সবুজ সেবারও মাধ্যমিকে পাস করেনি ।
অথচ দেখে বোঝার উপায় নেই । ওর বাবা-মায়ের হতাশা দেখার পর ওর সঙ্গে পথে দেখা হল ।
বিষণ্ণ-মনে জিজ্ঞেস করলাম,''এবার কত ছেলে পাস করল । আর তুই কিনা...''
কোন ভ্রুক্ষেপ নেই ওর ।
প্রতিদিনের মতো স্বাভাবিক হাসি ছড়িয়ে বলল, ''কি আর বলি । এবারও হল না ।''
আমি ওকে জানালাম,''তোর বাবা কিন্তু বলেছে আর পড়াবে না ।''
এবারও দেখলাম বে-পরোয়া ভাব ওর ।
সবুজ দূরের আকাশে উড়ন্ত ঘুড়িটা লক্ষ্য করতে করতে বলল, ''ও আচ্ছা অনেক পড়া হল ।''
আমি হাসব, না কাঁদব বুঝতে পারলাম না ।
অথচ দেখে বোঝার উপায় নেই । ওর বাবা-মায়ের হতাশা দেখার পর ওর সঙ্গে পথে দেখা হল ।
বিষণ্ণ-মনে জিজ্ঞেস করলাম,''এবার কত ছেলে পাস করল । আর তুই কিনা...''
কোন ভ্রুক্ষেপ নেই ওর ।
প্রতিদিনের মতো স্বাভাবিক হাসি ছড়িয়ে বলল, ''কি আর বলি । এবারও হল না ।''
আমি ওকে জানালাম,''তোর বাবা কিন্তু বলেছে আর পড়াবে না ।''
এবারও দেখলাম বে-পরোয়া ভাব ওর ।
সবুজ দূরের আকাশে উড়ন্ত ঘুড়িটা লক্ষ্য করতে করতে বলল, ''ও আচ্ছা অনেক পড়া হল ।''
আমি হাসব, না কাঁদব বুঝতে পারলাম না ।
ঠিক পরেরদিন সবুজকে দেখলাম একটা
ভোঁ-কাট্টা ঘুড়ির পেছনে ছুটছে ।
এত গতি যে পড়েও যেতে পারে । ওর পেছনে দুটো বাচ্চা ছেলে ঢিলে প্যান্ট তুলতে তুলতে ছুটে যাচ্ছে । বেশী দূর ওকে যেতে হল না । ঘুড়িটা একটা লাইট-পোস্টের মাথায় আটকে গেল । অনেকক্ষণ মাজায় হাত দিয়ে সবুজ দাঁড়িয়ে থাকল ।
শুনলাম ও বাচ্চা দুটোকে বলছে,''ঝড়-বৃষ্টি না হলে আমি পেরে আনব ঘুড়িটা ।''
আমি আঁতকে ঊঠলাম ।
কাছে ডেকে বললাম,''খবরদার,এগারো হাজার ভোল্ট ।''
কি বুঝল কে জানে । ছোট বন্ধুদের সঙ্গে ঘুড়ির গল্প করতে করতে চলে গেল ।
এত গতি যে পড়েও যেতে পারে । ওর পেছনে দুটো বাচ্চা ছেলে ঢিলে প্যান্ট তুলতে তুলতে ছুটে যাচ্ছে । বেশী দূর ওকে যেতে হল না । ঘুড়িটা একটা লাইট-পোস্টের মাথায় আটকে গেল । অনেকক্ষণ মাজায় হাত দিয়ে সবুজ দাঁড়িয়ে থাকল ।
শুনলাম ও বাচ্চা দুটোকে বলছে,''ঝড়-বৃষ্টি না হলে আমি পেরে আনব ঘুড়িটা ।''
আমি আঁতকে ঊঠলাম ।
কাছে ডেকে বললাম,''খবরদার,এগারো হাজার ভোল্ট ।''
কি বুঝল কে জানে । ছোট বন্ধুদের সঙ্গে ঘুড়ির গল্প করতে করতে চলে গেল ।
এই ঘটনার পরের দিন আমি বাবার ব্যবসায়িক
কাজে কয়েকদিনের জন্য বাইরে যাই । মনের মধ্যে একটা ভয় ছিলই । যাবার আগে সবুজের
বাবাকে সতর্ক ক'রে যাই । এমন বাউল-ছেলে আর একটি
দেখিনি আমি ।
ফিরে এলাম কাজের শেষে ।
বেশ ভয় ছিল । ট্রেন থেকে সবুজের এক বাচ্চা বন্ধুর সঙ্গে দেখা। সবুজ সম্বন্ধে জানতে চাইলাম ।
ও চোখ বড় বড় ক'রে বলল, ''সবুজদাদা তো বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে ।''
আমি অবাক হলাম শুনে । বাড়িতে না ঢুকে সবুজদের বাড়িতে আগে গেলাম ।
বিষণ্ণ সবুজের বাবা জানাল, ''ছেলেটা যে কোথায় গেল, খুঁজে খুঁজে হয়রান । তুমি এসে পড়েছ ভালো হয়েছে । একটু দেখো ।''
আমি আশ্বস্ত ক'রে ফিরে এলাম । আসার পথে দেখি সেই লাইট-পোস্টে ঘুড়িটা ন্যাতার মতো ঝুলছে ।
বেশ ভয় ছিল । ট্রেন থেকে সবুজের এক বাচ্চা বন্ধুর সঙ্গে দেখা। সবুজ সম্বন্ধে জানতে চাইলাম ।
ও চোখ বড় বড় ক'রে বলল, ''সবুজদাদা তো বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে ।''
আমি অবাক হলাম শুনে । বাড়িতে না ঢুকে সবুজদের বাড়িতে আগে গেলাম ।
বিষণ্ণ সবুজের বাবা জানাল, ''ছেলেটা যে কোথায় গেল, খুঁজে খুঁজে হয়রান । তুমি এসে পড়েছ ভালো হয়েছে । একটু দেখো ।''
আমি আশ্বস্ত ক'রে ফিরে এলাম । আসার পথে দেখি সেই লাইট-পোস্টে ঘুড়িটা ন্যাতার মতো ঝুলছে ।
আমাদের গ্রামের থেকে আট মাইল দূরে
শিবানন্দপুর ।
বাবার এক মহাজনের বাড়িতে যেতে হ'ল দুই-একদিন পর । সেখানে সেদিন ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা ছিল । একটা বড় মাঠে বহু মানুষ মিলিত হয় । সেখানেই প্রতিযোগিতাটা হয় । একটু দূর থেকে দেখলাম একটা ছেলের হাতে বেশ কিছু ঘুড়ি । ছুটে বেড়াচ্ছে একবার এদিক, একবার ওদিক । আমি এগিয়ে যেতেই অবাক হ'লাম । এ যে আমাদের সবুজ ! এখানে কী ক'রে এল ও ? আমাকে দেখে একচোট হেসে নিল ও । কিন্তু সঙ্কোচের বালাই নেই ।
বাবার এক মহাজনের বাড়িতে যেতে হ'ল দুই-একদিন পর । সেখানে সেদিন ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা ছিল । একটা বড় মাঠে বহু মানুষ মিলিত হয় । সেখানেই প্রতিযোগিতাটা হয় । একটু দূর থেকে দেখলাম একটা ছেলের হাতে বেশ কিছু ঘুড়ি । ছুটে বেড়াচ্ছে একবার এদিক, একবার ওদিক । আমি এগিয়ে যেতেই অবাক হ'লাম । এ যে আমাদের সবুজ ! এখানে কী ক'রে এল ও ? আমাকে দেখে একচোট হেসে নিল ও । কিন্তু সঙ্কোচের বালাই নেই ।
আমি সবুজকে বললাম,
তুই এখানে ? আর তোর বাড়ির সবাই তোর
খোঁজে পাগল । তোর মাকে খুব কাঁদতে দেখে এলাম ।''
ভোঁ-কাট্টা ব'লে মহানন্দে সবুজ ছুটে গেল । এ কেমন ছেলেরে বাবা ! তবে আবার কাছে এল ।
সবুজ শুরু করল, ''আরে কাকু, আমি তো এখানে এসেছি প্রতিযোগিতায় । কাল শেষ হবে । পরশু দিন বাড়ি যাব । মাকে ব'লে দিও ।''
আমি জিজ্ঞেস করলাম, ''তোর এখানে কী লাভ,শুনি ?"
সবুজ অনাবিল হেসে জানাল,''প্রচুর ঘুড়ি পাব । বন্ধুদের জন্য নিয়ে যাব । কি মজা, না ব'ল ?'
ভোঁ-কাট্টা ব'লে মহানন্দে সবুজ ছুটে গেল । এ কেমন ছেলেরে বাবা ! তবে আবার কাছে এল ।
সবুজ শুরু করল, ''আরে কাকু, আমি তো এখানে এসেছি প্রতিযোগিতায় । কাল শেষ হবে । পরশু দিন বাড়ি যাব । মাকে ব'লে দিও ।''
আমি জিজ্ঞেস করলাম, ''তোর এখানে কী লাভ,শুনি ?"
সবুজ অনাবিল হেসে জানাল,''প্রচুর ঘুড়ি পাব । বন্ধুদের জন্য নিয়ে যাব । কি মজা, না ব'ল ?'
কথামতো সবুজ ফিরে এল সারাদেহ হলুদ হয়ে
সেদিনই ।
শোনা গেল, গাছের মগডাল থেকে ঘুড়ি নামাতে গিয়ে সে পড়ে গিয়ে মারা যায় । গ্রাম-জুড়ে শোকের পরিবেশ । আমি সবুজের বাবা-মাকে কীভাবে আর সান্ত্বনা দিই । আমিও তখন হাপুস নয়নে কাঁদছি ।
শোনা গেল, গাছের মগডাল থেকে ঘুড়ি নামাতে গিয়ে সে পড়ে গিয়ে মারা যায় । গ্রাম-জুড়ে শোকের পরিবেশ । আমি সবুজের বাবা-মাকে কীভাবে আর সান্ত্বনা দিই । আমিও তখন হাপুস নয়নে কাঁদছি ।
পরেরদিন কিন্তু সেই লাইট-পোস্টে ঝোলা
ঘুড়িটা আর দেখা গেল না ।