গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

রবিবার, ১২ আগস্ট, ২০১৮

পারমিতা কর বিশ্বাস

বাঁশী বাজে অভিমানে, প্রাণে


এক শহরে এক ছোট্টো ছেলে ছিলো, নাম অর্ক। সুবিধে মত যাকেই একটু বাগে পেতো, তাকে ধরে বলতো - "আমায় একটা গল্প বলো না।" মা তাকে গল্প বলে ঘুম পাড়াতো। গল্প বলতে বলতে মা যখন ঘুমিয়ে পড়তো, ছেলেটি মাকে ধাক্কা দিয়ে ঘুম ভাঙিয়ে জিজ্ঞেস করতো -" তারপর?" বড় হয়ে একদিন নিজেই সে লিখতে শুরু করলো - কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ ও তার কলমের প্রতিটি আঁচড় খুঁজে ফিরল জীবনের নির্যাস। তার নচিকেতার মত জিজ্ঞাসু মন দর্শনের দরজায় দরজায় কড়া নাড়তে নাড়তে জীবনের গান শুনতে শুনতে একদিন পৌঁছে গেলো আপাত a অনাবিষ্কৃত সেই আকাশের কাছে। সে জানে এই আলো আঁধারে ঢাকা আকাশের মাঝেই লেখা আছে তার সব গল্পের শেষ কথা, সব প্রশ্নের উত্তর। তাই সে ঠিক করলো সে এই আকাশের সামনেই দাঁড়িয়ে রইবে - চিরকাল। আর এক শহরে এক ছোট্টো মেয়ে ছিলো। বড় ভালোবাসার কাঙাল ছিল সেই মেয়ে। তার সাথে কেউ একটু ভালোবেসে কথা কইলে সে তার বাগানের সেরা ফুল সেরা ফল ছুটে গিয়ে তাকে দিয়ে আসতো। তার মনে হত - যদি আরো কিছু দিতে পারতো সে। মেয়েটির নাম ঊষা। ঊষা ও একদিন বড় হলো। অর্ক তার অনির্বাণ জ্ঞানের আলোয় সত্যকে খুঁজতে খুঁজতে ও সব কিছু হারাতে হারাতে নিরুৎসাহী জ্ঞানভিক্ষুর মত সেই আকাশের নীচে এসে দাঁড়ালো। আর ঊষা! সোনার হরিণ, অরূপ রতন ধন ভালোবাসার খোঁজে পথ হারাতে হারাতে এক আকাশ সজল মেঘ হৃদয়ে নিয়ে ঐ আকাশের নীচে এসে দাঁড়ালো। এই প্রথম ঊষার সাথে অর্কর দেখা হলো। এই প্রথম মুগ্ধতার স্বর্ণাক্ষরে লেখা হয়ে গেলো কিছু। তারপর গল্প ও ভালোবাসার মোহনার খোঁজে তারা একসাথে কোথায় যে হারিয়ে গেলো কেউ জানে না।