রক্তিম দাস
পিছন পিছন হাঁটছে দেখে দ্বারিক
ঘোষ ঘুরে দাঁড়িয়ে শুধোলো – আমার পিছন পিছন কেন ? কোনো মতলব আছে নাকি
হে ?
আজ্ঞা, দেখছি কত দূর যেতে
পারেন । রক্তিম দাস জবাব দিয়ে মনে মনে হাসে,
ভাগ্যিস চিনতে পারেনি । নইলে কাল্লু ওস্তাদ টের পেয়ে গেলে রক্ষে
থাকতো না ।
তাতে তোমার কি লাভ ? দ্বারিক ঘোষ রাগ
ফলায় ।
আমাকে যে একেবারে লোকসানের পাহাড়ে গিয়ে উঠতে হবে
ভাইটু । রক্তিম দাস যেন
বিনয়ের অবতার !
লোকসানের পাহাড় ! কেন ?
ওই যে অতগুলো টাকা তোমার হাতে তুলে দিলো জগন্নাথ
সাঁপুই ।
তাতে তোমার কি ?
লোকসান তো জগন্নাথ সাঁপুইয়ের হলো । মানুষটা একটা ফেরেববাজ ।
অনেকের টাকা হাতিয়ে বড়লোক হয়েছে । আমিও ঝোপ বুঝে কোপ মেরে.....
তাই তো বলছি । ঢের লোকসান হয়ে গেল আমার ।
ধুস্ ,
তখন থেকে খামোখা....একটু ঝেড়ে কাশো তো বাপু ।
হেঁ হেঁ হেঁ । জগন্নাথ সাঁপুই হলো আমার বাপ ।
বাপের লোকসান মানে ছেলের লোকসান, তাই না ?
তুমি জগন্নাথ সাঁপুইয়ের ছেলে ! বলো কি !
আজ্ঞে হ্যাঁ । আমি হলাম গিয়ে জগন্নাথ সাঁপুইয়ের
একমাত্র ছেলে ঠুঁটোজগন্নাথ সাঁপুই । বাপই আমাকে পাঠিয়েছে টাকাটা ফেরত নিয়ে যাবার
জন্য । এর আগেও যারা বাপকে ঠকাতে এসেছিলো তাদের সবাইকে আমি এভাবেই পিছন পিছন গিয়ে......একেবারে......ওই যে দূরে যে নির্জন খালপাড়টা দেখছো ওই পর্যন্ত চলো......কেমন
নিশ্চিন্তে ঘুম পাড়িয়ে দেবো
মাটির কোলে । হেঁ হেঁ হেঁ ।
দ্বারিক ঘোষভয় পেয়ে গিয়ে টাকার থলে ফেলে প্রাণ বাঁচাতে ছুটলো । ফিরে গিয়ে কাল্লু ওস্তাদকে শোনাবে
কীভাবে প্রাণ বাঁচিয়ে ফিরে আসতে পেরেছে জগন্নাথ সাঁপুইয়ের ছেলের হাত থেকে ।
রক্তিম দাস টাকার ব্যাগটা কুড়িয়ে
নিয়ে দ্রুত হাঁটা দেয় কাছেই লুকিয়ে রাখা নিজের বাইকের
দিকে । দ্বারিক
ঘোষ কাল্লু ওস্তাদের ডেরায় ফিরে যাবার আগেই ওকে পৌঁছোতে হবে ওই ডেরায় । অবশ্য তার আগে
হাতানো মালগুলোর একটা ব্যবস্থা
করে নেবে টুক করে নিজের
বাড়িতে ঢুকে । কাল্লু ওস্তাদ যেন এতটুকুও সন্দেহ না
করতে পারে । ওদের এই লাইনে কেউ সন্দেহের কবলে পড়লে তাকে যে
একেবারে জানে খতম হয়ে যেতে হয় ।