামাই এর উপর শ্বশুর সাহেব মোটেই খুশি নন । সানু চৌধুরীর
শ্বশুরবাড়িতে যাবার ইচ্ছে না থাকলেও সহেলী বেগমের টানে সো কজের জবাব দিয়ে সোজা
কদমতলিতে হাজির হয়েছেন ।তাকে দেখে সহেলী বেগম দৌড়ে আসবে এমনটাই আশা করেছিলেন
চৌধুরী সাহেব। তেমন কিছু না ঘটায় তিনি একটু ভাবনায় পড়লেন।সহেলীর সাথে তার বিয়ে
হয়েছে সাত বছর হতে চললো ।ছেলেপুলে না হওয়ায় সহেলীর মনে শান্তি নেই।সহেলী
বাপের বাড়ি এলেই শুধু সানু চৌধুরী শ্বশুরবাড়ি আসেন।সোহেলীর ছোট আর তিনটা বোনের বিয়ে হয়েছে তাদের বিয়ের পর পরই । এই তিন বোন মধ্যে সোহেলী সবচেয়ে সুন্দরী। নীনা, মীনা বিয়ের পর থেকেই শ্বশুর বাড়িতে প্রটোকল মানা হচ্ছে বলে চৌধুরী সাহেবের ধারণা
।তিনি তার প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসাবে প্রটোকল ভাঙ্গার অপরাধে অভিযুক্ত হবার
উপক্রম । নীনা ,মীনা শিলার বিয়ের পর থেকে তার শ্বশুর শাশুড়িকে প্রটোকল ভাঙ্গার অভিযোগে
অভিযুক্ত করা যেতে পারে তিনি সো কজের জবাব দিয়ে ভাবলেন। শ্বশুর সাহেব নতুন তিন
জামাইয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ । নতুন তিন জামাই সরকারি কর্মকর্তা । সানু চৌধুরীর
চেয়ে তাদের কদর শ্বশুর বাড়িতে বেশি হওয়াই স্বাভাবিক,এতদিন এটাই ছিল
চৌধুরী সাহেবের ধারণা । বড় জামাই হিসাবে তাকে অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে তা তিনি এতদিন ভেবে
দেখেননি । তিনি তার প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে
প্রটোকল ভেঙ্গে চিফ গেস্ট করেছেন । এই অভিযোগের ভার এখন তাকে বইয়ে বেড়াতে হচ্ছে ।
সানু চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে অজ গ্রামের শিক্ষা বঞ্চিত মেয়েদের শিক্ষাদানে উদ্দেশে যখন গার্লস স্কুলটি হাতে গোণা কয়েক জন বিদ্যানুরাগীকে সাথে
নিয়ে খোলেন তখন তার সাথে পার্টির নেতা আর আমলাদের কেউই ছিলেন না । এখন
প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা পাবার পর প্রটোকলের খেলা শুরু । ' আমি জিততে
পারিনি তাতে কী হয়েছে ! আমার পার্টিতো পাওয়ারে । অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হবার আমিই দাবিদার । আমাকে
বাদ দিয়ে কে প্রধান অতিথি হয় তা আমি দেখে নেব । ' ইচ্ছে থাকলেও পাওয়ার পার্টি নেতাকে উপেক্ষা করে সানু চৌধুরীর পক্ষে সদরের
সরকারি প্রধান কর্মকর্তা প্রধান অতিথি করা সম্বব হলো না । এর ফলে সোকজ নোটিশ , প্রটোকল
ভেঙ্গে কেন পরাজিত নেতাকে প্রধান অতিথি করেছেন ,তার জবাব দিন । শুধুমাত্র সোকজ
নোটিশ ধরিয়েই দিয়েই প্রধান কর্মকর্তা মহোদয় খান্ত হলেন । চৌধুরী সাহেবকে কড়া ভাষায়
গালমন্দ করতে তিনি কসুর করলেন না । সানু চৌধুরী ভাবলেন , এও মন্দের
ভাল । পাওয়ার পার্টি পারাজিত নেতাকে সম্মান দেখালে প্রহারেণ ধনঞ্জয় হবার সমুহ
আংশকা থাকতো । এর পরেই চৌধুরী সাহেবের বোধদয় হলো শ্বশুর
আব্বা সাহেব আর শাশুড়ি আম্মা বড় জামাইকে উপেক্ষা করে জাদরেল
তিন জামাইকে উচ্চাসনে বসিয়ে প্রটোকল ভঙ্গ করে চলেছেন । এর একটা বিহিত হওয়া দরকার ।