মৌমিতা বিছানায় উবু হয়ে
ফেসবুক ঘাঁটছিল।তার বয়ফ্রেণ্ড ঝটকা ঘরে ঢুকল।বলল -প্রোফাইল থেকে তোর পিক-টা সরা।
আবদারি গলায় মৌমিতা বলে -
কেনওওওও ! থাক নারে !ওটা তো কবেকার তেরো চোদ্দর পিক।তাতেও তোর জ্বালা !
তার শোয়ার ধারে শরীর ফেলে
বয়ফ্রেণ্ড ,মৌমিতার মোবাইলটা চিলতুলে নিল প্লাস প্রো-পিক-টা চেঞ্জ
করে একটা যাহোক স্কেচ ডাউনলোড করে সেঁটে রেহাই দিল।
দু-চারদিন বাদে আবার হাঁপিয়ে দৌড়ে মুখ কালো জাম করে বয়ফ্রেণ্ড
এল।মৌমিতার মা-বাবার সামনেই গোঁসার ঢেউ ছুটিয়ে বলল - তোর ফ্রেণ্ডলিস্ট থেকে এখুনি লম্বুটাকে ব্লক কর।
কারণটা আন্দাজ করল
মৌমিতা।ইদানিং ভদ্রলোক তার ওয়ালে একটু বেশিই চলাফেরা করছে।
মা-বাবাও সাপোর্ট করল হবু-কে।মোবাইলটা কাড়তে যেতেই মৌমিতা বলল -
এতোটা দরকার নেই।আনফ্রেণ্ড করে দিচ্ছি।বলে সবার সামনে আনফ্রেণ্ড করল লম্বুকে।
বয়ফ্রেণ্ড মৌমিতার
ফেবু-পাশওয়ার্ড আদায়ে গোঁ ধরে গুম হয়ে থাকতেই,উল্টোপাল্টা
একটা কোড বলে সে রেহাই পেল।
রাতে হবুর ফোন এল। মৌমিতা জানতো।ওপ্রান্তে বোম ফাটার গলায়
বয়ফ্রেণ্ড - পাশওয়ার্ড রং দিয়েছিস।আর পুরানো পিক-টাও ফিরিয়ে এনেছিস তুই।শুধু তাই
না ,লম্বুটা আবার তোর ফ্রেণ্ডলিস্টেও এসে গেল !কী করে?
মৌমিতা কোনো উত্তর দিল না। সে জানে,কাল
আরও বড়সড় মুখোমুখি হতে হবে।
বকবকম কথা
জানালার সামনে চুপ চুপ পায়ে এগোলো । পর্দার
ওপর দিয়ে মুখ বাড়ানোর আগে পিছনে আওয়াজের
ছায়া মাপল।বাবা নেই। মা
বাথরুমে ।
রাস্তার সমান্তরালে সাঁতরাচ্ছে ঝিকঝিকে বাতাস । তার
নিচে চাপ চাপ দোকানমোড়া রাস্তা । তার রগ বরাবর এ ওর গায়ে গড়ায় সব্জিদের ছিনালি।'বকম' - ভেতরটা
গুড়ুম করে ওঠে মায়ের মেঘ গুমগুম ডাকে ।
সেরা দুনিয়ায় এসে আরো একা । মিহিনের কাজের জগতের ফরসা
মেয়েবন্ধুরা কী ফরসা ! একদিন দেখে ফেলেছিল মিহিনের কোলে খোলা এক্কেবারে । তবু ও
কিন্ত্ত।এখানেও বেরোনোর ভাঙাছক নেই।তুখোড় দেয়াল ফ্লাটের মাপে।একদিন জোরে নিশ্বাস
নিল।পা ফেলল বাইরে।অমনি হাতে নাতে ধরা পড়ে তের পেরোনো মেয়ের গলায় - মাআআ আ ! আচ্ছা
যাও
। ভালো থেকো । বাবা জানবে না । অনেক
কষ্ট পেয়েছ । যাও মা !
এয়ারপোর্টে একা । দেশে ফিরবে পার্মানেন্টলি হিমুর সাথে । ওকে
ভালোবেসে ফেলেছে । হিমু কোথায় ? তার
সুইচ অফ্।হোয়াটসঅ্যাপ অফ।ফেবু মেসেঞ্জার হ্যাংআউট কোথাও নেই!খুব খুব মাথা নুইয়ে
ঘরে ফেরে । দরজা খোলে মিহিন । চিবিয়ে চিবিয়ে বলে সে-
পাছায় থাবড়া মেরে তাড়ালো তো পেয়ারের লোক !