সকালে
কোনোক্রমে নাকে মুখে গুঁজে দৌড়ে স্টপে এসেই দেখল একটা অটো বেরিয়ে যাচ্ছে। এক হাতে
অফিসব্যাগ সামলে অন্য হাত তুলে চিৎকার করে অটোটা থামাল অনীশ। পড়ি কি মরি করে
সামনের সিটে নিজেকে গুঁজে দিতেই অটোওয়ালা ধাঁই করে ছেড়ে দিয়েই স্পিড বাড়িয়ে দিল।
আর ওরকম বিদঘুটে অবস্থায় শার্টের পকেটে
ঝনঝন করে বেজে উঠলো মোবাইলটা।
কোনো রকমে সামান্য কাত হয়ে যন্ত্রটাকে
পকেট থেকে বার করে রিসিভ করল।
শুনতে পেলো ও পাশ থেকে ভয়ঙ্কর চিৎকৃত গলায়
সাইমা বলছে,
"এক্ষুনি তোমার ফেসবুক পাসওয়ার্ড
দাও,এক্ষুনি।"
ফেসবুক!
সকালের অফিস যাওয়ার ব্যস্ততায় রাতের এন্টারটেইনিং জগতের কথা মাথায় ছিলনা অনীশের।
দিনের বেলায় ও ওইসব ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ্ করার সময়
পায় না। ওই রাত্রেই কয়েক ঘন্টা। কিন্তু সাইমার হলো টা কি? গতরাতে ইনবক্সে বেশ ঝগড়া হয়েছে ওর সঙ্গে। সাইমার অভিযোগ অনীশ নাকি
আজকাল সেরকম রেসপন্স করছে না। অন্য মেয়ের দিকে ঢলেছে। আজব ব্যাপার সব। ভাবলো অনীশ।
"কি
হলো? তুমি দেবে কি না? উত্তর
দিচ্ছ না যে? এক্ষুনি তোমার ফেসবুক ইউজার আইডি আর
পাসওয়ার্ড দাও বলছি।"
ফের
চিৎকার করে বললো সাইমা। এত জোরে বললো যে স্পিকার ঝনঝন করে উঠলো। মনে হলো পাশের লোক
সব শুনতে পাচ্ছে।
চাপা গলায় ও বললো,এখন কি করবে? আমি তো অফিস যাচ্ছি। রাতে দেব।
কিন্তু কি করবে ওটা নিয়ে?
কথা শেষ করার আগেই বস্তির ভাষায় আবার
চিৎকার করে উঠলো সাইমা,ঢ্যামনামো ছাড়। তুমি কি
মাল সেটা আমি বুঝে গেছি। এক্ষুনি দাও পাসওয়ার্ড। আমি তোমার ইনবক্স চেক করব। দেবে?
-কিন্তু কি পাবে ওখানে? কয়েকটা হাই হ্যালো আর তোমার সঙ্গে কনভার্সেশন। ব্যস আর...
-শোনো, তুমি
যদি না দাও দু মিনিটের মধ্যে, তাহলে আমি ওপেন স্টেটাস দেব
যে তুমি সব মেয়েদের সঙ্গে শুয়ে বেড়াও...
মুখটা তেঁতো বিস্বাদ হয়ে গেল অনীশের। আর
একটাও কথা না বলে কলটা কেটে দিয়ে ফোন ক্রিয়েট মেসেজ বার করে টাইপ করতে লাগলো,
অন ডট ইশ ডট...। শেষে লিখল,দিলাম। যা
দেখার দেখে নাও। কিন্তু আর কোনোদিন ফোন বা মেসেজ কোরোনা। গুডবাই।
অফিসের চাপে ব্যাপারটা ভুলেই গেছিল সে।
রাতে বাড়ি ফিরে ফ্রেশ হয়ে নেট খুলতেই অবাক।
কয়েকজন ভালো মহিলা বন্ধু,
যাঁরা কখনো ইনবক্সে আসেন না,তাঁরা মেসেজ
করেছেন,
"আমাকে আনফ্রেন্ড করলেন কেন?"