গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

শনিবার, ২০ জানুয়ারী, ২০১৮

নীহার চক্রবর্তী

 মহা হোটেল


'ব্যাটাছেলেটা সেই সকালে মুখে কিছু না দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়েছে এখনো ফেরেনি আর তুই এত খেয়েও খাইখাই করিস ? ফিরুক তারপর খাবি ''
মার কথা শুনে কুণাল হেসে চটপট উত্তর দিলো,''আরে,আমিও তো ব্যাটাছেলে কি যে বল না ছাই ধুর...''
মা ওর কথা শুনে বেশ তেঁতে উঠলো
বলল,''তেমনই ব্যাটাছেলে তুই বাপের হোটেলে খাস পড়াশোনার তো লক্ষণ দেখি না কি যে হবে তোর কে জানে ''
কুণাল কথা বাড়াল না
মুচকি হেসে বলল,''ঠিক আছে অত কথা শুনতে চাই না আসল ব্যাটাছেলে ফিরুক তবে ''
''
দূর মুখের সামনে থেকে ''
মা বলতেই কুণাল ধা ঘর থেকে বাইরে
তার আধঘণ্টা পর
কুণাল দেখতে পেলো ওর বাবা গলিতে ঢুকেছে বাড়ি আসার জন্য দেখে এক ছুটে বাড়িতে ফিরে এলো
তারপর মাকে দেখতেই একচোট হেসে বলে উঠলো,''ব্যাটাছেলে বাড়ি আসছে গো এবার ভাত বাড়ার জন্য তৈরি হও ''
ওর মা শুনে স্বস্তির হাসি হাসলেও ওর কথা শুনে বেশ বিরক্ত হল
কুণালকে বলল,''সব বাবাকে বলছি অপেক্ষা কর একটু ''
''
ধুস...'' বলে হাসতে হাসতে কুণাল নিজের ঘরে ঢুকে গেলো
তা খেতে বসে কুণালের বাবা ওর মার মুখ থেকে সব শুনে হেসে প্রাত গড়িয়ে পড়লো বিষমও খেলো খুব জল খেয়ে সুস্থ হল সে  
মা খুব রেগে গিয়ে বলল তাকে,''তোমার জন্য ছেলেটা আবার যাবে ''
মজাদার মানুষ কুণালের বাবা
সে ফিক করে হেসে বলল তাকে,''কোথায় আর যাবে আবার বাড়িতেই ফিরে আসবে কিন্তু ব্যাটাছেলে মনে রেখো আমার মতো হতে একটু সময় লাগবে আর কি ''
সব শুনেছে কুণাল নিজের ঘরে বসে খেতে খেতে একা-একা মা-বাবার কথা শুনে হাসতে থাকে মনে মনে বাবার জয়ধ্বনি দেয়  
তবে কুণাল শুনেছে কিনা ওর মা তখন বুঝতে পারেনি বুঝল সেই সন্ধ্যায়
''আমার ব্যাটাছেলে বাড়ি ফিরেছে গো এবার কফি কর তিনজন মিলে জমিয়ে কফি পান করি ''
সন্ধ্যাবেলায় কুণালকে বাড়ি ফিরে আস্তে দেখে ওর বাবা একমুখ হেসে ওর মাকে বলে বাবার কথা শুনে কুণাল এক দৌড়ে ঘরে আসে
বাবাকে বলে,''জয় হোক তোমার মা আমাকে ব্যাটাছেলে ভাবতেই চায় না এর কোন মানে হয় ?''
মা তখন ওর দিকে কটমটে চোখে চেয়ে আছে বাবার সারা মুখে মজারু হাসি
কুণাল এবার বলে ওর বাবাকে মার দিকে এক পলক তাকিয়ে,''তুমি আমাকে ব্যাটাছেলে বলে স্বীকৃতি দিয়েছ আমি হেভি খুশী তাতে তবে এবার থেকে তোমার মতো ব্যাটাছেলে হওয়ার চেষ্টা করবো নিজের হোটেল বলেও কিছু থাকার দরকার তাই না ?''
বাবা শুনে হেসে মরে মা হাসছিল না শুরুতে সেই শেষে দুজনের এলোমেলো হাসি দেখে হেসেই ফেললো তার কারণেই বুঝি কফি আস্তে বেশী দেরী হল না  
কফিতে চুমুক দিতে দিতে বাবা কুণালকে বলল মিচকি-মিচকি হেসে,তোর হোটেলে আমরা কাজ পাবো তো ?''
বাবার কথা শুনে লজ্জায় সারা কুণাল লজ্জার কারণে টপাটপ বাবা-০মাকে প্রণাম করে বসলো