গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

বুধবার, ৬ জুন, ২০১৮

সুধাংশু চক্রবর্ত্তী


রক্তিম দাস  

পিছন পিছন হাঁটছে দেখে দ্বারিক ঘোষ ঘুরে দাঁড়িয়ে শুধোলো আমার পিছন পিছন কেন ? কোনো মতলব আছে নাকি হে ?
 আজ্ঞা, দেখছি কত দূর যেতে পারেন । রক্তিম দাস জবাব দিয়ে মনে মনে হাসে, ভাগ্যিস চিনতে পারেনি । নইলে কাল্লু ওস্তাদ টের পেয়ে গেলে রক্ষে থাকতো না
 তাতে তোমার কি লাভ ? দ্বারিক ঘোষ রাগ ফলায়
 আমাকে যে একেবারে লোকসানের পাহাড়ে গিয়ে উঠতে হবে ভাইটু । রক্তিম দাস যেন বিনয়ের অবতার !
 লোকসানের পাহাড় ! কেন ?
 ওই যে অতগুলো টাকা তোমার হাতে তুলে দিলো জগন্নাথ সাঁপুই ।
 তাতে তোমার কি ? লোকসান তো জগন্নাথ সাঁপুইয়ের হলো । মানুষটা একটা ফেরেববাজ । অনেকের টাকা হাতিয়ে বড়লোক হয়েছে । আমিও ঝোপ বুঝে কোপ মেরে.....
 তাই তো বলছি । ঢের লোকসান হয়ে গেল  আমার ।
 ধুস্‌ , তখন থেকে খামোখা....একটু ঝেড়ে কাশো তো বাপু ।
 হেঁ হেঁ হেঁ । জগন্নাথ সাঁপুই হলো আমার বাপ । বাপের লোকসান মানে ছেলের লোকসান, তাই না ?
 তুমি জগন্নাথ সাঁপুইয়ের ছেলে ! বলো কি !
 আজ্ঞে হ্যাঁ । আমি হলাম গিয়ে জগন্নাথ সাঁপুইয়ের একমাত্র ছেলে ঠুঁটোজগন্নাথ সাঁপুই । বাপই আমাকে পাঠিয়েছে টাকাটা ফেরত নিয়ে যাবার জন্য । এর আগেও যারা বাপকে ঠকাতে এসেছিলো তাদের সবাইকে আমি এভাবেই পিছন পিছন গিয়ে......একেবারে......ওই যে দূরে যে নির্জন খালপাড়টা দেখছো ওই পর্যন্ত চলো......কেমন নিশ্চিন্তে ঘুম পাড়িয়ে দেবো মাটির কোলে । হেঁ হেঁ হেঁ ।

দ্বারিক ঘোষভয় পেয়ে গিয়ে  টাকার থলে ফেলে প্রাণ বাঁচাতে ছুটলো   ফিরে  গিয়ে কাল্লু ওস্তাদকে শোনাবে কীভাবে প্রাণ বাঁচিয়ে ফিরে আসতে পেরেছে জগন্নাথ সাঁপুইয়ের ছেলের হাত থেকে ।

রক্তিম দাস টাকার ব্যাগটা কুড়িয়ে নিয়ে দ্রুত হাঁটা দেয় কাছেই লুকিয়ে রাখা নিজের বাইকের দিকে দ্বারিক ঘোষ কাল্লু ওস্তাদের ডেরায় ফিরে যাবার আগেই ওকে পৌঁছোতে হবে ওই  ডেরায় । অবশ্য তার আগে হাতানো মালগুলোর একটা ব্যবস্থা করে নেবে টুক করে নিজের বাড়িতে ঢুকে কাল্লু ওস্তাদ যেন এতটুকুও সন্দেহ না করতে পারে ওদের এই লাইনে কেউ সন্দেহের কবলে পড়লে তাকে যে একেবারে জানে খতম হয়ে যেতে হয়