গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৪

বিলাল হোসেন


২টি অনুগল্প

ঘোষণা

এই শহর কেঁপে উঠেছেভয়েমানুষেরা এখন কোথায় লুকাবে , কোথায় গেলে অদৃশ্য হতে পারবে ? কেউ কারো মুখের দিকে তাকাতে পারছে নাচোখে চোখ রাখতে পারছে নামা ছেলের দিকেবাবা মেয়ের দিকেবোন ভাইয়ের দিকেআত্মীয় অনাআত্মীয়ের দিকেঘর বাইরের দিকেসমাজ রাষ্ট্রের দিকেতাকাতে পারছে নাসর্বত্র অসস্থি আর আতংকরাজউকে আতংকপ্রতিটি মন্ত্রণালয়ে আতংকসবার চোখ আনতকেউ চোখ উপরের দিকে তুলছে নাযেন চোখ তোলা যায় না , কেউ চোখ তুলে তাকায়নি কোনদিনশুধু ফিসফাস শব্দশুধু কানাঘুষাঘরে ঘরেমসজিদ মন্দির প্যাগোডা সিনাগগেবিচারালয় ইশকুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়েহাসপাতালেকওমি -আলীয়ায়দরগায় খানকায়সবাই নিচু স্বরে কথা বলছেকী হবে , কী হবে ? সবাই অস্থির হয়ে উঠেছেসবাইকে অস্থির করে একটি ঘোষণা তুলেছেশহরের প্রতিটি দেয়াল ঘোষণা দিয়েছে : - পর্যন্ত যেসব কথা তারা শুনেছে , সব প্রকাশ করে দেবেতারা আরও বলেছেদেয়ালের যেমন কান আছে , মুখও আছেসবাই বুঝুক

পড়ে যাবার পরে

নয় তলার ছাদের উপরে কোমর অব্দি দেয়াল , সেখান থেকে সামান্য ঝুঁকে নিচের পথঘাট দেখতে গিয়ে পড়ে রফিকুজ্জামানের মেরুদন্ড ভেঙে কয়েকটি টুকরা হয়ে গেলবুকের খাঁচা ভাঙলবাম ডান পা যা হওয়ার তাই হলছাতু ছাতুবলা বাহুল্য , এরপর সোজা হাসপাতালপুরো বডি ব্যান্ডেজমা কাঁদলবাবা কাঁদলভাই বোনেরা কাঁদলঅফিসের কলিগ মন খারাপ করলফ্রন্ট ডেস্কের মেয়েটি খুব সাবধানেযেন কাজল মুছে না যায়এমন ভাবে টিস্যু কাগজে চোখের পানি মুছে নতুন জয়েন করা ছেলেটির দিকে মন দিলতারপর অপারেশনের পর অপারেশন হলআবার অপারেশন হলহাসপাতাল থেকে হাসপাতালে রেফার
হতে থাকলকয়েক মাস কেটে যাবার পর কয়েকটি বছর কাটলস্থায়ীভাবে শয্যা নিল রফিকুজ্জামাননিনিতা এখন বাপের বাড়ি থাকেমঞ্জুরীও মার সাথেস্কুলে পড়েকানাঘুষা শুনতে পাওয়া যায়মঞ্জুরীর পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছে প্রাক্তন চাচাত ভাইবর্তমানের প্রেমনয় তলার ছাদের কিনার ঘেঁষে দাঁড়িয়ে ভাবছিল রফিকুজ্জামানএইসব