ইলিশ
সবসময় বর্ষা এলে ইলিশের গন্ধ পাওয়া যেত সুকোমল বাবুর মুখে । সেই কবেকার ছেড়ে আসা ঢাকা বিক্রমপুরের
ধীপুরগ্রাম । নদী পাড়ে দাঁড়ালেই জেলেরা ছুঁড়ে দিত পাঁচআনার পাঁচটি কিলো সাইজের ইলিশ । আর সেই ইলিশের কি তেজ ! কি ঝাঁপ ! ইলিশ মাছের গন্ধে জিবেতে জল আসে । সেই পূর্ব বাংলা ছেড়ে পশ্চিমবাংলার খখন্ড নিকটবর্তী বরাকরের বাজারে যা পাওয়া যায় তা চালানি । কুলটি বাণীতলায়ও সেই বরফ ঢাকা মাছ বেশি টাকা দিয়ে নিতে সত্যিই গায়ে লাগে
। বিড়ালও আসে না। সর্ষে
বাটাও আজ রেডিমেড ।
সুকোমল বাবু ইলিশ খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন । লোককে বলেন , দাঁতের
সমস্যা , গ্যাসট্রিক , হার্টের
ট্রাবল । কিন্তু শুভানুধ্যায়ীরা বুঝে যান ধীপুর তাকে ছাড়ছে না। একদিন বাবলার মা নেমতন্ন করে এলেন । বারাসাতের হৃদয়পুরের সুকান্ত পল্লীতে রিটায়ারমেন্টের পরে বাড়ি করেছেন সুকোমলবাবু । বাবলার মার অনুরোধ ফেলতে পারলেন না। কলাপাতায়
সাদা ধবধবে ভাত। ভাজা মুগের ডাল । শুক্তো । আলুভাজা । কচুশাক নারকেল
দিয়ে ইলিশের মাথা । আর বড়ো
বড়ো ইলিশ মাছের পিস্। সর্ষে ভাপা ।
খাবেন কি! কাঁদছেন সুকোমল
বাবু। বাবলার মা পাখার বাতাস
করছেন । জিজ্ঞেস করছেন , - শরীর
খারাপ
লাগছে দাদা , কমিয়ে দেব! ধীপুরের
গন্ধে সুকোমল বাবু বিভোর তার আঙুল গুলো ক্রমশ ডুবে যাচ্ছে ভাতের গর্তে । শুক্তোডালের পর ফিরে যাচ্ছেন তিনি সেই ইলিশেই আর গন্ধ ছড়িয়ে যাচ্ছে সেই খাওয়ায়
।