গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

রবিবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৫

সংঘমিত্রা রায়

অনুগল্প

মাতৃ হৃদয়

খুব গরম । ভাদ্র এসে বুঝিয়ে দিচ্ছে তার নাম । ঘুম ভাঙতেই দেখলাম ভোর পাঁচটা বাজে । যথারীতি তৈরি হলাম আর বেড়িয়ে পড়লাম প্রাতভ্রমনের উদ্দেশে্য । রাস্তায় বেড়িয়ে নদীর ধার দিয়ে হাঁটছি আর হেডফোনে শুনছি একটা প্রিয় কবিতা । মন বিরাজ করছে কবিতার জগতে । হঠাৎ সামনে দেখি বেশ কিছু লোকজনের জটলা ! সবাই নিচু হয়ে কি যেন এটা দেখছে ! একবার ভাবলাম এড়িয়ে যাই । কি আছে ওখাানে কে জানে । কি দরকার অযথা ঝামেলায় জড়ানো । কিন্তু কৌতুহলী মন মানলো না । কাছে গিয়ে দেখতে গেলাম । কয়েকজন মানুষ সরে গিয়ে দেখবার সুযোগ করে দিলো ।


যা দেখলাম তাতে আমার সারা শরীর মন জুড়ে বেদনার ছায়া নেমে এল । কাগজে পড়েছি ও শুনেছি অনাকাঙ্খিত সন্তানকে ফেললে দেবার ঘটনা । আর মাঝে মাঝে আশ্চর্য্য হয়ে ভেবেছি কেমন করেে মায়েেরা আত্মজকে ফেলে দেয় ! কিন্তু সেটি ছিল ভাবনা মাত্র । চোখের সামনে নিষ্ঠুর বাস্তব দৃশ্য দেখে শিউরে উঠলো সারা শরীর । সাদা কাপড়ে জড়ানো ছোট্ট শিশু । সকালের একফালি রোদ এসে পরেছে ওর কচি মুখে । মুষ্টিবদ্ধ হাতদুটি তুলে মনে হয় যেন মায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে । অথচ মুখে লেগে রয়েছে অনাবিল হাসি । মনে হচ্ছিল দুহাতে বুকে চেপে ধরে মাতৃস্নেহে ভরিয়ে দিই ওর সারা শরীর । কিন্তু কারা যেন ইতিমধ্যে পুলিশকে খবর দিয়েছে । পুলিশ এসেই ঘিরে ফেললো জায়গাটা । আমাকে বললো - "দিদি সরে দাঁড়ান" আরারান্ত মন, ব্যাথাতুর মাতৃহৃদয় নিয়ে ফিরে চললাম বাড়ির পথে ।