ছায়া যখন কায়া
ডাক্তার যোহান কোলকাতার এক নামী বেসরকারি হাসপাতালের সুদক্ষ স্ত্রীরোগ-বিশেষজ্ঞ । সে কেরালিয়ান । কিন্তু ঝরঝরে বাংলায় কথা বলে ।
বন্ধু বিমল বলেছিল কল্যাণকে,'তুই তার কাছে বৌকে দেখাতে পারিস । আমি ঠিকানা দিচ্ছি তোকে ।'
তার কথা শুনে কল্যান খুশী হয় খুব । বাড়ি ফিরে ও ওর বৌ ফাল্গুনীকে জানায় ।
বৌ ফাল্গুনী বলে,'তবে সেখানেই চল । একটু পয়সা বেশী লাগবে বটে । সে লাগুক । সমস্যা হবে না । অমন নামী ডাক্তারের আন্ডারে থাকতে চাই আমি ।'
বন্ধু বিমল বলেছিল কল্যাণকে,'তুই তার কাছে বৌকে দেখাতে পারিস । আমি ঠিকানা দিচ্ছি তোকে ।'
তার কথা শুনে কল্যান খুশী হয় খুব । বাড়ি ফিরে ও ওর বৌ ফাল্গুনীকে জানায় ।
বৌ ফাল্গুনী বলে,'তবে সেখানেই চল । একটু পয়সা বেশী লাগবে বটে । সে লাগুক । সমস্যা হবে না । অমন নামী ডাক্তারের আন্ডারে থাকতে চাই আমি ।'
তার দুদিন পরেই কল্যান বন্ধু বিমলের থেকে ঠিকানা পেয়ে পৌঁছে যায় ডাক্তার যোহানের কাছে । গায়ের রঙ তার বেশ কালো । মাথা-ভরা কোঁকড়া চুল । মুক্তোর মতো সাদা দাঁত । চোখে রিমলেস চশমা । আর হাসিটা তার ভারী চমৎকার ।
সব মিলে বেশ লাগলো ডাক্তার যোহানকে কল্যান আর বৌ ফাল্গুনীর । বাড়ি ফেরার পথে দুজনই তার নাম-ভজনা করতে থাকলো ।
সব মিলে বেশ লাগলো ডাক্তার যোহানকে কল্যান আর বৌ ফাল্গুনীর । বাড়ি ফেরার পথে দুজনই তার নাম-ভজনা করতে থাকলো ।
প্রাথমিক কিছু কথার পর ডাক্তার যোহান সারা মুখে হাসি নিয়ে ফাল্গুনীকে পরীক্ষা করলো । কিছু পরীক্ষাও করতে বলল ।
কল্যান স্বস্তির হাসি হেসে বলল,'সে হবে । আপনি আছেন যখন আমার আবার চিন্তা কি ।'
প্রথম সন্তান বুঝি এসেছে ফাল্গুনীর পেটে ।
তাই ও একটু চিন্তার সুরে তাকে বলল,'আপনি খুব ভালো করে দেখবেন কিন্তু ।'
বলেই ও লজ্জা পেলো ।
তখন স্বল্পভাষী ডাক্তার যোহান ওকে মৃদু-হেসে বলল,'আমি আর কে । ' সবার ওপরে যেসাস আছেন । তিনিই সব ঠিক করে দেবেন ।'
অনেক তৃপ্তির হাসি হেসে কল্যান আর ফাল্গুনী তারপর প্রেসক্রিপশন নিয়ে বাড়ি ফিরে এলো ।
কল্যান স্বস্তির হাসি হেসে বলল,'সে হবে । আপনি আছেন যখন আমার আবার চিন্তা কি ।'
প্রথম সন্তান বুঝি এসেছে ফাল্গুনীর পেটে ।
তাই ও একটু চিন্তার সুরে তাকে বলল,'আপনি খুব ভালো করে দেখবেন কিন্তু ।'
বলেই ও লজ্জা পেলো ।
তখন স্বল্পভাষী ডাক্তার যোহান ওকে মৃদু-হেসে বলল,'আমি আর কে । ' সবার ওপরে যেসাস আছেন । তিনিই সব ঠিক করে দেবেন ।'
অনেক তৃপ্তির হাসি হেসে কল্যান আর ফাল্গুনী তারপর প্রেসক্রিপশন নিয়ে বাড়ি ফিরে এলো ।
তারপর থেকে ডাক্তার যোহানের কাছে রীতিমতো চিকিৎসা শুরু হয়ে গেলো ফাল্গুনীর । নিশ্চিত হওয়া গেলো ও সন্তান-সম্ভবা । নামী জায়গার দামী ডাক্তার পেয়ে খুব খুশি ফাল্গুনী । সঙ্গে ওর বর কল্যান তো বটেই ।
বাড়িতে বসেও ফাল্গুনী খুব ভাবে ডাক্তার যোহানের কথা । তার চেহারা আর মুখের মিষ্টি কথা ও ভুলতে পারে না ও । বারবার তাকে ওর দেখতে ইচ্ছা হয় । কথা বলতে ইচ্ছা হয় খুব ।
একদিন ফাল্গুনী কি এক ঘোরে তাকে ফোন করে বসলো । তেমন কিন্তু তাকে ওর দরকার ছিল না ।
বাড়িতে বসেও ফাল্গুনী খুব ভাবে ডাক্তার যোহানের কথা । তার চেহারা আর মুখের মিষ্টি কথা ও ভুলতে পারে না ও । বারবার তাকে ওর দেখতে ইচ্ছা হয় । কথা বলতে ইচ্ছা হয় খুব ।
একদিন ফাল্গুনী কি এক ঘোরে তাকে ফোন করে বসলো । তেমন কিন্তু তাকে ওর দরকার ছিল না ।
ফাল্গুনী পরিচয় দিতেই ডাক্তার যোহান খুব খুশী । সে শুরুতেই ওর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিলো । তার গলা শুনে ফাল্গুনী অতীব খুশী । তাই নিজের কথা বলে গেলো বেশ গুছিয়ে ।
হঠাৎ ফাল্গুনী তাকে বলে উঠলো,'ডাক্তারের কথাতেই রোগীর অর্ধেক রোগ সেরে যায় । তাই না ?’
সে হেসে বলল,'সে তো বটেই । তবে সব ডাক্তার কি এক ? মনে হয় না ।'
ফাল্গুনী সাথে-সাথে বলল,'না,সবাই কেন হবে ? আপনার মতো হলে ।'
এরপর কি বলবে ভাবতে ভাবতে ফাল্গুনী বলে বসলো,'আপনার সঙ্গে দেখা করার খুব ইচ্ছা আমার । যদিও যাওয়ার সময় এখনো আসেনি ।'
ডাক্তার যোহান শুনে আপ্লুত ।
সে বলল তখন,'আমি আমার পরিবার ত্রিবান্দ্রমে রেখে এসেছি । আপনি এলে তো বেশ হবে । চিকিৎসার বাইরে কিছু কথা বললে মনটা দুজনেরই ফ্রেশ হয়ে যাবে ।'
হঠাৎ ফাল্গুনী তাকে বলে উঠলো,'ডাক্তারের কথাতেই রোগীর অর্ধেক রোগ সেরে যায় । তাই না ?’
সে হেসে বলল,'সে তো বটেই । তবে সব ডাক্তার কি এক ? মনে হয় না ।'
ফাল্গুনী সাথে-সাথে বলল,'না,সবাই কেন হবে ? আপনার মতো হলে ।'
এরপর কি বলবে ভাবতে ভাবতে ফাল্গুনী বলে বসলো,'আপনার সঙ্গে দেখা করার খুব ইচ্ছা আমার । যদিও যাওয়ার সময় এখনো আসেনি ।'
ডাক্তার যোহান শুনে আপ্লুত ।
সে বলল তখন,'আমি আমার পরিবার ত্রিবান্দ্রমে রেখে এসেছি । আপনি এলে তো বেশ হবে । চিকিৎসার বাইরে কিছু কথা বললে মনটা দুজনেরই ফ্রেশ হয়ে যাবে ।'
'তাহলে কবে যাবো ?'
আনন্দে ফাল্গুনী জিজ্ঞেস করলে সে বলল,'পরশুদিন আসুন আমার ফ্ল্যাটে । আমি একাই থাকি । ভয়ের কিছু নেই ।'
তার কথা শুনে খিলখিল করে হেসে উঠলো ফাল্গুনী ।
তারপর বলল,'তবে যাচ্ছি ।'
ফোন রেখে ফাল্গুনীর মনে পড়ে গেলো ওর বরের সেদিন ছুটি । ওর বোনের বাড়ি যাওয়ার কথা । তখন ওর আনন্দ আর ধরে না ।
আর একবার ফোন করে ও ডাক্তার যোহানের ফ্ল্যাটের অবস্থানটা জেনে নিলো । লিখে রাখল ওর ডাইরিতে ।
আনন্দে ফাল্গুনী জিজ্ঞেস করলে সে বলল,'পরশুদিন আসুন আমার ফ্ল্যাটে । আমি একাই থাকি । ভয়ের কিছু নেই ।'
তার কথা শুনে খিলখিল করে হেসে উঠলো ফাল্গুনী ।
তারপর বলল,'তবে যাচ্ছি ।'
ফোন রেখে ফাল্গুনীর মনে পড়ে গেলো ওর বরের সেদিন ছুটি । ওর বোনের বাড়ি যাওয়ার কথা । তখন ওর আনন্দ আর ধরে না ।
আর একবার ফোন করে ও ডাক্তার যোহানের ফ্ল্যাটের অবস্থানটা জেনে নিলো । লিখে রাখল ওর ডাইরিতে ।
আর একবার ফোন করলো ফাল্গুনী ডাক্তার যোহানকে যাওয়ার সময় জানতে ।
সে বলল,'বিকালের দিকেই আসুন । দুপুরের পর আমি ফ্রি আছি ।'
খুশিতে গদগদ তখন ফাল্গুনী । মনে-মনে নিজেকে সাজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো ।
দেখতে দেখতে এলো যাওয়ার দিন । সকাল থেকেই ফাল্গুনীর ফুরফুরে মন ।
কল্যান দেখে খুশি ।
জিজ্ঞেস করলো,'অত আনন্দের কারণ ?'
ফাল্গুনী হেসে জবাব দিলো,'সত্যিই যোহান বড় ডাক্তার । আমি খুব ইজি ফিল করি সবসময় ।'
জেনে তৃপ্ত কল্যান ।
বলল,'আমাকে তাহলে বিমল বড় ডাক্তারের কথাই বলেছিল ।'
তার ঘণ্টা দুয়েক বাদে কল্যান বোনের বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লো ।
বলে গেলো ফাল্গুনীকে,'মাকে নিয়ে সাবধানে থাকবে । আর সমস্যা হলে ডাক্তারবাবুর সঙ্গে কথা বলে নেবে । আমার ফিরতে একটু রাত হতে পারে ।'
সে বলল,'বিকালের দিকেই আসুন । দুপুরের পর আমি ফ্রি আছি ।'
খুশিতে গদগদ তখন ফাল্গুনী । মনে-মনে নিজেকে সাজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো ।
দেখতে দেখতে এলো যাওয়ার দিন । সকাল থেকেই ফাল্গুনীর ফুরফুরে মন ।
কল্যান দেখে খুশি ।
জিজ্ঞেস করলো,'অত আনন্দের কারণ ?'
ফাল্গুনী হেসে জবাব দিলো,'সত্যিই যোহান বড় ডাক্তার । আমি খুব ইজি ফিল করি সবসময় ।'
জেনে তৃপ্ত কল্যান ।
বলল,'আমাকে তাহলে বিমল বড় ডাক্তারের কথাই বলেছিল ।'
তার ঘণ্টা দুয়েক বাদে কল্যান বোনের বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লো ।
বলে গেলো ফাল্গুনীকে,'মাকে নিয়ে সাবধানে থাকবে । আর সমস্যা হলে ডাক্তারবাবুর সঙ্গে কথা বলে নেবে । আমার ফিরতে একটু রাত হতে পারে ।'
চলে গেলো কল্যান ।
তারপরেই ফাল্গুনী তাড়াতাড়ি ঘরের কাজ সারতে শুরু করলো ।
ও শাশুড়িকে বলল বেশ বিনয়ের সুরে,'আমি বিকালের দিকে এক বান্ধবীর কাছে যাবো । তাড়াতাড়ি ফিরে আসবো । আপনি চিন্তা করবেন না একদম ।'
সে শুনে বেশ অবাক ।
বলল,'এই অবস্থায় যাবে তুমি ? আমি কি যাবো সাথে ?'
'আরে,না । আপনি গিয়ে কি আর করবেন । আমি তো শিগগির ফিরে আসবো । বান্ধবীর ছেলের শরীর ভালো না । তাই দেখে আসি ।'
তারপর আর সে কিছুই বলল না ।
শুধু বলল,'তবে সাবধানে যেও ।'
শেষ বাধা পেরিয়ে তখন ফাল্গুনী দিশাহারা । বারবার ওর চোখের সামনে ভেসে উঠতে থাকলো রিমলেস চশমাধারী সুদর্শন ডাক্তার যোহানের মুখটা ।
তারপরেই ফাল্গুনী তাড়াতাড়ি ঘরের কাজ সারতে শুরু করলো ।
ও শাশুড়িকে বলল বেশ বিনয়ের সুরে,'আমি বিকালের দিকে এক বান্ধবীর কাছে যাবো । তাড়াতাড়ি ফিরে আসবো । আপনি চিন্তা করবেন না একদম ।'
সে শুনে বেশ অবাক ।
বলল,'এই অবস্থায় যাবে তুমি ? আমি কি যাবো সাথে ?'
'আরে,না । আপনি গিয়ে কি আর করবেন । আমি তো শিগগির ফিরে আসবো । বান্ধবীর ছেলের শরীর ভালো না । তাই দেখে আসি ।'
তারপর আর সে কিছুই বলল না ।
শুধু বলল,'তবে সাবধানে যেও ।'
শেষ বাধা পেরিয়ে তখন ফাল্গুনী দিশাহারা । বারবার ওর চোখের সামনে ভেসে উঠতে থাকলো রিমলেস চশমাধারী সুদর্শন ডাক্তার যোহানের মুখটা ।
বিকালের কিছু আগে ফাল্গুনী পৌঁছে গেলো সেই নার্সিংহোমের কাছে । কে এক মধ্যবয়স্ক মানুষ ওকে দেখেই কাছে এগিয়ে এলো ।
সে অমায়িক-হেসে বলল,'আমি আপনাকে চিনতে পেরেছি । ডাক্তার যোহানের চেম্বারে আসেন তো আপনি । উনিই আপনাকে ওনার কাছে নিয়ে যেতে বলেছেন । আমার সঙ্গে আসুন ।'
ফাল্গুনী তখন স্বস্তির হাসি হাসল । আবার একটু ভয় পেলো । ডাক্তারবাবু চেনা হয়ে গেলেও সে অন্য পুরুষ । ওকে কিভাবে নেবে,সে নিয়ে একটু দ্বিধা দেখা গেলো ওর মধ্যে । তবে মানুষটা যে বেশ ভদ্র,সেও ও জানে । তাই মুখে হাসি নিয়ে ফাল্গুনী তার পিছনে এগোতে থাকলো ।
সে অমায়িক-হেসে বলল,'আমি আপনাকে চিনতে পেরেছি । ডাক্তার যোহানের চেম্বারে আসেন তো আপনি । উনিই আপনাকে ওনার কাছে নিয়ে যেতে বলেছেন । আমার সঙ্গে আসুন ।'
ফাল্গুনী তখন স্বস্তির হাসি হাসল । আবার একটু ভয় পেলো । ডাক্তারবাবু চেনা হয়ে গেলেও সে অন্য পুরুষ । ওকে কিভাবে নেবে,সে নিয়ে একটু দ্বিধা দেখা গেলো ওর মধ্যে । তবে মানুষটা যে বেশ ভদ্র,সেও ও জানে । তাই মুখে হাসি নিয়ে ফাল্গুনী তার পিছনে এগোতে থাকলো ।
নার্সিংহোম থেকে একটু দূরে । বেশ শুনশান জায়গা । একটা মাঠের পাশে সেই ফ্ল্যাট । ফাল্গুনীর এবার একটু ভয় পেতে থাকলো ।
কিন্তু ওর মুখে ভয়-ভাব দেখে সেই মানুষটি অনাবিল-হেসে বলল ওকে,'ভয়ের কিছু নেই । ডাক্তারবাবুরা শান্ত জায়গায় থাকতে পছন্দ করেন । সারাদিন মানুষের মাঝেই তো তারা থাকেন ।'
'তা ঠিক' বলতেই ফাল্গুনী গেটের সামনে পৌঁছে গেলো । তারপর লিফটে উঠে একেবারে তিনতলায় ।
'এই যে ডাক্তারবাবুর ঘরের দরজা । ভ্যাজানো আছে । ধাক্কা দিলেই খুলে যাবে ।'
বলে নিজেই সে দরজা খুলে দিলো । ফাল্গুনী সবিস্ময়ে দেখল,ডাক্তার যোহান পা-জামা আর স্যানডো-গেঞ্জি পরে ঘরময় পায়চারী করছে । বেশ উদ্বেগের ছাপ তার চোখেমুখে । তারপর সেই মানুষটা ফাল্গুনীকে আলতো ধাক্কা দিয়ে ঘরে ঢুকিয়ে নিজের পথ ধরল ।
কিন্তু ওর মুখে ভয়-ভাব দেখে সেই মানুষটি অনাবিল-হেসে বলল ওকে,'ভয়ের কিছু নেই । ডাক্তারবাবুরা শান্ত জায়গায় থাকতে পছন্দ করেন । সারাদিন মানুষের মাঝেই তো তারা থাকেন ।'
'তা ঠিক' বলতেই ফাল্গুনী গেটের সামনে পৌঁছে গেলো । তারপর লিফটে উঠে একেবারে তিনতলায় ।
'এই যে ডাক্তারবাবুর ঘরের দরজা । ভ্যাজানো আছে । ধাক্কা দিলেই খুলে যাবে ।'
বলে নিজেই সে দরজা খুলে দিলো । ফাল্গুনী সবিস্ময়ে দেখল,ডাক্তার যোহান পা-জামা আর স্যানডো-গেঞ্জি পরে ঘরময় পায়চারী করছে । বেশ উদ্বেগের ছাপ তার চোখেমুখে । তারপর সেই মানুষটা ফাল্গুনীকে আলতো ধাক্কা দিয়ে ঘরে ঢুকিয়ে নিজের পথ ধরল ।
ফাল্গুনীকে দেখেই মুখে হাসি নিয়ে ছুটে এলো ডাক্তার যোহান ।
সারা মুখে তখন তার মিহি-মিহি হাসি । ফাল্গুনীর হাত ধরতে গেলো সে । কিন্তু ফাল্গুনী তার হাত এড়িয়ে গিয়ে ঘরের ভেতরে গেলো । তারপর একটা সোফা সামনে পেয়ে ও বসে পড়লো । একটু ক্লান্তির হাসি হাসল তাকে দেখে ।
ওর মুখের সামনে একটা চেয়ার টেনে বসলো ডাক্তার যোহান । এবার সে কিন্তু বেশ হেসে ফেললো ।
বলল,'খুব খুশি আমি আপনি এসেছেন বলে । আশা করি আপনি আমাকে সময় দেবেন । সন্ধ্যা নামলেই চলে যাবেন । এখন তো পৌনে পাঁচটা ।'
সলাজ-সুরে ফাল্গুনী বলল,'আচ্ছা ।'
সারা মুখে তখন তার মিহি-মিহি হাসি । ফাল্গুনীর হাত ধরতে গেলো সে । কিন্তু ফাল্গুনী তার হাত এড়িয়ে গিয়ে ঘরের ভেতরে গেলো । তারপর একটা সোফা সামনে পেয়ে ও বসে পড়লো । একটু ক্লান্তির হাসি হাসল তাকে দেখে ।
ওর মুখের সামনে একটা চেয়ার টেনে বসলো ডাক্তার যোহান । এবার সে কিন্তু বেশ হেসে ফেললো ।
বলল,'খুব খুশি আমি আপনি এসেছেন বলে । আশা করি আপনি আমাকে সময় দেবেন । সন্ধ্যা নামলেই চলে যাবেন । এখন তো পৌনে পাঁচটা ।'
সলাজ-সুরে ফাল্গুনী বলল,'আচ্ছা ।'
কিন্তু কি কথা বলবে তার সাথে ?
ফাল্গুনী ভেবেই আকুল । বারবার ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে তার চিকিৎসার প্রশংসা করলো । আর তার অমায়িক ব্যবহার । চেহারার কথা কি বলা যায় ?
ভেবে লজ্জায় হেসে ফেললো ও ।
তারপরেই ডাক্তার যোহান ফাল্গুনীকে অদ্ভুত-গলায় বলে উঠলো,'আপনি এখানে এসেছেন কেন ? কী দরকার আমার সাথে আপনার ?'
তার কথা শুনে একেবারে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো ও । বুকটা ভয়ে কেঁপে উঠলো ওর ।
ওর অবস্থা দেখে হা-হা করে হেসে উঠলো ডাক্তার যোহান । তার হা-হা অনেক হা-হা তৈরি করলো নিমেষে । শুনশান ঘর তার হাসির তোড়ে কেঁপে-কেঁপে উঠতে থাকলো ।
ভয়ে সারা ফাল্গুনী তখন । সোফা ছেড়ে দৌড় দেওয়ার চেষ্টা করলো ঘরের দরজার দিকে ।
কিন্তু ডাক্তার যোহান ওর হাত চেপে ধরল । কি ভীষণ ঠাণ্ডা তার হাত । একেবারে বরফ-শীতল । ফাল্গুনীর মনে হল তখন ওর হাতের ওপর ভারী কিছু একটা এসে পড়লো ।
সাথে-সাথে ও জ্ঞান হারিয়ে দরজার ঠিক আগে মেঝেতে লুটিয়ে পড়লো ।
ফাল্গুনী ভেবেই আকুল । বারবার ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে তার চিকিৎসার প্রশংসা করলো । আর তার অমায়িক ব্যবহার । চেহারার কথা কি বলা যায় ?
ভেবে লজ্জায় হেসে ফেললো ও ।
তারপরেই ডাক্তার যোহান ফাল্গুনীকে অদ্ভুত-গলায় বলে উঠলো,'আপনি এখানে এসেছেন কেন ? কী দরকার আমার সাথে আপনার ?'
তার কথা শুনে একেবারে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো ও । বুকটা ভয়ে কেঁপে উঠলো ওর ।
ওর অবস্থা দেখে হা-হা করে হেসে উঠলো ডাক্তার যোহান । তার হা-হা অনেক হা-হা তৈরি করলো নিমেষে । শুনশান ঘর তার হাসির তোড়ে কেঁপে-কেঁপে উঠতে থাকলো ।
ভয়ে সারা ফাল্গুনী তখন । সোফা ছেড়ে দৌড় দেওয়ার চেষ্টা করলো ঘরের দরজার দিকে ।
কিন্তু ডাক্তার যোহান ওর হাত চেপে ধরল । কি ভীষণ ঠাণ্ডা তার হাত । একেবারে বরফ-শীতল । ফাল্গুনীর মনে হল তখন ওর হাতের ওপর ভারী কিছু একটা এসে পড়লো ।
সাথে-সাথে ও জ্ঞান হারিয়ে দরজার ঠিক আগে মেঝেতে লুটিয়ে পড়লো ।
তারপর আর খোঁজ নেই ফাল্গুনীর ।
সন্ধ্যা পেরিয়ে গেছে অনেক আগেই । প্রথম রাত শুরু । ওর শাশুড়ি চিন্তায় একশেষ । বারবার ঘর-বার করতে থাকলো । প্রতিবেশী কয়েকজনকে ডেকে ফাল্গুনীর কথা তাদের বলল । তারা শুনে অবাক ।
কে এক জিজ্ঞেস করলো,'বাপের বাড়িতে গেলো না তো ?'
শাশুড়ি সাথে-সাথে সেখানে ফোন করলো । কিন্তু না । সেখানে ফাল্গুনীর । ফাল্গুনীর বাবা-মা আর দাদা চিন্তায় তখন অস্থির ।
দাদা বলল,''আমি বাইক নিয়ে আসছি কিছু পরেই ।'
নানাজনের আশঙ্কার কথা চলতে চলতে কল্যান বাড়ি ফিরে এলো । ও শুনে যেন আকাশ থেকে পড়লো ।
শুরুতে ওর মুখ দিয়ে কোন কথাই বেরোল না । তারপর একটু-একটু করে ধাতস্থ হওয়ার পর খুব কষ্টে মুখ খুলল ।
সন্ধ্যা পেরিয়ে গেছে অনেক আগেই । প্রথম রাত শুরু । ওর শাশুড়ি চিন্তায় একশেষ । বারবার ঘর-বার করতে থাকলো । প্রতিবেশী কয়েকজনকে ডেকে ফাল্গুনীর কথা তাদের বলল । তারা শুনে অবাক ।
কে এক জিজ্ঞেস করলো,'বাপের বাড়িতে গেলো না তো ?'
শাশুড়ি সাথে-সাথে সেখানে ফোন করলো । কিন্তু না । সেখানে ফাল্গুনীর । ফাল্গুনীর বাবা-মা আর দাদা চিন্তায় তখন অস্থির ।
দাদা বলল,''আমি বাইক নিয়ে আসছি কিছু পরেই ।'
নানাজনের আশঙ্কার কথা চলতে চলতে কল্যান বাড়ি ফিরে এলো । ও শুনে যেন আকাশ থেকে পড়লো ।
শুরুতে ওর মুখ দিয়ে কোন কথাই বেরোল না । তারপর একটু-একটু করে ধাতস্থ হওয়ার পর খুব কষ্টে মুখ খুলল ।
একঘণ্টার মধ্যে বাইক চালিয়ে চলে এলো ফাল্গুনীর একমাত্র দাদা ফল্গু ।
ফল্গুর মাথাতেই প্রথম এলো নার্সিংহোমের কথা ।
সে বলল কল্যানকে,'আমরা একবার নার্সিংহোমে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারি । হয়তো ফাল্গুনী কোন অসুবিধা বুঝে সেখানে গেছে ।'
তার কথা মনে ধরল প্রতিবেশীদের ।
কল্যান অনেক ভেবে বলল,'তবে সেখানেই দেখা যাক ।'
তারপরেই মাকে প্রতিবেশীদের কাছে রেখে কল্যান ফল্গুর বাইকে চেপে বসলো । সেও একঘণ্টার পথ ।
ফল্গুর মাথাতেই প্রথম এলো নার্সিংহোমের কথা ।
সে বলল কল্যানকে,'আমরা একবার নার্সিংহোমে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারি । হয়তো ফাল্গুনী কোন অসুবিধা বুঝে সেখানে গেছে ।'
তার কথা মনে ধরল প্রতিবেশীদের ।
কল্যান অনেক ভেবে বলল,'তবে সেখানেই দেখা যাক ।'
তারপরেই মাকে প্রতিবেশীদের কাছে রেখে কল্যান ফল্গুর বাইকে চেপে বসলো । সেও একঘণ্টার পথ ।
সেখানে গিয়ে কল্যান ডাক্তার যোহানের কথা বললে অনেকেই অবাক হল খুব ।
একজন সবিস্ময়ে বলল,'উনি কোথা থেকে এখানে আসবেন ? তিনি তো দু'বছর আগেই গায়ে আগুন দিয়ে মারা গেছেন নিজের ফ্ল্যাটে । ওনাকে বাঁচাতে গিয়ে মরে তার কাকা । সব অদ্ভুত তো । তার কাছে আপনি আপনার স্ত্রীকে কীভাবে দেখালেন ? সত্যিই বুঝতে পারছি না কিছু ।'
আর একজন বলল ভয়ে-ভয়ে,'তবে কি তার আর ওই মানুষটার আত্মা এখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে ?'
দুজনের কথা শুনে তখন কল্যান আর ফল্গুর অবস্থা সঙ্গিন ।
খুব কষ্টে ঢোঁক গিলে ফল্গু বলল তাকে,'সেই ফ্ল্যাট এখনো আছে কি ? আমরা সেখানে কি একটু যেতে পারি ?'
'সে ফ্ল্যাট ? এখন তো নেই । মালিক নিজেই ভয়ে সরে গেছে কবে । এখন সব শুনশান । তবে সেখানে যাওয়াই যেতে পারে একবার । কি হতে যে কি হয় । অদ্ভুতুরে খেলা সব ।'
সে বলার পর কল্যান আর ফল্গু পা বাড়াল সেই ফ্ল্যাটের দিকে । সঙ্গে নার্সিংহোমের দুজন ।
একজন সবিস্ময়ে বলল,'উনি কোথা থেকে এখানে আসবেন ? তিনি তো দু'বছর আগেই গায়ে আগুন দিয়ে মারা গেছেন নিজের ফ্ল্যাটে । ওনাকে বাঁচাতে গিয়ে মরে তার কাকা । সব অদ্ভুত তো । তার কাছে আপনি আপনার স্ত্রীকে কীভাবে দেখালেন ? সত্যিই বুঝতে পারছি না কিছু ।'
আর একজন বলল ভয়ে-ভয়ে,'তবে কি তার আর ওই মানুষটার আত্মা এখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে ?'
দুজনের কথা শুনে তখন কল্যান আর ফল্গুর অবস্থা সঙ্গিন ।
খুব কষ্টে ঢোঁক গিলে ফল্গু বলল তাকে,'সেই ফ্ল্যাট এখনো আছে কি ? আমরা সেখানে কি একটু যেতে পারি ?'
'সে ফ্ল্যাট ? এখন তো নেই । মালিক নিজেই ভয়ে সরে গেছে কবে । এখন সব শুনশান । তবে সেখানে যাওয়াই যেতে পারে একবার । কি হতে যে কি হয় । অদ্ভুতুরে খেলা সব ।'
সে বলার পর কল্যান আর ফল্গু পা বাড়াল সেই ফ্ল্যাটের দিকে । সঙ্গে নার্সিংহোমের দুজন ।
চারদিক অন্ধকারের মধ্যে টর্চ মেরে-মেরে পরিত্যক্ত ফ্ল্যাটের মুখে এসে একজন টর্চ ফেলতেই আঁতকে উঠলো । এক মহিলার নগ্ন দেহ পড়ে আছে সেখানে । তার দুই হাত আর পা ছড়ানো । জিভ বেরিয়ে গেছে । কি বীভৎস সে দৃশ্য ।
কল্যান আর ফল্গু তার সাথে একেবারে কাছে গিয়ে ঝুঁকে পড়ে দেখল-- ফাল্গুনী ! ফাল্গুনীই তো ।
সঙ্গে-সঙ্গে কান্নায় ভেঙে পড়লো ফল্গু । কে তখন কাকে সান্ত্বনা দেয় । বেশ ভেঙে পড়েছে কল্যান তখন । শুধু ওই দুজন ওদের কোনোরকমে সামলে নার্সিংহোমের কাছে নিয়ে এলো । তারপর অত রাতে খবর গেলো থানায় । পুলিশ এলো তার কিছু পরে । ফাল্গুনীর নিঃসাড় দেহ নিয়ে গেলো থানায় । সঙ্গে একেবারে বিধ্বস্ত কল্যান আর ফল্গু ।
কল্যান আর ফল্গু তার সাথে একেবারে কাছে গিয়ে ঝুঁকে পড়ে দেখল-- ফাল্গুনী ! ফাল্গুনীই তো ।
সঙ্গে-সঙ্গে কান্নায় ভেঙে পড়লো ফল্গু । কে তখন কাকে সান্ত্বনা দেয় । বেশ ভেঙে পড়েছে কল্যান তখন । শুধু ওই দুজন ওদের কোনোরকমে সামলে নার্সিংহোমের কাছে নিয়ে এলো । তারপর অত রাতে খবর গেলো থানায় । পুলিশ এলো তার কিছু পরে । ফাল্গুনীর নিঃসাড় দেহ নিয়ে গেলো থানায় । সঙ্গে একেবারে বিধ্বস্ত কল্যান আর ফল্গু ।
দুদিন পরে কল্যান বন্ধু বিমলকে সব জানাতেই সে অবাক হল খুব ।
যারপরনাই অবাক হয়ে কাঁপা-কাঁপা গলায় বলল,'আমি বছর দুই আগেও জানতাম তিনি আছেন । এর মধ্যে কি হয়েছে আমি তো কিছুই জানি না । তুই আমাকে ক্ষমা কর । আমাকে কিন্তু বিপদে ফেলিস না ।''
কল্যান কান্না-ভেজা গলায় তখন তাকে বলল,'আর কাউকে বিপদে ফেলে কি আর হবে । যার গেলো তার গেলো । ভূতুড়ে ব্যাপার সব । বুঝতে যাবে সারাজীবন ।
যারপরনাই অবাক হয়ে কাঁপা-কাঁপা গলায় বলল,'আমি বছর দুই আগেও জানতাম তিনি আছেন । এর মধ্যে কি হয়েছে আমি তো কিছুই জানি না । তুই আমাকে ক্ষমা কর । আমাকে কিন্তু বিপদে ফেলিস না ।''
কল্যান কান্না-ভেজা গলায় তখন তাকে বলল,'আর কাউকে বিপদে ফেলে কি আর হবে । যার গেলো তার গেলো । ভূতুড়ে ব্যাপার সব । বুঝতে যাবে সারাজীবন ।