গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

শনিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৮

সুদীপ ঘোষাল

ঘুঁটে পোড়ে


একবার তোর ছেলে নরেনের কথা ভাবলি না। দেহের খিদে মেটাবার জন্য বছর না ঘুরতেই আবার বিয়ে করলি। বন্ধুকে, রমেন বললো।
----
কি করবো বল।  সমাজে নোংরামি করতে আমার ভালো লাগে না।  মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি প্রশমন তো করতে হবে।  নকল সাধু হয়ে লোক ঠকাতে পারবো না। তাই আবার বিয়ে করলাম।
----
ভালো করেছো।  এবার সৎমার অত্যাচারে ছেলেটা ভু গবে।শুধু বাতেলা।  কালকে তোকে হাড়কাটা  গলিতে দেখলাম।  বিয়ে করেছিস তবু স্বভাব গেলো না।

----
এই একটু আস্তে কথা বল।  বৌ শুনতে পাবে।
---
ছি ছি ছি
 এই কথা বলে রমেন বেরিয়ে গেলো।
ছেলে নরেন কলেজ থেকে এসে বললো,বাবা পাঁচ হাজার টাকা লাগবে।  আমি কম্পিউটার কোর্সে ভর্তি হবো।
বাবা চুপ করে আছে।  সৎমা রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এসে বললো, একটা টাকাও পাবি না। আমাদের ভবিষ্যৎ আছে।তোকে আর পড়তে হবে না। নিজেরটা নিজে দেখে নে। তোর খাবার জোগাড় করতে পারবো না।  যা বেরো এখান থেকে। মরেও না আপদ।তারপর স্বামীর সামনেই অকথ্য গালাগালি শুরু করলো। স্বামী আসামির মতো চুপসে গেলো ভার্যার ভয়ে। 
ছেলে বাবাকে আবার বললো তার স্বপ্নের কথা। 
বাবা সমস্ত কথা শুনলো।উত্তর নেই। দ্বিতীয় ভার্যার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে অযোগ্য বাবা। বাবা চুপ করে মাথা নিচু করে রইলো। নরেন বেরিয়ে গেলে সৎমা বললো, বুঝলে বাঁচলাম আমরা। পরের ছেলে থাকলেই ঝামেলা। 
নরেন ঠিক করলো সে তার মৃত মায়ের কাছে যাবে। অপমানে তার বাহ্যজ্ঞান লুপ্ত হয়ে গেলো। সৎমার এই অপমান সে সহ্য করতে পারলো না। অন্ধকার তার মন অধিকার করে নিলো নিমেষে। আশা হেরে গেলো বিষাদের কাছে।  
  সে মেঘ হয়ে গেলো মায়ের খোঁজে।
খবরটা ছড়াতে সময় বেশি লাগলো না।অসতীর কানে খবরটা গেলো।  তার বদনে তখন গোপন গর্বে গোবরের হাসি...