বাঘবন্দী
গ্রামের ছেলে রমণীমোহন। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া চিত্রা নদীতে বোশেখ মাসে হাঁটু জল থাকলেও কিন্তু জোয়ারের সময় আজকাল অল্পস্বল্প জল ফুঁলে ওঠে। তা দূর থেকে ঠাহর করা না গেলেও নদীর পাশের লোকজন তা কিন্তু ঠাহর করতে পারে। ভাটার সময় আবার জল নেমে যায়।চোত-বোশেখ এলেই ছোট্ট ছোট্ট ছেলেমেয়েরা নদীর হাঁটু জলে দাপাদাপি করে । রমণীমোহন সাত ক্লাসে পড়েও ছোটখাট নাদুসনদুস চেহারার জন্যে সে সহজেই তার চেয়ে ছোটছোট ছেলমেয়েদের সাথে মিশে যেতে পারে। প্রাইমারী স্কুলে পড়া ছেলমেয়েদের সাথে খেলাধুলো করায় তার সহপাঠীরা তাকে হাসিঠাট্টা করে নাজেহাল করতে ছাড়ে না। তবুও রমণীমোহন গরমকাল এলে বাচ্চা ছেলমেয়েদের সাথে চিত্রা নদীর জলে খেলায় মেতে উঠতে পিছপা হয় না।
শ্রাবণ মাস এলে চিত্র নদীর এ কূল ও কূল জলে টইটুম্পুর হয়ে ওঠে। চুপসে যাওয়া যৌবন হারানো নারী যেন আবার টসটসে যৌবনবতী হয়ে উঠে। বর্ষাকালে চিত্র নদীতে আবার নৌকা ভাসে। পাল তুলে পানসি নৌকা চলাচল করে। সে সময় রমণীমোহনদের হিজলতলার ঘাট থেকে যাত্রীরা পানসি নৌকায় আসা যাওয়া করে। নদীর ঘাটের উপরে রমণীমোহনদের বাড়ি। রুমের জানালা দিয়ে সে নদীর দৃশ্য দেখতে পায়।হিজলতলার ঘাট থেকে নারী পুরুষরা বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে নৌকায় ওঠে কিংবা নৌকা থেকে নামে।
গ্রামের মধ্যে চৌধুরী বাড়ির নামডাক এখনো অনেক। এক সময় চৌধুরী পরিবার ছিল
একান্নবর্তী । সে আমল থেকেই এ বাড়ির ছেলেরা বাইরে চাকরীবাকরী করে আসছে। ব্রিটিশ আমলে এ বাড়ির ছেলেরা কলকাতায় চাকরী করতো। দেশভাগের পর চৌধুরী বাড়ির বড় তরফ কলকাতায় চলে গেলেও চৌধুরী বাড়ির জৌলুস কোন অংশেও কমে নি। এ বাড়ির ছোট তরফের ছেলে রমণীমোহন। ওরা দু’ভাই , এক বোন । দিদি চিত্রা সবার বড়। নদীর নামের সাথে মিলিয়ে দিদির নাম নাকি রেখেছিলেন ঠাকুমা। একাত্তরের যুদ্ধের আগেই ঠাকুমা মারা যান, আর রমণীমোহনের জন্ম হয় একাত্তরে শ্মরণার্থী্ ক্যাম্পে। তার নাম রমণীমোহন কে রেখেছিল তা সে জানে না। তবে তার ঠাকুমা রাখেন নি এটা নিশ্চিত।
কিশোর রমণীমোহন স্কুলের শেষ ক্লাসে উঠার পর তার নামের মাহাত্ম বুঝতে পারে। পন্ডিত মশাই বয়স্ক মানুষ এবং রসিকও বটে। অনেকের বাবা,কাকা,দাদা ও দিদিরা এককালে তার কাছে পড়েছে। তার রিটায়ার করতে বছর খানেক বাকি আছে মাত্র। ক্লাসের ছেলেমেয়েরা তার নাতিনাতনি বয়সী। তাই তিনি প্রায় প্রায়ই তাদের সাথে হাসিঠাট্টা করেন।
একদিন হিন্দুধর্মের ক্লাসে পন্ডিত মশাই দশকর্ম্ অধ্যায় পড়াতে গিয়ে তিনি তার ক্লাসের ছেলমেয়েদের নামের ব্যাখ্যা করতে থাকেন। ওই ক্লাসের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অর্ধেক ছেলে আর অর্ধেক মেয়ে।
পন্ডিত মশাই বললেন,‘ শিশুদের নামকরণ অতি গুরুত্বপূর্ণ্ বিষয়। যদিও নাম মানুষকে বড় করে না। স্বভাব চরিত্র, আচার আচরণ ও ভাল কাজের দ্বারা মানুষের নামের মাহাত্ম প্রকাশ পায়। তোমরা তোমাদের নাম থেকে----’
পন্ডিত মশাইয়ের কথা শেষ করার আগেই রমণীমোহন বলে, ‘ আমাদের প্রশান্তের নাম অশান্ত হলে ভাল হতো, তাই না পন্তিত মশাই?’ রমণীমোহনের কথায় প্রশান্ত তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে। মেয়েরা রমণীমোহনের কথায় খুশি হয়। কারণ প্রশান্ত মাঝে মধ্যেই তাদেরকে আজেবাজে কথা বলে বিরক্ত করে। সত্যি সত্যি তাদের প্রশান্ত দুরন্ত স্বভাবের ছেলে।তাদের ক্লাসের মেয়েদের মধ্যে সাবিত্রী, মুক্তি আর শাহানা সবচেয়ে ভাল ছাত্রী। ছেলেদের মধ্যে রমণীমোহন, শাহরিয়ার ও শাহীন সবচেয়ে ভাল। লেখাপড়া, খেলাধুলো, গানবাজনায় এরাই বরাবরই কৃতিত্ব দেখিয়ে আসছে। মেয়েদের মধ্যেও দু’একজন বাচাল স্বভাবের হলেও তারা পড়াশোনায় ভাল। পন্ডিত মশাইযযর ক্লাসে তাদের মধ্য থেকে শিবানী পন্ডিত মশাইকে প্রশ্ন করে,‘ রমণীমোহন নামটা খুব সুন্দর , তাই না,পন্ডিত স্যার?’ শিবানীর কথা শুনে রমণমোহন কার প্রতি কটাক্ষ করে। ক্লাসে সোরগোল উঠলে পন্ডিত মশাই সবাইকে শান্ত করার চেষ্টা করে বলেন,‘ নামের কিছু শব্দের সাথে বিশেষণ যোগ না করলে নামের মানে প্রকাশ পায় না। যেমন ধর কোন পুরুষছেলের নাম রাখা হতে পারে না। হবে রাধাকান্ত , যার অর্থ্ দাঁড়ায় রাধার সখা বা রাধার বন্ধু। ঠিক তেমনই কোন পুরুষ ছেলের নাম রমণী রাখা যায় না। কারণ রমণী শব্দের অর্থ্ সুন্দরী নারী, মোহন শব্দের অর্থ্ মুগ্ধকারী বা চিত্তহারী। তাহলে যৌগিক শব্দ রমণীমোহনের অর্থ্ দাঁড়াল সুন্দরী নারীর চিত্তহারী বা মুগ্ধকারী।’ পন্ডিত মশাইয়ের কথা শুনে শিবাণীর মতো সুন্দরী মেয়েরা হেসে উঠে। অন্যদিকে, সুন্দর চেহারার রমণীমোহন যেন লজ্জায় রাঙা হয়ে যায়।
এক সময় সে ভাবল,কেন তার বাবা মা তার এ ধরনের নাম রেখেছেন। তারপর থেকে দুষ্ট ছেলেরা তাকে নিয়ে কত রকমের যে হাসিঠাট্টা শুরু করল। এমন কি তার নাম নিয়ে মেয়েরা পর্য্ন্ত আড়ালে আবডালে তার নাম নিয়ে হাসিঠাট্টা করতে থাকল। মেয়েদের মধ্যে মুক্তি সবচেয়ে ভাল ছাত্রী। রমণীমোহন মেধাবী ও সুশ্রীমান হওয়ায় মুক্তির সাথে তার সম্পর্ক্ মধুর । সে রমণীমোহনকে সমীহ করে আসছে বরাবরই। তাদের বাড়ি পাশাপাশি, আর রমণীমোহন তার দূর সম্পর্কের দাদা হয়। মুক্তির মা তাকে বলেছিল,‘ রমণীমোহন তোর থেকে সাত মাসের বড় কিন্তু । ওকে তুই দা্দা বলে ডাকবি। তোদের দু’জনের জন্মই পশ্চিম বাংলার ধুবুলিয়া শ্মরণার্থী ক্যাম্পে। ওর জন্ম হয় একাত্তরের মে মাসে, আর তোর জন্ম হয় ষোলই ডিসেম্বর বিজয় দিবসের দু’দিন পরে। তাই আমরা তোর নাম রাখলাম মুক্তি।’ সেই মুক্তি একদিন রমণীমোহনকে নিভৃতে পেয়ে বলে বলল, ‘ দাদা, তোর নামটা রমণীমোহন কে রেখেছিল রে? আমার নাম মুক্তি হলে তোর নাম হওয়া উচিত ছিল বিপ্লব।’ মুক্তি প্রশ্নের উত্তর দিতে তার ইচ্ছে হয় নি।
বাড়ির ভাত খেয়ে স্থানীয় কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে স্টার নম্বর পেয়ে আই,এসসি পাশ করার পর ঢাকা ভার্সিটিতে কেমিস্ট্রিতে অনার্স্ নিয়ে আর মুক্তি রাজশাহী মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস এ ভর্তি হল। মুক্তি ভেবেছিল রমণীমোহনও ডাক্তারী পড়বে। কিন্তু সে ওপথ মাড়ায় নি।
বড়দা সুপ্রিয় ঢাকার বসুন্ধরাতে ফ্লাট কেনায় রমণীমোহনের সুবিধাই হয়। তার বড়দা একটা মাল্টিন্যাশনাল এন্টারপ্রাইজের সিইও। তার এক ছেলে,
এক মেয়ে।দাদার গাড়ি ও নিজস্ব ড্রাইভার থাকলেও রমণীমোহনের বৌদিকে ছেলেমেয়ের স্কুলে আনা নেয়া করতে হয়।যদিও ওদের স্কুলে আনা নেয়ার জন্য দাদা যথাসময়ে গাড়ি পাঠায়। রমণীমোহন আসায় বৌদির ধকল অনেকটা লাঘব হয়। রমণীমোহন আসায় বড়দাও স্বস্তিবোধ করে। তাকে প্রায় অফিসের কাজে দেশের বাইরে যেতে হয়। বাসায় কোন পুরুষ মানুষ না থাকায় বাইরে গিয়ে সুপ্রিয়কে অস্বস্তিতে থাকতে হয়। বসুন্ধরার মুন গার্ডেন ম্যানসনের পাঁচতলার ফ্লাটের পুরোটই দাদার। ফ্লাটের ফাস্ট ব্লকে তারা নিজেরা থাকে। ওই ফ্লাটের সেকেন্ড ব্লকে নি:সন্তান এক দম্পতি তাদের ভাড়াটে। স্বামী ও স্ত্রীর ছোট সংসারে ছেলেপুলে না থাকায় তাদের দু:খের অন্ত নেই। রমণীমোহন ওদের সম্বন্ধে বৌদির কাছ থেকে এ সব কথা জেনেছিল।
লিফট থেকে প্রথম একজন অপরিচিত মহিলাকে তাদের পাঁচতলায় নামতে দেখল রমণীমোহন। বৌদি বলেছিল ভদ্রমহিলার বয়স পয়ত্রিশের মত হবে, আর তার স্বামীর বয়স ষাটের কাছাকাছি। তার স্বামী কুমারস্বামী রাজন একটা বিদেশী ফার্মের চাকুরীর সুবাদে ঢাকায় অবস্থিত অফিসে সাউথ রিজিয়নের সিইও হয়ে এসেছেন । কুমারস্বামী রাজনের পৈত্রিক আবাস দক্ষিণ ভারতে হলেও ছোটবেলা থেকে কলকাতায় মানুষ। স্ত্রী কমলিনী কলকাতার বাঙালি মেয়ে।সে ভাবে, এ মহিলাটি অবশ্যই সেকেন্ড ব্লকের বাসিন্দা নয়। কারণ তাকে দেখে তো পঁচিশ বছরের বেশি মনে হয় না! তার মনে কেন যেন মহিলাটি সম্বন্ধে কৌতূহল দেখা দেয়।
লিফট থেকে মহিলাটি তার সাথেই পাঁচতলায নামে।লিফট থেকে বের হয়ে আসার সময় তাদের চোখাচোখি হলেও কেউ কারো সাথে কথা না বললেও কিন্তু মহিলাটি রমনীমোহনের আপাদমস্তকের প্রতি দৃষ্টিপাত করে।এটা দেখে সে ভাবে, তার কলেজের বন্ধুরা ঠিকই বলত, তার প্রতি চোখ পড়লে কোন মহিলাই তার দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিতে পারে না। মহিলাটিও কিন্তু কম সুন্দরী নয়। চেহারা বাঙালির মত হলেও পোশাকআশাকে কিন্তু বাঙালির মত নয়। পরনে চুরিদার পাজামা। গায়ে প্রায় হাঁটু অব্দি লম্বা সবুজ রঙের আটোসাটো জামার উপরে পাতলা ফিনফিনে কাপড়ের শর্ট্ জ্যাকেট। লাল রঙের একটা স্কার্ফ্ গলায় জড়ানো। উন্নত স্তনদুটো ফিনফিনে কাপড়ের জ্যাকেট ভেদ করে উঁকি দেয়ায় রমণীমোহনের চোখ সেদিকে পড়ে। ভদ্রমহিলা সত্যি সত্যি নজরকাড়ার মত সুন্দরী। রমণীমোহন মহিলাটির দিক থেকে নজর ফিরিয়ে নিজেদের ফ্লাটের দিকে হনহন করে হাঁটতে থাকে।মহিলাটি কিন্তু মন্ত্রমুগ্ধের মত রমণীমোহন যেদিকে যায় সেদিকের পানে চেয়ে থাকে।
রমণীমোহন তার রুমের অ্যাটাচ বাথ থেকে হাত মুখে জল দিয়ে ফিরে এসে বিছানায় শুয়ে একটু রিফ্রেস হয়ে ডাইনিং রুমে যাবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়। কেন যেন একটু আগে দেখা মহিলাটির কথা মনের কোণে ভেসে উঠছে তা সে ভেবে পায় না। সে ভাবে, মহিলাটি হয়ত পাশের ব্লকের গেস্ট হবে। বৌদিকে জিজ্ঞেস করলে ভদ্রমহিলার পরিচয় পাওয়া যেতে পারে। একটু বিশ্রাম করে সে ডাইনিংরুমের দিকে পা বাড়ায়। ডান দিকের সেকেন্ড ব্লকের দিকে তাকিয়ে লিফট খেকে নামা ভদ্রমহিলাটিকে লালটুকটুকে শাড়ি পরে ব্যালকোনীতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তার খটকা লাগে। বৌদি বলেছিল তাদের ফ্লাটের সেকেন্ড ব্লকের কুমারস্বামী রাজনের স্ত্রীর বয়স পঁয়ত্রিশের মত হবে। তাহলে বছর পঁচিশেক বয়সের এই মহিলাটি কে?
রমণীমোহন ডাইনিংরুমে ঢোকার পরপরই ব্যালকোনীতে দাঁড়িয়ে থাকা এক সাথে লিফটে থেকে নামা মহিলাটিকে গলা ছেড়ে রবীন্দ্র সঙ্গীতের কলি--- ‘ মুখপানে চেয়ে দেখি, ভয় হয় মনে--- ফিরেছে কি ফেরে নাই বুঝি কেমনে। আসন দিয়েছি পাতি----’ গাইতে গাইতে ডাইনিং রুমে ঢুকতে দেখে রমণীমোহন তো অবাক! ডাইনিং টেবিলে খাবার সাজাতে সাজাতে বৌদি চোখ না তুলেই বলে উঠে, ‘ কুমু বৌদি, ফিরেছে কি ফেরে নাই এখনো বুঝতে পার নি?’ সে তার দেওর রমণীমোহনের দিকে তাকিয়ে বলে ,‘ এদিকে তাকিয়ে দেখ নাগরটি ফিরেছে কি ফেরে নাই।’ বৌদির কথা শুনে রমণীমোহনের মুখটা লজ্জায় রাঙা হয়ে উঠে। বৌদি তাকে নিয়ে প্রায় প্রায়ই হাসিঠাট্টা করে , তাইবলে কি একজন অপরিচিত মহিলার সামনে! দু’জন কেতাদুরস্ত মহিলার সামনে তার মুখ থেকে কথা না সরলেও সে ভাবে, তাহলে এই সুন্দরী মহিলাটিই কুমারস্বামী রাজনের স্ত্রী কমলিনী, সাবিত্রী বৌদি যাকে কুমু বৌদি বলে সম্বোধন করছে।
‘ তাহলে এই তোমার সেই নাগর !’ গান থামিয়ে মহিলাটি সাবিত্রী বৌদিকে বলে। ‘ বরটার সাথে ফাওটিও তো ভালই পেয়েছ। লাজুক লাজুক চেহারার তোমার ফাওটি কিন্তু চোরের মত মেয়েদের দিকে তাকাতে ওস্তাদ।’ মহিলাটির কথার ফাঁকে রমণীমোহন তার দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারে কথার বলার সময় মহিলাটির মুখে ঢোল পড়ে। ক্ষণিকের মধ্যে তার সহপাঠিনী শিবানীর মুখটা তার মনের কোণে ভেসে উঠে। কথা বলার সময় ওর মুখেও ঢোল পড়ত। একদিন শিবানীকে নিভৃতে পেয়ে সে তাকে বলেছিল, ‘
কথা বলার সময় গালে ডোল পড়লে মেয়েদের খুব সুন্দর দেখায়।’ তার কথা শুনে শিবানী শুধু মাত্র মুচকি মুচকি হেসেছিল।
ক্ষণিকের মধ্যে রমণীমোহন বর্তমানে ফিরে আসে। বৌদি তার সাথে কুমু বৌদির পরিচয় করিয়ে দেয়। ‘ এ হচ্ছে কুমার স্বামী রাজনের বেটার হাফ কমলিনী রাজন। বাঙালি বাড়ির মেয়ে কমলিনী কুমু নামে পরিচিত হওয়াটাই স্বাভাবিক, তাই না কুমু বৌদি?’ সাবিত্রী বৌদি কথা থামিয়ে দেওরটির দিকে তাকিয়ে আবার বলতে থাকে, ‘ কুমু বৌদি, এ হচ্ছে সেই রমণীমোহন, যার কথা তোমাকে প্রায় প্রায়ই বলি। তুমি বালায় এম.এ. পাশ করেছ যখন, তখন রমলীমোহন শব্দের অর্থ্: সুন্দর নারীর চিত্তহারী বা মুগ্ধকারী পুরুষ, তাতো তুমি জানই।’
‘ তবেতো্ ও তোমার চিত্তহরণ করে বসেই আছে!’
‘ না ভাই কুমু, ও করবে আমার চিত্তহরণ ! তাহলেই হয়েছে
!’
‘ লিফট থেকে একসাথে নামার পর আমার দিকে একবার মাত্র তোমার রমণমোহন ঠারে ঠারে চেয়ে ওখান থেকে কেটে পড়ল। তুমি ভাই , মুগ্ধ না হলেও আমি কিন্তু ওকে দেখে কুপোকাত !’