ময়না
বড় আশা
করে একটা ময়নাপাখি কিনে নিয়ে
এলাম বাজার থেকে । ওকে নিজে শেখাবো ভালো ভালো কথা বলতে । কচি এবং প্রচণ্ড ছটফটে বলে নরম শরম দেখে একটা খাঁচাও কিনে নিলাম ওর জন্য । শক্তপোক্ত খাঁচায় রাখলে ছটফটানির দরুন আঘাত পাবার সম্ভাবনা প্রবল তাই এই ব্যবস্থা নেওয়া । দুটো দিনও গেল না । এক রাত্রে পাশের বাড়ির হুলোটা এসে খাঁচা ভেঙে খেয়ে গেল ময়নাপাখিটাকে ।
আবার কিনে
নিয়ে এলাম একটা ময়না
পাখি । সঙ্গে বেশ শক্তপোক্ত
একখানা লোহার খাঁচা । ছানাটা
খুবই শান্ত স্বভাবের । ট্যাঁফোঁ
পর্যন্ত করে না । আমার দিন কাটছে নানান ব্যস্ততায় । পশের বাড়ির হুলোটা মাঝেসাঝে এসে আক্রোশে লেজ আছড়ায় খাঁচার গায়ে । আমি আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছি ময়নার মুখে বোল ফোটাতে । ময়নার ঠোঁট খোলে কিন্তু বোল ফোটে না ।
বোল ফুটলো
না তো ফুটলোই না । নিয়ে
গেলাম শহরের নামী পক্ষীবিশারদের
কাছে । তিনি দেখেশুনে
বললেন – “এ কথা বলবে
কি ? এ যে বোবা
পাখি ।” মনের দুঃখে
উড়িয়ে দিলাম ময়নাটাকে ।
এবার
দেখেশুনে নিয়ে এলাম একটা
কথাবলা ময়না । খামোখা আর কষ্ট করতে হবে না ওর মুখে বোল ফোটানোর জন্য । শক্তপোক্ত লোহার খাঁচা গতবারই কিনেছি তাই নতুন খাঁচা কেনার দরকার হলো না ।
সকালে
খাঁচার সামনে এলে ময়না
বলে ‘গুড মর্নিং’
। কেউ
বাড়িতে এলে শুধোয় ‘কে এসেছে - কে এসেছে’ । রাত্রে ‘গুড নাইট’
বলার দরকার হয় না । ময়না
তখন গাঢ় ঘুমে তলিয়ে থাকে ।
তবে এই
ময়নাপাখির সঙ্গে একটা
বিপদও এসে জুটেছে আমার কপালে । আজকাল দিন
রাত শুনতে হচ্ছে ময়নার
এই একটাই কথা ‘খেতে এসেছে –
খেতে এসেছে’ ।