গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

শুক্রবার, ২৬ মে, ২০১৭

হরপ্রসাদ রায়

অব্যক্ত

রবিবারের ট্রেনের কামরায় হঠাৎ দেখা কলেজমেট অর্ণব আর অন্বেষার। সময়টা হঠাৎ একযুগ পিছিয়ে সামনে এসে দাঁড়ায় যেন। নীরবতার কয়েকটা মুহূর্তকে ব্যস্ততায় ডিঙিয়ে অন্বেষাই প্রথম কথা বলে,
-তুমি?
-হ্যাঁ। তুমিও তো।
 
হাসে অর্ণব।
- একা?
-একাই।
বলে, আবার হাসে অর্ণব। অন্বেষাকে কিছু প্রশ্ন করার আগেই অন্বেষার প্রশ্ন
-কেন, বিয়ে করনি?
-না, পছন্দের কাউকে আর পাইনি তো! অর্ণব আবার হাসে।
-'আর' মানে! আগে তেমন কেউ ছিল নাকি?
 
ঘনিষ্ঠ কৌতূহলী চোখে তাকায় করে অন্বেষা।
-ছিল তো।
 
কে?
 
গলায় খননের গাম্ভীর্য।
-তুমিও চেনো তাকে।
 
কে?
উদ্গ্রীব কণ্ঠস্বর অন্বেষার।
 
-- ঠিক তোমার মতই দেখতে,
 
কথা কেড়ে নিয়ে অন্বেষা বলে
-ধ্যাৎ, মজা করছ।
-মনটাও একদম তোমার মত। আসক্তিহীন গলায় উত্তর অর্ণবের।
-তারপর?
 
-ব্যস্! বলা হয়নি।
 
ঠোঁটের কোনায় হাসি টেনে রাখে অর্ণব।
কয়েকটা মুহূর্ত কারো ইচ্ছে ছাড়াই যেন ঠোঁটে তর্জনী রেখে দেয়।
-তুমি? 
-বেশ আছি
অন্বেষা বলে।
-মানে?
-ওই তো, ভাল আছি! তাই বললাম।
-তোমার স্বামী?
-হয়নি!
ঠোঁটের কোণায় অভিমানের হাসি এঁকে দেয়।
-মানে?
 
-বলা হয়নি আমারও।
একটা ঝটকা দিয়ে গাড়ীটা থেমে যায়।
-ওহ্! বালিগঞ্জ? নামছি।
নেমে গেল অন্বেষা।
অর্ণব যাদবপুর নামবে। একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকা অন্বেষাকে জানালার পিছনে ফেলে গতি নিল ট্রেনটা---
চলছে সেই স্বাভাবিক ছন্দেই।