ডা. বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়
পাড়ার ডাক্তার। বেশ নামডাক আছে । কম ভিজিটে দেখে দেন। সুতরাং সবাই যান তাঁর কাছে ।দুদিনের জ্বরে পড়ে আমিও একদিন গেলাম ।
প্রেশার মাপলেন । চোখ দেখলেন ।তারপর ডা. সাহেব বললেন – ঔষধ লিখে দিচ্ছি । সাথে পথ্যও ।নিয়ম করে খাবেন । কম খাবেন । কম চিন্তা করবেন । কম বলবেন । :তাহলে বেশিদিন বাঁচব , ডাক্তার সাহেব ? :অসীম সময়ের কাছে যতদিনই আমরা বাঁচি সে অণুমাত্র , বুঝেছেন !
খশখশ করে লিখে হাত বাড়িয়ে দিলেন ছোট প্রেসক্রিপশনটি । আমি দেখলাম –মাত্র দুটো ঔষধ ! ব্যস, আর কিছু না ! অক্ষরগুলোও নিতান্তই ছোটছোট । অবাক হয়ে দেখলাম ডাক্তার সাহেবের স্বাক্ষরটাও ছোট – ‘বনফুল’!
গপ্পো সপ্পো
একটা নদী থই থই পানি নিয়ে দুইগ্রামের মধ্যে দিয়ে চিরকাল বয়ে যায় । নদীর ডান দিকে কালীমন্দির , তার পাশেই মিনারঅলা মাদ্রাসা । এক ঝকঝকে দিনে নদীরএক কামড়েই দুটি শেষ । কালী ভাসেন , মিনার তার চঞ্চু ডোবায় জলে ।
নদীর বাম পাশে হাটখোলা ।সেখানে ছাপরা বেড়ার ঘরে বিড়ি খায় ছানিপরা বিপ্লবী । বেড়ায় গোঁজা রাদুগা । অ আ ক খ ।
এক সন্ধ্যায় ঘাটে পা ধুতে গিয়ে তিনি আর ফিরে আসেননি । ভরাকটাল জলে তার লাশ ভেসে ওঠে পরদিন । জলের ঘূর্ণিতে ড্যাশ ক্যাপিটালের ছেঁড়া পাতা ভেসে যায় । এক বেরসিক অজানা পাখি কমরেডের চোখদুটিকে ঠুকরে খেয়ে ফেলেছে । ছানিঅলা চোখ খেতে কী যে স্বাদের হয় !
---এইসব কথা বলে গল্প করছিল এক লেজকাটা ফিঙে পদ্মপাতার ওপর বসে থাকা জল ডাহুকীর সাথে । গল্প শুনে হেসে লুটোপুটি খায় বনের হাওয়া , কৃষ্ণবটের ছায়া ।