গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

রবিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৮

সুবীর কুমার রায়


মিশন  বক ভাজা

পাখির মাংস খাওয়ার ইচ্ছা, স্কুল জীবন থেকেই ছিল। কিন্তু সেই সাধ কোনদিনই মেটাবার সুযোগ হয়নি। স্কুল জীবনে অনেক বাড়িতেই মুরগি পুষতে দেখেছি। আমার বাড়িতেও বেশ কিছু মুরগি, ও খানতিনেক হাঁস ছিল। তাছাড়া ব্রয়লার মুরগি নামক অদ্ভুত প্রাণীটি তখনও বোধহয় ধরাধামে আবির্ভূত হননি। ফলে, মার হাতের রান্না করা দেশি মুরগির সুস্বাদু মাংস, কপালে কম জোটেনি। তাই ট্যাঁশ গরুর মতো  দেশি মুরগিরও যদি পাখির কৌলীন্য বিন্দুমাত্র থেকে থাকে, তবে আমার পাখির মাংসের সাথে পরিচয়, ওই দেশি মুরগি পর্যন্ত।
নবম শ্রেণীতে পড়ার সময়, আমার সাথে মিন্টু চক্রবর্তী নামে একটি ছেলে পড়তো। তার কাছেই প্রথম শুনলাম যে ডাহুক পাখির, যাকে আমরা ডাক পাখি বলে থাকি, মাংস নাকি অতি উপাদেয়। আমার বাড়ির ঠিক সামনেই একটা ছোট্ট ডোবা ছিল। তাতে জল ছিল কী না, দেখার বা জানার সৌভাগ্য আমার কোনদিন হয়নি। কাঠা দেড়েকের ডোবাটি, বড় বড় কচুরিপানা ও কচু গাছে ভরা ছিল। তখনও জমি নিয়ে অত্যন্ত লাভজনক ব্যবসার কথা বুক অফ্ নলেজ বইতে স্থান না পাওয়ায়, জমির দালালি ও প্রোমোটারি নামক অত্যন্ত লাভজনক শিল্পটি, এ রাজ্যে তেমন উন্নতি সাধন করে উঠতে পারেনি। ফলে এই জাতীয় ফাঁকা জমি অনেক দেখা যেত। আমাদের বাড়ির সামনের ডোবাটি ছিল, ডাহুক পাখির পীঠস্থান। সারা দিন পিঠের দিকটা কালো রঙের ও গলার কাছ থেকে পেটের দিকে পা পর্যন্ত সাদা রঙের অসংখ্য ডাহুক ডোবার ওপর মনের সুখে নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়াতো। সন্ধ্যার পর থেকে নির্দিষ্ট সময়ের বিরতি দিয়ে তারা একভাবে ডেকে যেত। শুনতাম তারা নাকি শিয়ালের হাত থেকে ডিম ও ছানাদের রক্ষা করার জন্য, এই পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে। তখন এই অঞ্চলে প্রচুর শিয়ালের আনাগোনা ছিল একথা সত্য, কিন্তু বিরামহীন এই ডাক তো শিয়ালের থেকে সাবধানতার পরিবর্তে শিয়ালকে নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে রুট ম্যাপের মতো তথ্য জানিয়ে, তাদের আমন্ত্রণ করা বলে মনে হতো। সে যাহোক, এটা শিয়াল ও ডাহুকের সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ব্যাপার, এ ব্যাপারে আমার মাথা না গলানোই বোধহয় ভালো, কিন্তু এই ডাহুক বাবাজীবনকে ধরি কিভাবে? মিন্টুই উপযাচক হয়ে কাঠি দিয়ে ফাঁদ তৈরি করা শিখিয়ে দিয়ে সে রাস্তা বাতলে দিলেও, হাজার চেষ্টাতেও তাদের একটাকেও আমাদের বাড়িতে অতিথি হিসাবে নিয়ে আসতে পারিনি।
কলেজ জীবনে একবার শীতকালে মুর্শিদাবাদের এক প্রত্যন্ত গ্রামে, এক বন্ধুর আত্মীয়র বাড়িতে একটা কাজে যেতে হয়। ওই বন্ধুর আত্মীয়র বাড়ির কেউই আমার পূর্বপরিচিত না হওয়ায়, আমার খুব একটা যাওয়ার ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু বাস্তবে আমার সেখানে যাওয়ার ইচ্ছা না থাকলেও, বন্ধুকে সঙ্গ দেওয়া, ও বেড়াবার নেশায় শেষপর্যন্ত যেতেই হলো। ওই বন্ধুর আত্মীয়রা তিন ভাই, বৃদ্ধ মাকে নিয়ে সেখানে বসবাস করতেন। অবিবাহিত বড় ভাই একটু খ্যাপাটে ধরণের ছিলেন। মেজ ভাই পুলিশ অফিসার, বাইরে কোথাও পোস্টেড। ছোটভাই নদীয়ার কোন একটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। কখনো প্যান্ট্ গুটিয়ে হেঁটে, কখনও নৌকায়, বাড়ির সামনেই জলঙ্গী নদী পার হয়ে, স্কুল যাতায়াত করতেন। সৌম চেহারার মধু নামে এই ভদ্রলোকটি, বয়সে আমাদের থেকে কিছু বড় হলেও, নিমেষের মধ্যে আমাদের বন্ধু হয়ে উঠলেন। ওনার সাথে মুর্শিদাবাদের দ্রষ্টব্য স্থানগুলো নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়ালাম। সে যাহোক, যেকথা বলছিলাম, নির্জন এলাকা, ডাকাতির ভয়েই সম্ভবত বাড়িতে একটি শক্তিশালী বন্দুক ছিল। কথাবার্তায় জানা গেল, মধুদার বন্দুকের লক্ষ্যভেদ খুব ভালো। বড়ভাইয়ের বন্দুকের টিপ নাকি অনেকগুণ বেশি, তবে তাঁর খ্যাপাটে স্বভাবের জন্য, তাঁর হাতে কখনও বন্দুক দেওয়া হয় না।
একদিন রাতে মধুদা হঠাৎ আমায় জিজ্ঞাসা করলেন যে, আমি পাখির মাংস খাই কী না, তাহলে তিনি পরের দিন সকালে বন্দুক নিয়ে নদীর ধারে পাখি শিকারে যাবেন। তাঁকে তো আর বলতে পারি না, যে হাজার চেষ্টা করেও আমার সেই সৌভাগ্য হয়নি। তাই মনে মনে খুব খুশি হয়ে, বেশ বড় করে ঘাড় নেড়ে জানিয়ে দিলাম, যে পাখির মাংস খাই। সারারাত উত্তেজনায় কাটলো।
পরের দিন সকালে আমরা তিনজন পাখি শিকারে বেরোলাম। মধুদার হাতে সেই দোনলা বন্দুক। নদীর ধারে এসে একটু এগিয়েই কিছুটা দূরে একটা বেশ গোলগাল হৃষ্টপুষ্ট হালকা কালচে রঙের পাখির দেখা মিললো। মধুদা আমাদের সেখানেই দাঁড়িয়ে পড়তে বলে জানালেন যে, “এই পাখিটাকে কাঁক বলে, এর মাংস খুব সুস্বাদু হয়কাক দেখেছি, বকও দেখেছি, কিন্তু জীবনে এই প্রথম কাঁকের নাম শুনলাম ও তার দর্শন পেলাম। মধুদা খুব ধীরে ধীরে এগিয়ে গিয়ে, আরও ধীরে ধীরে বন্দুকটা তার কাঁধের কাছে তুলতে শুরু করলেন। কিন্তু কাঁকটির বোধহয় এই জাতীয় পরিস্থিতি মোকাবিলা করার পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে। ধীরে ধীরে মধুদা যখন গুলি করার দূরত্বের মধ্যে এসে হাজির হলেন, কাঁক বাবাজি তখন উড়ে গিয়ে বেশ খানিকটা আগে গিয়ে বসলো। মধুদা আবার ধীরে ধীরে কাঁকের উদ্দেশ্যে এগিয়ে চললেন। এইভাবে বারকতক এগিয়ে গিয়ে বসে, তিনি বিরক্ত হয়ে নদীর ওপারে উড়ে গিয়ে বসলেন। সোম থেকে শনি প্রতিদিন দুবেলা নদী পারাপার করা মধুদা কখনও তাতে দমে যান? তিনিও বন্দুক কাঁধে নদী পার হয়ে পূর্বের মতো এগিয়ে যেতেই, মনে মনে সম্ভবতদেখ কেমন লাগেবলে, পাখিটা আগের মতোই উড়ে আবার এপারে চলে এলো। মধুদা আশাহত না হয়ে, আবার এপারে চলে এসে তার উদ্দেশ্যে এগিয়ে যাওয়া শুরু করার সাথে সাথেই, কাঁকটা মধুদাকে টাটা সী ইউ করে, দৃষ্টির বাইরে চলে গেল।
একটু দুরেই একটা বককে দেখিয়ে মধুদা জিজ্ঞাসা করলেন, বকের মাংস খাই কী না। এই প্রজাতির বক নাকি ভীষণ ভালো খেতে। বক তো দূরের কথা, চড়াই হলেও আমার আপত্তি নেই, ভিক্ষার চাল আবার কাঁড়া আর আঁকাড়া! বকটার বুদ্ধির এখনও বিশেষ পক্কতা লাভ করেনি বলেই মনে হলো, কারণ মধুদা তার পছন্দ মতো দূরত্ব থেকে তার উদ্দেশ্যে বন্দুক নিশানা করার পরেও, সে পালাবার চেষ্টা না করে, নিজের খাওয়াতেই মনোনিবেশ করে রইলো। মধুদা বেশ কিছুক্ষণ সময় নিয়ে নিশানা করে গুলি চালালে, খট করে একটা হালকা শব্দ হয়ে আমার বুকের বামদিকে হৃৎপিন্ডে একটা প্রবল ধাক্কা দিলো। করুণ দৃষ্টিতে বকটার উড়ে যাওয়ার দৃশ্য দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলাম। যার কেউ নেই তার নাকি শুনি ভগবান আছে। এক্ষেত্রেও বোধহয় সেই ফরমূলা কাজ করেছে, কারণ টোটাটা না ফেটে, বন্দুকের ভিতরেই রয়ে গেছে। মধুদা তার বন্দুক খুলে টোটাটা বার করে নিয়ে জানালেন, যে ওটা খারাপ ছিল, পিনের আঘাত সত্ত্বেও ফাটেনি, এটা খুব বিপজ্জনকও বটে। ব্যাস হয়ে গেল পাখির মাংস খাওয়া, বাড়িতে কি রান্না হয়েছে ভগবান জানে।
আরও কয়েক বছর পরে পাখির মাংস খাওয়ার শোক যখন প্রায় ভুলতেই বসেছি, আশাও ছেড়ে দিয়েছি, তখন হঠাৎ করেই সেই ভগবানের কৃপা দৃষ্টি ভুল করে আমার ওপর পড়লো। তখন আমি চাকরি করি। সকাল সাড়ে নটা নাগাদ বাড়ি থেকে প্রায় পনেরো মিনিট সাইকেল চালিয়ে অফিস যাই, আবার একই ভাবে বিকালে ফিরে আসি। এক রবিবার রাতে হঠাৎ বেশ জ্বর হলো। বেড়াতে যাওয়ার প্রয়োজনে, অকারণে আমি সচরাচর ছুটি নিতাম না। অল্প জ্বরজ্বালা বা শরীর খারাপ হলেও, অফিস কামাই করার বদভ্যাস আমার ছিল না। তাছাড়া হাতে সেরকম টাকা পয়সা না থাকায়, টাকা তোলারও বিশেষ প্রয়োজন ছিল। কাজেই পরের দিন, অর্থাৎ সোমবার আমি অফিস যাবো এরকমই ঠিক ছিল।
সোমবার সকালে ঘুম থেকে উঠে বুঝলাম অফিস যাওয়ার ক্ষমতা আমার নেই, ইচ্ছাও করছে না। বাধ্য হয়ে আমার বাড়ির থেকে কিছুটা দুরে, আমারই এক সমবয়সি সহকর্মী, অপুর বাড়িতে একটা টাকা তোলার স্লিপ্ নিয়ে গেলাম, অফিস থেকে কিছু টাকা তুলে আনার ব্যবস্থা করতে। বন্ধুর বাড়ির সামনে গ্রিল দেওয়া বারান্দার বাইরে থেকে তাকে ডাকতে, সে বারান্দায় এসে হাজির হলো। তার হাতে টাকা তোলার স্লিপটা দিয়ে আমার অফিস না যাওয়ার কারণটা অল্প কথায় জানিয়ে ফিরে আসবো, এমন সময় আমার পাশ দিয়ে একটা বারো-তেরো বছরের ছেলেকে একটা বকের ঠ্যাংদুটো ধরে ঝুলিয়ে নিয়ে যেতে দেখা গেল। আমার বন্ধুর প্রশ্নে সে জানালো, যে সে বকটাকে একটা গুলতি দিয়ে এইমাত্র মেরেছে। রতনে রতন চেনে, এক মুহুর্ত দেরি না করে অপু তাকে চার আনা পয়সা নিয়ে বকটাকে দিয়ে যেতে বললো। ছেলেটার দাবি আট আনা। যাহোক্, কিছুক্ষণ দরাদরির পর আমার বন্ধুরই জয় হলো। সে ছেলেটাকে একটা সিকি দিয়ে পরে দুআনা নিয়ে যেতে বলে, গ্রিলের বাইরে হাত বাড়িয়ে বকটা হস্তগত করে আমায় বললো, “চটপট ভিতরে চলে আয়, মা আসার আগেই বকটাকে ভাজা ভাজা করে দুজনে সাবাড় করে দেবো
কি আর করা যাবে ভিতরে যেতেই হলো, বকবকের থেকে বকের আকর্ষণ যে আমার কাছে অনেক বেশি। বাড়িতে অপু আর ওর স্ত্রী নমিতা ছাড়া আর কেউ নেই। অপুর বাবা খুব ঠান্ডা স্বভাবের মানুষ, তিনি সম্ভবত অফিসে চলে গেছেন। অপুর মা একটু কড়া ধাঁচের মানুষ, বন্ধু ও বন্ধুপত্নী, উভয়েই দেখলাম ভদ্রমহিলাকে একটু ভয়ই পায়। তিনি নাকি সামনের কোন দোকানে গেছেন। যাইহোক, আমার বন্ধুটি তো মুহুর্তের মধ্যে মুরগি ছাড়ানোর স্টাইলে বকটাকে ছাড়িয়ে ফেললো। আহা কি রূপ! ছোট্ট একটু দেহ, তারপর বিশাল লম্বা এক গলা, তারপরে মুন্ডু। মিঞার দেখলাম বিবির ওপর অগাধ প্রেম। আমায় খুব ঠান্ডা গলায় বললো, “নমিতাকে একটু ভাগ দিই বল”? এতে আপত্তির কোন প্রশ্নই উঠতে পারে না। তবে সম্মতি জানাবার আগেই দেখলাম, বকটাকে তিন টুকরো করা হয়ে গেছে। বললামএটা একটা জিজ্ঞাসা করার মতো বিষয় হলো”?
ততক্ষণে গ্যাস জ্বেলে, একটা পাত্রে জল দিয়ে তিন টুকরো মাংস সিদ্ধ করতে বসানো হয়ে গেছে। অপু আমায় জিজ্ঞাসা করলো, “মাংসটা সিদ্ধ করে আদা, পেঁয়াজ, রসুন, গরম মশলা দিয়ে ভাজা ভাজা করে দেই বল্”? আমার তখন গায়ে বেশ জ্বর, বাড়ি ফিরতে পারলে বাঁচি। তাছাড়া রান্নার আমি বুঝিটাই বা কি? তবু উত্তর দিতে হয়, তাই বললাম তাই কর। অপু কিন্তু বসে নেই, কথা বলতে বলতেই সে খানিকটা দারচিনি, ছোট এলাচ, ও লবঙ্গ, রান্নাঘরের লাল মেঝেতে নোড়া দিয়ে পিটিয়ে ও ঘষে গরম মশলা তৈরি করে ফেলে, ওখানেই রেখে দিয়েছে।তুই একবার গ্রিলের কাছ থেকে দেখে আয় তো মা ফিরে আসছে কী না। শিলটা আর ব্যবহার করলাম না বুঝলি, মা আসার আগেই জায়গাটা পরিস্কার করে ফেলতে হবেবলে সে পেঁয়াজ, আদা, ও রসুন নিয়ে এসে হঠাৎ স্বগতোক্তি করলো, “মরেছে গরম মশলাটা আবার কোথায় রেখে গেলাম”? আমি বললাম এখানেই তো ছিল। দেখা গেল উত্তেজনায়, অস্থিরতায়, মায়ের ফিরে আসার ভয়ে তাড়াতাড়ি করতে গিয়ে, সে পেঁয়াজ রসুন আনতে গিয়ে গরম মশলার ওপর দিয়েই হেঁটে গেছে। এখনও তার পায়ের তলায় গুপোর মতো বেশ কিছুটা গরম মশলা আটকে আছে। ও খুব ঘাবড়ে গিয়ে পায়ের তলা থেকে মশলাগুলো হাতে নিয়ে বললো, “এইরে দেরি হয়ে যাচ্ছে, আবার তৈরি করতে করতে মা এসে পড়বে, এগুলোই রান্নায় দিয়ে দেবো”? আমি আর কি বলি, বললামগরম মশলা দেবার দরকার নেইও খুব গম্ভীর হয়ে পাকা পাচক ঠাকুরের মতো কায়দায় উত্তর দিলো, “আরে ফাটা, গরম মশলা ছাড়া বক ভাজা হয় নাকি”?
পেঁয়াজ কেটে, আদা ও রসুন সেই আগের কায়দায় মাটিতে থেঁতো করে, সে নতুন করে আবার গরম মশলা বেটে ফেললো। এবার আবার গ্যাস জ্বেলে একটা পাত্রে একটু তেল ও সামান্য ঘি দিয়ে বসিয়ে দিয়ে, সিদ্ধ মাংসের টুকরোগুলো নুন ও আর সব উপকরণ দিয়ে নাড়তে শুরু করলো। অল্প সময়ের মধ্যেই রান্না শেষ। তিনজনে দ্রুত ফুঁ দিয়ে দিয়ে ঠান্ডা করে মাংস খেয়ে, আরও দ্রুত বাসনগুলো মেজে জায়গাটা পরিস্কার করে ফেলে যখন মিশন বক ভাজা সমাপ্ত হলো, তখন দেখা গেল, অনেক আগেই ওর অফিস যাওয়ার সময় পার হয়ে গেছে। ফলে ওর আর অফিস যাওয়া হলো না, আমারও টাকা তোলা হলো না। তবে একটাই শান্তি, বন্ধুর মা তখনও দোকান থেকে ফেরেননি, আর আমার দীর্ঘদিনের পাখির মাংস খাওয়ার মনোবাসনাও আজ পূর্ণ হলো।