যদি বন্ধু হও
জ্ঞান
ফিরতে নিখিলেশ
বুঝলো প্রচন্ড
যন্ত্রণা সারা
শরীরেই। আধা
তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায়
বোঝার চেষ্টা
করলো ঠিক
কোথায় রয়েছে; আর
তার সমস্ত
সত্ত্বা দিয়ে
খোঁজার চেষ্টা
করলো শ্রীময়ীকে।
তাকে নড়াচড়া
করতে দেখে
সম্পূর্ণ অপরিচিত
কেউ জিজ্ঞেস
করলো "কিছু
বলবেন? কেমন লাগছে
এখন?" 'শ্রী কই' জিজ্ঞেস
করলো বটে
কিন্তু গলা
দিয়ে আওয়াজ
বেরলনা। "এখন
ঘুমোন; সুস্থ লাগবে"
বলে সরেও
গেল; ঘুম কি
আর বললেই আসে? তবে
চোখ খুলেও
রাখতে পারছেনা
এটাও ঠিক।
ভাবতে লাগলো
কিযেন হয়েছিল
তার; একটু একটু
করে মনে
পড়ল কাল
রাত্রের রাগ, আজ
সকালে শ্রীর
চলে যাওয়া
আর তার জেরেই
অন্যমনস্ক হয়ে
আজ সকালে অ্যাক্সিডেন্ট।
নাঃ, শ্রী আজ
ওই ভাবে চলে
না গেলে কি
নিখিলেশের এই
দশা হতো?
নিখিলেশ
--- ঠাকুমা আদ্যপান্ত
রাবীন্দ্রিক বলে
এমন আধুনিক
নাতিরও এমন
নাম। মা
বাবা নাকি
আপত্তি ও
করেছিলেন, ঠাকুমার ব্যক্তিত্বের
সামনে সেসব
ধোপে টেকেনি।
নিখিলেশ তার
বাবা মহেন্দ্রর
মতই মুখচোরা, অনিন্দ্য
সুন্দর ছেলে; একটু
বেশিই বোধহয়
স্বাস্থ্য, শরীর, সচেতন। জিম
ইন্স্ট্র্যাক্টর সুবীরদা
হাসেন
"ওরে
ওই সিনেমার হিরো
গুলো অমন
বডি বানানোর
জন্য টাকা
পায় আর
তুই ব্যাটা
এই বডি বানাতে
আমায় পে
করিস; কি লাভ
হয় রে?"
"লাভ
লোকসান জানিনা, ভালো
লাগে, অভ্যেস হয়ে
গেছে, তাই" হাসে
নিখিলেশ
"শুধুকি
তোরই ভালো
লাগে নাকি
অন্য কারুরও?"
"কিযে
বলোনা" লজ্জা
পায় মুখচোরা।
"হ্যাঁ, কিযে
বলোনা সুবীরদা"ফোড়ন
কাটে সুহৃদ।
"হ্যাঁ
গো সুবীরদা কিযে
বলোনা নিখিলকে কোনো
মেয়ে এসে
প্রপস করলেও
ও বোধহয় উল্টো
দিকে হাঁটা
দেবে।" খিক
খিক করে
হাসে।
"মেয়েদের
পটানোর জন্য
বডিবিল্ড করবে
নিখিলেশ? তবেই হয়েছে; দেখনা
পার্টি গিয়ে
তিনি মেপে
খান, চেপে ড্রিংক
করেন অথচ
পরেরদিন আরো
একঘন্টা বেশি
জিম। মেয়েগুলোতো
পুরো ফেডাপ; এখনকার জমানায়
এরম এক
পিস ?" হাসছে সবাই
মিলে।
"ভালই
তো আমার কোটাটাও
তুই নিয়ে
নে; এত বছর
তো তাই-ই
করলি"
"ধুর
আমি কি আর
তোর মত
হেড টার্নার ? তোর
আসলে নামটাই
কাল হলোরে; আদ্যিকালের
নাম তারফলে
তুইও কেমন
মিয়োনো মুড়ি"
কথা বলতে
বলতে জিম
থেকে বেরিয়ে
আসে দুজনেই।
শেষ কথাটা
শুনে শুনে
কান পচে
গেছে নিখিলেশের। এটা
ঠিক নিখিলেশ
যখন ওর
অত্যাধুনিক বাইকটা
নিয়ে অফিসপাড়ায়
ঢোকে; মেয়েরাতো বটেই
ছেলেরাও মাথা
ঘুরিয়ে না
দেখে পারেনা । প্রায়শঃই
দু চারটে সিটি
শোনে; নিখিলেশ জানে
ওদের অফিসের
পরের ফ্লোরের
কয়েকটা মেয়ে
আছে যাদের
কাজ এটা।
সার্থক
নামা ছেলে
সুহৃদ; নিখিলেশের বহু
কালের বন্ধু, খুব
চেষ্টা চালায়
বন্ধুর এই
খোলসটা ভাঙ্গতে।
এত বছরে পারেওনি
বন্ধুকে ছাড়েওনি।
বর্তমানে দুজনে
একই অফিসে
কাজের সুযোগ
পাওয়াতে নিখিলেশের
বড় স্বস্তি হয়েছে। সুহৃদের
স্বভাব নিখিলেশের
এক্কেবারে উল্টো
পৃথিবীতে তিনটি
মহিলাকে বোধহয়
সে ফ্লার্ট করেনি; নিজের
মা, নিখিলেশের মা
আর শ্রীময়ী। নাহলে
নিখিলেশের বড়
দুই দিদি
অনিবনি ও
বোধহয় বাদ
যায়নি। সুহৃদই
টানতে টানতে
নিয়ে যায়
নিখিলেশ কে
অফিস পার্টি
গুলোতে।
শ্রীময়ী---
নতুন অফিস
জয়েন করেই
টার্গেট করেছিল
নিখিলেশ কে।
একটা দিন
ঠিক যেন
ওর জন্যই ছিল; নিখিলেশ
একা ছিল
লিফটে, দৌড়ে এসে
ঢুকেছিল শ্রী।
একমুহুর্তে সব
গুলিয়ে গেছিল
নিখিলেশের কোন
ফ্লোরে যাবে; ভুলভাল
বাটন চিপে
ছিল। ছোটতে
নাম রাখার
সময় কেউ
ভাবেনি মেয়েটা
এমন সার্থক
নামা হবে।
একটু আনকমন
নাম আবার
সহজ মানে
অবাঙালি বা
অভারতীয় উচ্চারণে
বিকৃত না
হয় তেমন এইসব
ভেবেই শ্রীময়ী। মা
বাবার একমাত্র
সন্তান যথেষ্ট
আদরে আতুপুতু
করে বড়
করা; হলে কি
হবে ওর
স্বভাব ওর
ঠাকুমার মত।
পড়াশোনা, খেলাধুলা এইসব
নিয়ে থাকত; এক্সকারশন
বোধহয় একটাও
বাদ যেতনা । যথেষ্ট
স্বাধীনচেতা, স্পষ্টবক্তা। বিভিন্ন
সময় খুঁজে
খুঁজে বের
করত অদ্ভুত
অদ্ভুত জায়গা
যেখানে হয়ত
সহসা কেউ
ঘুরতে যায়না
গেলেও ছেলেরা
যায়, মেয়েদের নিতে
চায়না সেই
রকম জায়গাতেও
শ্রী ঘুরে
এসেছে। আর
ফিরে এসে
একটু অতিরঞ্জিত
করে মা
কে শোনাতো যাতে
মা ভয় পায়।
চাকরি পেয়েই
গাড়ি কিনেছে
শ্রী, অফিস যায়
নিজেই চালিয়ে
আর ঘুরতে বেড়াতে
কত সুবিধা মন
করলো তো বেড়িয়ে
পরো। উইকেন্ড
গুলোতে ঠিক
কোথাও না
কোথাও চলে
যায়; মা বাবা
কে নিয়েও যায়, না
নিয়েও যায়।জীবনের
প্রতিটা মুহূর্ত
উপভোগ করতে
চায়, শনিগ্রহের বলয়ের
মতো একটা
আনন্দের বলয়
ঘিরে থাকে
তাকে সবসময়।
যেকোনো পরিবেশে
নিমেষে খাপ
খাইয়ে নিতে
পারে। যে
কারুর সাথে
বন্ধুত্ব করে
নিতে পারে
চট করেই।
আর
সবার মতো
তার চোখেও
পড়েছিল নিখিলেশ
প্রথম দিন
থেকেই। নিখিলেশের
দুটো ফ্লোর
ওপরে শ্রীময়ীর
অফিস একই
লিফটে যায়
কিন্তু নিখিলেশকে
দেখে ভেবেছিল
বেজায় উন্নাসিক।
সেদিন সুযোগে
ওর সাথে একা
ছিল লিফটে
কিন্তু বোঝেনি
নিখিলেশের হাল।
দু তিনদিন এমন
দৌড়ে দৌড়ে
"নাহ
এমন ছেলেমানুষী
করে অন্যের
পিছে লাগা ঠিক
নয়" ভেবে
একই লিফটে
যাওয়া বন্ধ
করে দিল।
সেদিন একা
থাকলেও পরের
দিনগুলোতে অবশ্য
আরো লোকজন
থাকত তবে
নিখিলেশের চোখ
যে তাকেই খোঁজে
এটা শ্রী
বোঝেনি।
দুতিনদিন
পর থেকেই আর
একই লিফটে
যাওয়ার চেষ্টা
করেনা শ্রী; পাত্তা
না পেয়ে অভিমানও
হয়েছিল। ছেলেরা
তাকে দেখলেই
কথা বলার
বাহানা খোঁজে
এতেই শ্রী
অভ্যস্ত। অতএব
এড়িয়ে চলার
শুরু। ওদিকে
নিখিলেশের কি
করুন অবস্থা, না
পারে ভুলতে, না
পারে বলতে
কাউকে। সুহৃদ
ধরেই নিল
নিখিলেশের সেই
পুরনো চিন্তা, দিদিদের
বিয়ে হয়নি
উপরন্তু কাজের
চাপ আর
তাই নিখিল
কদিন কেমন
হয়ে আছে।
হাতের
সামনে একটা
অফিস পার্টি
জুটে গেল, সুহৃদ
চলল নিখিলেশ
কে টানতে টানতে।
নিতান্ত সুহৃদকে
না বলতে পারেনা, আর
ওই আরকি কিছু
সময় অন্য
পরিবেশে থাকা
কিন্তু এইসব
পার্টিগুলো নিখিলেশের
কোনো দিনই
পোশায়না; ছেলেপিলে গুলো
খালি পেটে ড্রিংক
করে ফ্রি
তে পাছে বলে, তারপর বেহেড হয়ে
সে এক কান্ড।
মেয়ে গুলোও
কম যায়না। আর
খাবার মানেই
এক গুচ্ছ তেল
মশলা, ভাজাভুজি, স্বাস্থ্যসচেতন
আর মুখচোরা বলে
খুব অসুবিধা
হয় এই পরিবেশে
খাপ খাওয়াতে।
এবারের পার্টিতে
তো আরোই আপত্তি
ছিল মন
মেজাজ ভালো
নেই।
সবার
সাথে হাই
হেলো করে, পরিচিত
কিছু ছেলেমেয়ের
সাথে বসেছিল
সুহৃদ নিখিলকে
নিয়ে। যথারীতি
হয় কারোর মুন্ডপাত
নয় কাজের চাপ
এই নিয়েই আলোচনা।
ভালো লাগছিল
না নিখিলেশের; হঠাৎই
ওদের জুনিয়র
কিছু ছেলেমেয়ে
তাদের দু'চারজন
বন্ধু বান্ধব
নিয়ে হাজির।
সুহৃদদের কাছে
এগিয়ে এসে
কথা বলল; ওদের গ্রুপ
টাকে দেখে
নিখিলেশের দমবন্ধ
হবার উপক্রম।
শ্রীময়ী রয়েছে
ওই গ্রুপে। বন্ধুদের
সাথে গেস্ট
হিসাবে এসেছে
সে। পরিচয় করালো
সবার; এমন আকুল
হয়ে তাকিয়ে
ছিল নিখিলেশ, শ্রীময়ীর
বুঝতে একটুও
অসুবিধা হয়নি
আর মায়াও হয়েছিল
বুঝি খুবই।
বন্ধুদের
সাথে ঘুরলেও
চোখ চলে
যাচ্ছিল নিখিলেশের
দিকেই আর
একবারও বোধহয়
নিখিলেশের চোখ
অন্য দিকে
তাকানো পায়নি।
একসময় লক্ষ্য
করলো একা
বসা নিখিলেশ।
গ্রুপ থেকে
একপা দু'পা
করে আলগা
হলো শ্রী, পার্টি
তখন তুঙ্গে
কেউ কাউকে
খেয়াল করছেনা।
"এখানে
কি অন্য কারোর
বসার জায়গা ? না
মানে আমি
কি বসতে পারি ?" প্রশ্নটায়
একটু অপ্রস্তুত
নিখিলেশ।
"আরেঃ, হ্যাঁ
হ্যাঁ বসুন
না" আনন্দ
ঝরে পড়ছে
গলায়।
"আপনি
কি আমাদের অফিসেই? না
আসলে লিফটে
তো দেখি ওপরের
ফ্লোর যান....
" কথা গুলো
বলেই কেমন
অবাক হলো।
সম্পূর্ণ
অজানা অচেনা
একজনের সাথে
সে কিকরে এত
স্বচ্ছন্দে কথা
বলছে? লজ্জাও পেল
নিজের বোকামোতে, ধরা
পড়ে গেল
যে শ্রী কে
লক্ষ্য করে।
"নাঃ
বন্ধুদের সাথে
গেস্ট হিসাবে
এলাম, আমি শ্রীময়ী, আপনি ?"
"নিখিলেশ; গত
কয়েকদিন আসেন
নি অফিস?" আবার,আবার
কিছুতেই পারছেনা
নিখিলেশ।
"এসেছি
তো;" চুপ করে
থাকলো দুজনেই, একটু
সময় পার্টির
দিকে তাকিয়ে
থেকে শ্রী
গলা নীচু
করে বলল
"একটা
আইডিয়া এসেছে
বলব?"
"হ্যাঁ
স্যুর"
"আপনার
তো একটুও ভালো
লাগছেনা এখানে, চলুন
না কেটে পড়ি"
অবাক চোখে
তাকায় নিখিল; কি
করে বুঝলো
মেয়েটা?
"ঠিক
হবে এভাবে
বেড়িয়ে যাওয়া?" আমতা
আমতা করে।
"কিচ্ছু
বেঠিক হবেনা, চলুনতো"
কতকটা জোর
করেই নিয়ে
চলল। নাহ
সেভাবে কেউ
বোঝেনি ওরা
দুজন একসাথে
বেড়িয়ে যাচ্ছে।
বাইরে এসে
"কোথায়
এবারে?" নিখিলেশের প্রশ্ন।
"এইরে
তাতো ঠিক
জানিনা" হাসছে
শ্রী
"একটু
ভেবে দেখি, আচ্ছা
চলুন আমি
যখন আপনাকে
বের করে
এনেছি তখন
আজ আপনার পুরো
দায়িত্ব আমার; আমি
গাড়ি এনেছি
চলুন কোথাও
গিয়ে ডিনার
করি। আপনি
তো কিছুই খাননি।"
"সেটাও
খেয়াল করা
হয়েছে? তবে আমি
তো বাইকে এসেছি, গাড়িতে
গেলে পর
আবার আমায়
এখানে আসতে
হবে রাত
হয়ে গেলে
তো অসুবিধা হবে
মানে আমায়
এখানে ড্রপ
করে তবে
তো ফিরতে হবে; তাই
এক কাজ করলে
হয়না বরং
আমার বাইকটা
নিয়ে নি।"
এমন আপনি
তুমি ছাড়া
কথা শ্রীর
বেশ মজাই
লাগলো।
"বারে, বাইকে
গেলেও তো
আবার এখানে
আসতে হবে
আমার গাড়ি
নিতে" দু'মিনিট
ভেবে আর
নিখিলেশের করুন
মুখটা দেখে
"আচ্ছা
বেশ বাইকই
নেওয়া হোক; তবে
আমায় এখানে
ড্রপ না
করে যদি
অন্য কোথাও
ড্রপ করা
হয় মানে যেখান
থেকে আমি
ট্যাক্সি তে
বাড়ি যেতে
পারব তাহলে
সুবিধা হবে, কাল
অফিস ফেরতা
গাড়ি নিয়ে
নেব।" সমস্যার
সমাধান দিল
শ্রী।
"তবে
আমি যেখানে
বলব সেখানেই
যেতে হবে
ডিনার করতে
আর.."
"আর?"
"আজকের
ডিনার আমার
তরফের"
"তা
কি করে?"
"তাহলে
আমার গাড়িতে
যেতে হবে"
দুষ্টু হাসি
শ্রীর; বুঝেছে নিখিলেশ পেরে
উঠবে না
তার সাথে । এমন
একটা জায়গায়
নিয়ে গেল
শ্রী যেখানে
নিখিল বেশ
স্বস্তি বোধ
করলো ভিড়
ভাট্টা কম, সাথে
দারুন খাবার।
"আজকের
সন্ধ্যেটার জন্য
ধন্যবাদ" কথাটা
ভেতর থেকেই
বলল নিখিলেশ।
"আচ্ছা, এভাবে
উহ্য রেখে
রেখে কথা
বলাই কি
আপনার অভ্যেস
নিখিলেশ?" হাসছে শ্রী
"নাহ"
একটু চুপ
থেকে বলল
"আসলে আমি
একদম বুঝতে
পারিনা কি
বলব, আমায় সবাই
ভুল বোঝে, আমি
ইন্ট্রোভার্ট আর
সবাই ভাবে
নাক উঁচু।"
"সেই
ভুলটা বোধহয়
আমিও করেছিলাম"
"সেটা
ভাঙ্গলো কিকরে ?"
“কি জানি"
বলে মিষ্টি
একটা হাসি
দিয়ে বলল
"না
মানে জানি
কিন্তু বললে
আপনি খারাপ
পেতে পারেন"
"তোমার
কোনো কথাতেই
আমি খারাপ
পাবনা শ্রী"
নিজের অবস্থা
আর লুকোতে পারলনা।
"সরি
আমি তোমায়
তুমি বলে
ফেললাম"
"যেটাতে
কমফোর্ট ফিল
করবেন সেটাই
বলবেন"
“বললে না? কি
করে বুঝলে
আমায়? তবে যে
করেই হোক
তুমি দারুন
চিনেছ আমায়; আমার
ওই সব পার্টি
কোনদিন ভালো
লাগেনা। নিতান্ত
সুহৃদকে মানা
করতে পারিনা
তাই। তুমি
সেভ করলে
আজ; আর..."
আর ?
নাহ
গত কদিন একজন
কে না দেখতে
পেয়ে খুব
মন খারাপ ছিল, একটুও
ইচ্ছে ছিলনা
আজ পার্টিতে
যেতে; তবে ভাগ্যিস
গেছিলাম । লজ্জা
লজ্জা হেসে
বলে নিখিলেশ।
কাকে
না দেখে মন
খারাপ?
এখনো
বুঝিয়ে বলতে
হবে?
তুমি
পার্টিতে আমার
দিকে এমন
করে তাকিয়ে
ছিলে, আমি তখনি
বুঝেছিলাম, আর খুব
মায়া হচ্ছিল
তোমার জন্য।
তখনি টের
পেয়েছি যে
তোমায় সবাই
ভুল বোঝে ।
আরো
অনেকটা সময়
কাটাল ওরা
একসাথে।
তুমি
খুব স্বাস্থ্য
সচেতন; একদম খাওনা? ইসস
কত মুখরোচক খাবার
তুমি খেলেইনা
কি
হবে ওইসব
হাবি জাবি
খেয়ে? নিখিলেশ হাসে
শ্রীর কথায়
কিছুই
হবেনা, তবে আমি
কিন্তু খাই
আর ভী-ষ-ণ
ভালোবাসি" শ্রীর
উত্তর
একটা
কথা বলব? কিছু
মনে করবেনা?
বললাম
না তোমার কোনো
কথায় কিচ্ছু
মনে করবনা
তোমার
কোনো ডাক
নাম নেই? না
মানে এই
নামটা একে তো
খুব সেই
কিযেন, সেকেলে মার্কা, আর
এত বড় ।
হ্যাঁ, আমার
ঠাকুমা রাবীন্দ্রিক
ছিলেন তাই
রবীন্দ্রনাথের চরিত্র
অনুযায়ী আমাদের
নাম। দুই
দিদির ভালো
নাম কুমুদিনী আর
চন্দরা; মায়ের ইচ্ছে
ছিল আধুনিক
নাম দেওয়ার
ঠাকুমার পার্সোনালিটির
সামনে কিছুই
করতে পারেননি।
ডাক নাম
গুলো মায়ের
ইচ্ছে অনুযায়ী, আমি
সোমবারে জন্মেছি
তাই সমু
আর দিদিরা যমজের
মতই একই
বছরের শুরুতে
আর শেষে দুজন
ছন্দ মিলিয়ে
ওরা অনি
বনি।
আমি
কি সমু বলতে
পারি?
যা
খুশি; চাইলে নিজেও
কোনো নাম
দিতে পারো । হাসছে
সমু;
নিজেরাই
অবাক ওদের
এত কথা জমে
ছিল? সুহৃদ হঠাৎ
আবিষ্কার করলো
নিখিলেশ পার্টিতে
নেই; বেশ কয়বার
ফোন করলো
মোবাইল সুইচ্ড
অফ করা।
কোথায়
গেল? ভেবে পায়না
সুহৃদ। পরদিন
জিমে যথারীতি
উপস্থিত, নিখিলেশ খপ
করে ধরল
সুহৃদ।
অ্যাই
ব্যাটা, কাল কোথায়
কেটেছিলি?
তেমন
কোথাও না
তেমন
নাহলে এমনই
হোক, গেছিলি কোথায়
সেটা বল; সাথে মোবাইল
বন্ধ করে
শ্রী
কে নিয়ে ডিনারে
গেছিলাম । সোজা সাপ্টা
বলল।
কাকে
নিয়ে? অবাক হয়ে
বেশ জোরেই
বলল। বলেই
খেয়াল করলো
বাকিরা ঘুরে
তাকাচ্ছে। আবার
গলা নীচু
করে জিজ্ঞেস
করলো
কাকে
নিয়ে? শ্রী? হু ইস
শি?"
"ওই
যে অভিদের সাথে
এসেছিলনা? ওদের অফিসের
মেয়েটি"
"ওই
যে লাল চুরিদার?" মাথা
নেড়ে হ্যাঁ
বলল নিখিলেশ।
মাথায় হাত
দিয়ে বসে
পড়ল সুহৃদ।
"বলিস
কিরে? আমিতো ভাবতেই
পারছিনা এটা
তুই? ওই মেয়েটা
তো ব্যাপক হ.."
নিজেকে সংযত
করলো সুহৃদ
"না
মানে ওই
মেয়েটি অবশ্য
অর্ডার দিয়েই
তৈরী ভাই; তোর
মতই হেড
টার্নার। কিন্তু
এটা হলো
কি করে?"
"আমি
গত কয়েকদিন ওকে
না দেখে আপসেট
ছিলাম; তোকে বোঝাতে
পারিনি। তবে
তুই এবারে
নিয়ে গিয়ে
বড্ড উপকার
করলি"
"আর
বলিসনা আমি
এবারে ভিমরি
খাবো; মেলাতেই পারছিনা
এত উন্নতি ছেলের?" হাসে
দুজনেই। জড়িয়ে
ধরে সুহৃদ।
"আমি
আজ এত খুশি
বোঝাতে পারবনা, শ্রীকে
আমি থ্যাঙ্কস
দেব। ভাগ্যিস
ওকে কোনদিন
ফ্লার্ট করিনি; বোধহয়
এই জন্যই রে।
তা বিয়েটা কবে
সারবি?"
"জানিনা, দাঁড়ানা
এখনি বিয়ে
কিরে আগে
বাড়িতে বলি
আর দিদিদের কিছু
হোলোনা আর
আমি..."
বাড়িতে
জানানোর আগে
অনি বনিরই
চোখে পরে
ভাই এর
পরিবর্তন। আজকাল
কেমন বেশ
কথা বলে, বাজার-হাট
আগেও করত
তবে এখন
যেন আরো
গুছিয়ে সাথে
মাঝে মাঝেই
সিঙ্গাড়া ইত্যাদি
কিনে আনে; নিজে
তো খেতই না
দিদিদের কেও
এতদিন মানা
করত সে
কিনা নিজে
হাতে আনছে
এইসব?
সাথে
লক্ষ্য করে
আজকাল প্রায়শঃই
ফোন আসে
আর সমু কেমন
গলা নীচু
করে হাসি
হাসি মুখে
কথা বলে
বেশ সময়
নিয়ে; বা অনেক
সময়েই কোথায় বেরিয়ে
যায় বলতে
পারেনা যাওয়ার
আগে আর
ঘুরে এসেও
এমন সব
বলে। ভাইএর
পরিবর্তনের কারণ
জানতে আগ্রহী
হয় দুজনেই ভয়
পায় সমু
কোনো খারাপ
সঙ্গে পড়েনিতো? আজকাল
সুহৃদটাও আসেনা; নইলে
ওর থেকে জানা
যেত।
তবে
সমু আর
শ্রী নিজেদের
সম্পর্কটা অফিস
পাড়ায় জানাজানি
হতে দেয়নি ঠিকই
কিন্তু উইকেন্ডে
শ্রী প্ল্যান
করতো আর
সমুকে নিয়ে
বেরিয়ে পড়ত।
একদিন শ্রীর
গাড়ি তো
একদিন সমুর
বাইক। শ্রীর
পাল্লায় পরে
সমুও যেন
নতুন মানুষ।
নাহ সবার
সামনে হয়ত
না তবে শ্রীর
কাছে তো
বটেই। এমনি
একদিন বাইক
নিয়ে বেরিয়ে
একটু পর
ঝিরঝিরে বৃষ্টি
শুরু হলো; ওদের
আনন্দ দেখে
কে, বিশেষ করে
শ্রীর।
"নাগো, বৃষ্টির
তেজ বাড়ছে"
"তো? আমার
দারুন লাগছে
ভিজতে" ঘনিষ্ট
হয়ে বসে
শ্রী।
"একটু
সময় দাঁড়িয়ে
নেওয়াই ঠিক
হবে" বলেই
একটা বড়
গাছ দেখে
দাঁড়িয়ে পড়ল
সমু। রাস্তার
থেকে গাছের
আড়ালে গিয়ে
দাঁড়ালো কারণ, ছাঁট
আসছে রাস্তার
দিক থেকে।
"তুমি কি
এমন দাঁড়িয়ে
থাকবে? চলোনা ভিজি।"
ছোটদের মতো
চঞ্চল হয়ে
উঠলো শ্রীময়ী।
সমুর হাত
ধরে টেনে
বৃষ্টির দিকে
যেতে গেছে
উল্টো টান
দিল সমু
টাল সামলাতে
না পেরে অপ্রস্তুত
শ্রী এসে
সমুর বুকের
ওপর।
"কি
হচ্ছে এটা?"
"কোনো
দরকার নেই
ভেজার; ভিজে একটা
অসুখ বিসুখ
করলে কি
হবে?"
"কি
আবার হবে? দু
চারদিন অফিস
কামাই" ঠোঁট
চিপে হাসছে
শ্রী।
"আর
আমার কি
হবে? শোনো, এমন হাসবে
না তো, আমার
সব গুলিয়ে যায়"
বুকের ভেতর
টেনে নিয়ে
বলে সমু।
"তোমার
আরকি ওই
দুচারদিন একটু
স্বস্তির নিঃশ্বাস
ফেলে নেবে"
আবার একই
হাসি।
"পারবনা
খুব ভালই
জানো; দাঁড়াও এবারে
বাড়িতে বলবই
আর পারছিনা তোমায়
ছেড়ে থাকতে; আসলে
দিদিদের বলব
না বাবাকে সেটাই
ভেবে পাইনা"
"একটা
বুদ্ধি দেব?"
"বলো"
"আমায়
বরং একদিন
নিয়ে চলো
তাহলে সবাই
ওমনিই বুঝে
যাবেন"
"দারুন
আইডিয়া" বলে
আরও কাছে
টানলো শ্রীকে।
বৃষ্টির ছাঁট
লেগে চুল
ভিজে লেগে
আছে কপালে, গালে; গুড়ো
গুড়ো বৃষ্টি
লাগা চোখের
পাতায়, ঠোঁটে। একটু
সময় পরস্পরের
দিকে তাকিয়ে
রইলো।
"ভাবছিলাম"
"কি?"
"একটা
মিষ্টি...."
"এই
বৃষ্টির মধ্যে
আবার মিষ্টি
এলো কোত্থেকে?" শ্রী
অবাক চোখে
সমুর কথা
বোঝার চেষ্টা
করে।
"বৃষ্টি
তেই তো
মিষ্টি জমে"
দুষ্টু করে হাসে
সমু
"মানে? কিছু
একটা মতলব
আছে তোমার; হেঁয়ালি
না করে বলোতো"
সমুর
আলতো ঠোঁট
ছুঁয়ে গেল
শ্রীর ভেজা
চোখের পাতায়।
"মিষ্টি"
গাঢ় আওয়াজে
নীচু স্বরে
বলল সমু।
সমুর বুকের
মধ্যে মুখ
লুকোলো শ্রী;
"লুকোলে
হবেনা আমার
মিষ্টি চাই" ফিসফিস
করে সমু
"হুমম, ছেলের
দেখি উন্নতি
হয়েছে; এই মানুষটা
এত যুগ ছিল
কোথায়?" হাসছে শ্রী
"আমিও
জানতাম না
আমার ভেতরে
এমন একটা
মানুষ লুকিয়ে
আছে; কিন্তু এখন
কথা ঘোরালে
চলবেনা"
মিষ্টি
পেল সমুও।
বাড়ি ফেরার
পথে ঠিক
হলো পরের
উইকেন্ডেই শ্রী
যাবে সমুর
বাড়ি।
রবিবার
সক্কাল সক্কাল
কোথায় যেন
গেল সমু,অনি
বনি যথেষ্ট
সকালে ওঠে
এমনকি রবিবারেও; তারা
ওঠারও আগে
বেড়িয়েছে।
"ভাই
তোর চা
নিয়ে যা"
ডাক দিয়ে
সাড়া না
পেয়ে আবিষ্কার
করলো ভাই
ঘরেই নেই।
"কি
করবি দিদি, বাবাকে
তো না বললেই
নয়"
"বুঝতে
পারছিনা রে; ওর
মোবাইলে ট্রাই
করে দেখেছিস? রবিবার
তো জিম যায়না"
"মোবাইল
ধরছেনা"
"তাহলে
আরেকটু সময়
দেখি নাকি, কি
বলিস?"
একটু
পরেই বাইকের
আওয়াজ পেয়ে
তড়িঘড়ি বারান্দায়
এলো দুই
বোনে। ভাইয়ের
বাইকে নতুন
মুখ দেখে
মুখ চাওয়া
চায়ি করে
ঘরে ঢুকে
গেল। গলা
ঝেড়ে নিয়ে
বলল সমু,
"বাবা, বড়দি, ছোড়দি
এই হলো শ্রীময়ী।"
"শ্রী, আমার
বাবা, বড়দি আর
ছোড়দি" শ্রীর
দিকে ফিরে
বলল।
অবাক
হলো সবাই
শ্রী কে
দেখে। আজ
কিন্তু শাড়ী
পরে এসেছে
শ্রী। এগিয়ে
এসে প্রনাম
করতে গেল
সবাইকে বাবা
নিলেও দিদিরা
নিলোনা।
"আরে
থাক থাক, তুমি
কি ওদের অফিসের? না
মানে পরিচয়
কোথায়? আচ্ছা থাক
সেসব তুমি
যাও যাও
ভেতরে গিয়ে
বোসো।" মহেন্দ্র এক
কোথায় গ্রহন
করে নিল
তাকে।
"ব্যাস, বাবা
যখন বলেই
দিলেন তবে
তো কোনো কথাই
নেই; কি নাম
তোমার?"
"শ্রীময়ী"
"বাহ, সার্থক
নাম্নী" মহেন্দ্রর
কথায় লজ্জা
পেল শ্রী।
"বাবা
দাঁড়াওনা ও
আগে এখানেই
বসুক; আমরা একটু
কথা বলি"অনির
কথায় মুখ
শুকিয়ে গেল
বাকি সবার;
"ভাই
তুই ঘরে
গেলে যা, চা
খেয়েনে আমি
ওকে তোর
ঘরে দিয়ে
আসবো' খন।" সমু
চলে যেতে
বাধ্য;
এরপর
শুরু অনির
নানান প্রশ্ন।
কোথায় বাড়ি, বাবা
কি করেন, শ্রী
ঠিক কি
করে, ভাইবোন কেউ
আছে কিনা, রান্না
জানে কিনা...
তবে শ্রীর
উত্তরে মোটামুটি
সন্তুষ্টই হলো
অনি বনি।
"চলরে
তোকে ভাইয়ের ঘরে
দিয়ে আসি; তুই
ওই সব ভাজা
ভুজি খেতে
ভালো বাসিস
তাইনা?" শ্রী মাথা
নেড়ে হ্যাঁ
বলতেই
"ঠিক
জানতাম, ওই জন্যই
ভাই আজকাল
আমাদের জন্য
নিয়ে আসে
ওই সব"
ঘরে
যথেষ্ট উদ্বিগ্ন
হয়ে অপেক্ষা
করছিল নিখিলেশ।
"কি
হলো? দিদিরা কি
বলল?"
"কি
আবার বলবেন
মা থাকলে যেই
সব প্রশ্ন করতেন
তেমন কিছু
মামুলি প্রশ্ন।"
এড়িয়ে গেল
শ্রী; মনে মনে
বলল 'দিদিদের বন্ধু
হতে হবে, ও
আমি ঠিক
ম্যানেজ করে
নেব সমু'
সমুর
ঘরটা বেশ
বড় এক পাশে
বিছানা, আর আরেক
পাশে টেবিল।
একটা পাল্লা
ওয়ালা আলনা
কাম আলমারি
গোছের সেটা
টেবিলের পাশে।
টেবিলের ওপর
সমুর ছোটোবেলার
একটা ছবি
দেখে এগিয়ে
সেটা দেখতে
গেল শ্রী; সমু
এসে পিছন থেকে
জড়িয়ে ধরল;
"কি
হচ্ছে?"
"একটা
মেয়েকে শাড়ী
পরে যা
লাগছেনা"
"এই
নিয়ে বোধহয়
টুয়েন্টি ফাইভ
বার বলা
হলো সকাল
থেকে" বলেই
ঘুরে গিয়ে
লাফ দিয়ে
উঠে বসলো
টেবিলে।
সমুর
খুব আদর
করার ইচ্ছে
টের পেয়ে
দুই হাতে
ঠেলে সরানোর
চেষ্টা করে
"দিদিরা
এসে পড়লে
বুঝবে" চোখ
পাকিয়ে কপট
রাগ দেখিয়ে
বলে
"জানোনা,প্রথম
দিন বাড়িতে
এলে মিষ্টিমুখ
করতেই হয়"
দাঁতে দাঁত
চেপে দুষ্টুমির
আভাস ভরা
আওয়াজে বলে
সমু।
"ভাই, তোরা...."
ছিট্কে সরে
যায় নিখিলেশ, শ্রীময়ীও
নেমে দাঁড়ায়
টেবিল থেকে; ঘরে
পা দিয়ে ওদের
ঘনিষ্ঠ দেখেছে
বনি। মুখটা
তেতো করে
বলল
"দিদি
তোদের বাইরের
ঘরে ডাকছে"
শ্রী
বুঝেছে বিয়েটা
মেনে নিলেও
দিদিদের সাথে
বন্ধুত্ব করতে
হবে। একটু
খারাপও লাগছে
দুটো দুটো
মেয়ে যাদের
রূপ গুন
কোনটাই তেমন
কম নয় তারা
নিজেদের সংসার
পেলনা। সারাটা জীবন
কি শুধু বাবা
আর ভাইয়ের দেখভাল
করেই কাটাবে? নাহ
শ্রী হেল্প
করবেই ওদের।
বেশ ধুমধাম
করেই বিয়েটা
হয়েছিল ওদের।
বিয়ের আগের
থেকেই শ্রী
এবারই আসা
যাওয়া করতে
শুরু করে
আর বড়দি ছোড়দির
ভালোলাগার জিনিষ
নিয়ে নিয়ে
আসা; ওদের সিনেমার
টিকিট কেটে
আনা, এই সব
তখন থেকেই
শুরু।
মা
যেভাবে সমুর
দেখভাল করতেন
দুই দিদি
একদিনের জন্যও
তার ব্যতিক্রম
হতে দেয়নি।
শোক তো
ওদেরও ছিল
তাও কিভাবে
করে গেছে, এগুলো
সমুর কাছেই
শোনা শ্রীর; আর
তাই সমুর
মত করে সে
ও প্রথমদিন
থেকেই বন্ধু
হওয়ার চেষ্টা
চালিয়ে যাচ্ছে
আজ বছর দুই।
( শেষ অংশ পরের সংখ্যায় )
( শেষ অংশ পরের সংখ্যায় )