অনিন্দ
বার বার টোকা দিয়েছিল মাধবীলতার মনের দরজায়।মাধবীলতা দরজা খোলেনি। প্রাচুর্য আর
সমৃদ্ধিতে ভরা ছিল তার মন। কেন খুলবে সে মনের দরজা! বয়েই গেছে!
বেশ
কয়েকদিন পর অনিন্দ সকালের ঈশ্বরকে সঙ্গে নিয়ে পার্কের গেটের মুখে মাধবীলতার মুখোমুখি।
আবার অনিন্দের অনুনয়। মাধবীলতা ব্যঙ্গের হাসি হেসে বলল,"
অপরাহ্নে এসো।"ভিখারী মন নিয়ে অনিন্দ হতবাক হয়ে ঈশ্বরের
দিকে তাকিয়ে রইল।
বেলা
গড়িয়ে গেছে। সময়ের স্রোতকে বুকের পাঁজরে
ভরে নিয়ে,অনিন্দ জীবনের পথটাকে ভাবনার জুতো দিয়ে মাড়িয়ে
মাড়িয়ে এগিয়ে চলছে কোনোক্রমে।
বেশ
কয়েকটা বছর কেটে গেছে। সকালের ঈশ্বরটা অপরাহ্নের পথ বেয়ে সন্ধ্যার মাটিকে ছুঁতে
যাচ্ছিল। অনিন্দ একবার বেখায়ালী মনে পার্কের দিকে তাকালো। দেখল,কে যেন তাকে ইশারাতে ডাকছে। অনিন্দ এগিয়ে গেল। সামনা সামনি গিয়ে হতবাক!
চিনেও যেন সে চিনতে পারছে না। প্রশ্ন করে বসে," কে
আপনি! " ভাঙা কন্ঠে উত্তর," আমি মাধবীলতা। আমায়
চিনতে পারছ না অনিন্দ! আজ আমি থ্যালাসেমিয়া গ্রস্ত অনিন্দ।" অনিন্দ যেন আকাশ
থেকে পড়ল! নিজের চোখকে সে বিশ্বাস করতে পারছে না। অনিন্দের চোখে বাদল মেঘের
ছায়া।ভাবনার কালো পাহাড়ে ঢাকতে চলেছে তার চিন্তাশক্তি। সেই সুশ্রী -সুন্দর -মহীয়সী
নারীর চেহারা,একটা সামান্য রোগ, খুলে
দিতে পারে তার মনের দরজাটাকে! অনিন্দ পাগলের মত জড়িয়ে ধরে মাধবীলতাকে। দু'চোখের অজস্র বারিধারায় সিক্ত হয়ে ওঠে অপরাহ্নের পার্কের মাটি। ঈশ্বর
ঘুমিয়ে যায় সন্ধ্যার অন্ধকারে।