গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

শনিবার, ১৫ আগস্ট, ২০২০

..সুদীপ ঘোষাল

এক কবির গল্প 



শরীরটা আছেসে সম্ভোগে ব্যস্তদেহের অণু পরমাণু  অংশ ভিজেকিন্তু মন যে শুষ্কমনের শূণ্য অংশও অধিকারে নেই তারসে ছুটেছে পদ্মবনে সেখানে তার রূপ দর্শনে মোহিত তার মন এদিকে শরীরলোভি সে খবর রাখে না ভিজে ভিজে ভালোলাগা শেষে বিরক্তির বিশ্রামআর মনলোভি নাগর দখল করে নেয় প্রিয়ার মন শরীরে তার আসক্তি নেইক্ষণিকের আনন্দ নয়, অসীম আনন্দের অনুসন্ধানী তার মন 


কিশোরবেলায় একটা রঙীন বাক্স ছিলাে পড়ার ঘরে তার ভিতরে দুটি রবীন্দ্রনাথ একটা জীবনানন্দ আর কয়েকটা বাল্যকালের খেলনা ছিল মন খারাপ হলেই পুরী থেকে আনা, নকশা কাটা পেন হলুদ কাশীরাম দাস বের করতাম বাক্স থেকে  তখনই প্রভাতী সূর্যের ভালবাসা দখল করত আমার মন তারপর বন্যা এলো, মাটির বাড়ি ভেঙ্গে পড়ল জীবনের তোয়াক্কা না করে আমি ভেসে যাওয়া বাক্স ধরার  চেষ্টায় বিফল হলাম ভেসে চলে গেলে আমার স্বপ্ন বাবা আমার কান্না দেখে নতুন বাক্স কিনে দিলেন তারপর বড় হলাম চাকরি পেলাম আরও নতুন বাক্স কিনলাম কিন্তু হায় সেই প্রভাতী সূর্যের  ভালোবাসা আর পেলাম না


পূর্ণিমা পুকুরের জ্যোৎস্না ভিজে চাঁদ হওয়ার স্বপ্ন দেখত দীনু সে চাঁদ ছুঁতে পারেনিসমস্ত যোগ্যতার ফানুস সে উড়িয়ে দিয়েছে ঘাসের শিশিরে,বাতসের খেলায় হেলায় সে হয়েছিল ফাঁকা মাঠের রাজা
আলপথের মাটির গন্ধে তার যোগ্য সম্মান ঘ্রাণ নিত প্রাণভরেসমস্ত চাওয়া পাওয়ার বাইরে অনুভূতির জগতে তার আসা, যাওয়া
তার বন্ধু বলত তোর ধনী হতে ইচ্ছে হয় না?
দীনু  উত্তর দেয় না সে জানে তার আপন জগতে সে শুধু রাজা নয়, সম্রাট অবহেলায় যাপন করতে সাধারণ জীবনসে জানে তার মতো ধনী, কমই আছেবাতাসের রেণু,আকাশের হৃদয় আর সবুজের হাতছানিতে সে ছুটে চলে সবুজের শেকলে সেখানে গিয়ে সে কথা বলত আপন মগ্নতায় 
তার নির্জন কথা হত কবিতার পান্ডুলিপি..