প্রিয় বন্ধুকে
খোলা চিঠি
প্রিয় সই ......,
কেমন আছিস ? আমি এসেছি ওহায়ো
বেড়াতে আমার ভালো পিসীমার কাছে । হঠাৎ করেই আসা এখানে। গতানুগতিক জীবন থেকে বেরিয়ে বেশ কাটছে রে দিনগুলো।
এসে দেখি...পিসীমা আমার জন্য
ছেলে দেখতে শুরু করেছেন । পিসীমার বান্ধবীর বাড়ির পার্টিতে একটা ইটালিয়ান ছেলেকে
দেখেছি, জানিস । কি হ্যান্ডসাম দেখতে, বিশ্বাস করবি না । যেন আমার স্বপ্নে দেখা রাজপুত্তুর ।
ছেলেটির চেহারা আর গায়ের রঙ যে নিঁখুত তা নয় ।
তবে
ছেলেটার মুখে বেশ একটা সারল্য আছে , যা ভারি আশ্চর্য রকম ওকে মানিয়ে
গেছে । তাই
বলে ভয়
পাস না, ওর পেছনে আমি ছুটব
না । প্রথম দেখার পরই ওর গুনগুলো আমার ভালো লাগতে শুরু করেছে ।
তবে সেই আগেরটিকে, যার কথা তোকে
বলেছিলাম, তারসঙ্গেই আমার ভালোবাসা Love বুঝলি ? আমার পছন্দ, অপছন্দ তুই তো জানিস । পিসীমাকে এখনই কিছু
বলা প্রয়োজন বোধ করছি না। ওনার মনে দুঃখ দেওয়া আমি উচিত বলে মনে করি না ।
পিসিমা আমার খুব প্রিয় মানুষ । তবুও কেন জানি না বলতে পারছি না কথাটা ।
আচ্ছা সই, তোদের নিউ ইয়র্কে
বাঁশী পাওয়া যায় না ? আমাকে একটা পাঠিয়ে দিস তো ? কেন জিগ্যেস করিস না রে ! হাসছিস তো সব শুনে
? ভাবছিস 'কেবলি' মেয়ে আর কাকে বলে, তাই না ? সত্যি বলব । ভালবাসার মানুষটিকে সেই বাঁশী
দেবো । যদি বোঝে ভাল, নাহলে অন্য রাস্তা দেখতে হবে।
কেমন ? তোর কাছে বেশ একটা হাসির
খোরাক হ’ল । তাই না ?
তোদের মেয়েকে হামু দিস আর তোরা
দুজনে আমার প্রীতি -শুভেচ্ছা ও ভালবাসা নিস ।
ইতি তোর সই
দ্বন্দই কি জীবনের ছন্দ ?
মিলটি রাতের খাবার খেয়ে নিজেদের ঘরে এলো। দেখলো তুষার শুয়ে পড়েছে। এসে বিছানায়
বসে তুষারের মাথার চুলগুলো একটু ঘেঁটে দিয়ে মিহি গলায় বললঃ- কাল দিদির মেয়ের জন্মদিন, নেমন্তন্নটার কথা মনে আছে তো, গো? মিথ্যে করে তোমাকে কিন্তু বলতে হবে যে,
তুমি কম্পানীর ডাইরেক্টর। অবশ্য যদি কেউ
জিজ্ঞেস করে। নাহলে বলতে হবে না। কি গো, আমার কথাটা মনে থাকবে তো। হ্যাঁ কি না একটা
কিছু বলবে তো!
-সত্যের অপলাপ করলে যত না
ফাঁকি দেওয়া হয় অন্যকে- তার চেয়ে অনেক বেশি ফাঁকি দেওয়া হয় নিজেকে। মিথ্যার ফাঁকা আওয়াজে আমি ফাঁকি দিতে চাই না মিলটি।
মিলটি রেগে বলেই ফেলল “বিষ নেই কুলপানা চক্র।”
-বিষ নেই বলেই তো কুলপানা চক্র
ধরতে ভরসা পেয়েছি। সত্যকে আড়ালে লুকিয়ে রাখলে ডিনামাইট যেমন পাথরকে ভেঙ্গে চৌ্চির
করে আত্মপ্রকাশ করে। তেমনি আত্মপ্রকাশ করে সত্যও। সবরকম আড়ালকে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো
করে দেয়। তখন কী জবাবের মুখোমুখি হব, বলতে পারো ? -আর সত্যপীর যুধিষ্ঠির সাজতে হবে না । পারবে্
না তুমি এটুকু কথা রাখতে, আমার? ধরা গলায় মিলটি তুষারকে বলল। -আমায় ক্ষমা করো মিলটি। আমি সামান্য মানুষ। আর
এই পরিচয়েই আমি থাকতে বেশি ভালবাসি।
মিলটি তখন অগ্নি স্ফুলিঙ্গের টুকরো টুকরো অগ্নিকণা ছিটিয়ে বলল ‘তাহলে কাল নেমন্তন্ন যাওয়া হবে না, তাই তো ? -আমি নাচার মিলটি। তোমাকে তো যেতে বারণ করছি না।
মিলটি তখন অগ্নি স্ফুলিঙ্গের টুকরো টুকরো অগ্নিকণা ছিটিয়ে বলল ‘তাহলে কাল নেমন্তন্ন যাওয়া হবে না, তাই তো ? -আমি নাচার মিলটি। তোমাকে তো যেতে বারণ করছি না।