গোটা একটা রাত
চুরি হয়ে গেল
রাত সামান্য গভীর হয়েছে । সুযোগ বুঝে মগন চোর
চুরির মতলবে শহরে এসে ঢুকে বেজায় চমকে গেল । সর্বনাশ !
কে বা কারা যেন নিঃশব্দে এসে গোটা একটা রাত চুরি করে নিয়ে গিয়েছে শহর থেকে ! সর্বত্র দিনের আলো ছড়িয়ে আছে ! রাতের
অন্ধকার না থাকলে চুরি করা যায় নাকি ?
ওদিকে বিশু ডাকাতও ডাকাতির মতলবে শহরে এসে
ঢুকেছে এই একই সময়ে । ওর দশাও মগন চোরের মতো হলো । আরিব্বাস, কে বা কারা যেন শহর থেকে আস্ত
রাতটাকেই চুরি করে পালিয়েছে ! দেখে বিশু
ডাকাত মাথা চুলকোতে চুলকোতে
ভাবছে এই দিনের আলোয় ডাকাতি করবে কীকরে ।
সহসা বিশু ডাকাতের চোখে পড়ে মগন চোর গুটিগুটি
পায়ে ফিরে যাচ্ছে নিজের ডেরায় । মগনকে গুটিগুটি পায়ে হাঁটতে দেখে কিছু একটা সন্দেহ
হয় ওর । বিশু ডাকাত আর সময় নষ্ট না করে ছুটলো মগন চোরের পিছনে । পিছন থেকে পায়ের
শব্দ ভেসে আসতে শুনে মগন চোর ঘুরে তাকিয়ে দেখে বিশু ডাকাত । দেখেই ওর আত্মারাম
খাঁচাছাড়া হবার জোগাড় হলো । বিশু ডাকাতকে হাড়ে হাড়ে চেনে বলে আর এক মুহূর্ত সময়
নষ্ট না করে নিজের প্রাণ বাঁচাতে ছুট লাগালো সম্মুখের দিকে ।
মগন চোর দিকবিদিক ভুলে সমানে ছুটছে সামনের
দিকে । পিছনে বিশু ডাকাত । ছুটতে ছুটতে দু’জনে চলে এলো শহরের জাঁদরেল
দারোগা বীরপ্রতাপ সিংয়ের বাড়ির সামনে । চোর এবং ডাকাত দুজনেই বোমকে গেল ওখানে এসে
। দিনটা যেন বড় বেশী ঝলমল করছে এখানে । কেন !
তখনই সহসা লোকাল থানার একদল পুলিশ এসে পড়ে
ওদের সামনে । কাজের সুবাদে এদের সঙ্গে পুলিশদের অনেক কালের জানাশোনা থাকায় একটা
পুলিশ ওদের ডেকে বলে – এ্যাই,
তোরা
যাচ্ছিস কোথায় ? জানিস না থানায় আজ তালা পড়েছে ?
কেন
হুজুর ? দু’জনেই একসঙ্গে শুধোয় ।
আজ
যে দারোগা সাহেবের মেয়ের বিয়ে । দেখছিস না আস্ত একটা রাত উধাও করে দেওয়া হয়েছে এই
শহর থেকে ? আজ তোদের রাতের কারবার যে লাটে উঠলো রে জগাই মাধাই ।
জগাই মাধাই নয় । মগন -
বিশু । বিশু ডাকাত রাগ ফলাতে কশুর করে না ।