গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

শনিবার, ১৫ আগস্ট, ২০২০

জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়

ছবি 



উঁহ্! বলে ঘৃণা আর বিরক্তি ছিটিয়ে মাছবাজারে ঢোকে রিকুশ্যামলের মাছ ছাড়া ভাত চলে না পলিথিন শিটে গোটা বা কাটা মাছগুলো বিশ্রীভাবে ছড়ানোআঁশ,তেল অর্থাৎ নাড়িভুঁড়ি,পিত্তথলি এদিকওদিক পড়ে আর প্রচণ্ড দুর্গন্ধ -- এই হোলো নরকের দ্বিতীয় রূপ মাছবাজার,তার খুব অপছন্দের জায়গাশ্যামল খেয়েদেয়ে অফিসে যায় সাড়ে টা নাগাদতারপর কাজের দিদি চলে গেলে সে বাজারে আসতে পেরেছেসব্জি কেনা হয়ে গেলে শেষে ঢোকে মাছবাজারেবিক্রেতাদের বিরক্তিকর ডাকাডাকি এড়িয়ে কিনে নিতে হবেএই বাজারে সে নতুনমাত্র কদিন আগে শ্যামল এই শহরে বদলি হয়েছেসব অচেনাবাজারের প্রথম চিৎকার পার হয়ে ভিড় ঠেলে কোনার দিকে পৌঁছালো রিকুচোখ পড়লো একটি পলিথিনেমাছ ছোটো থেকে বড়ো, কাটামাছ, চিংড়ি, সামুদ্রিক মাছ সবকিছু খুব সুন্দরভাবে সাজানো ছবির মতোনোংরা মাছের দোকান এভাবেও সাজানো যায়?অবাক বিস্ময়ে একটু একটু করে এগিয়ে যায় রিকু আর মাছওয়ালার মুখ দেখে সে চমকে ওঠে
যে..... যে...বিকাশবহরমপুরের বিকাশতখন ওরা লালবাগেবিকাশ একজন শিল্পীঅদ্ভুত তার আঁকার হাতসে ছেলেমেয়েদের আঁকা শেখাতো,ওদের মেয়ে তিন্নিকেওরিকুকে দিদি বলতে বলতে সে ওর ভাইই হয়ে গেছিলোশ্যামলের বদলির পর আস্তে আস্তে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়চকবাজারে সেই শিল্পী কি না  মাছবিক্রেতা! কী বিচিত্র পরিবর্তন!সে ডাকে,বিকাশ!
বিকাশ তাকায়,অবাক চাউনি.....তারপর আলোর দ্যুতি
-- দিদি,আপনি!
 -- যাক চিনতে পেরেছো?তুমি এখানে?
আনন্দের কাহিনি নয়,মামার আশ্রয় হারিয়ে বাবার বাড়ি অর্থাৎ এখানে এসে
পাকেচক্রে বাবার মাছের ব্যবসার মালিক সেছবি আর আঁকে নাছবি সাজায়,মাছের ছবিকদিন পর ঠিকানা খুঁজে বিকাশের বাড়িতে গেলো রিকুবিকাশ কোনও কাজে সেদিন বাড়িতে নেইবুড়ি পিসিমা বাসালেন ওর ঘরেসেখানে অন্য কোনো ছবি নেই কেবল দেয়ালে একটি বহু যত্নে আঁকা ছবি যার মুখ দেখে ভয়ংকর চমক লাগে রিকুর.... এই ছবি.... মিমির,অধ্যাপক নিশিকান্তবাবুর একমাত্র সুন্দরী মেয়ে,বাথরুমের সিলিং থেকে যার দেহ পাওয়া গিয়েছিলো .....