গাড়িটা জ্যামে
আটকে গিয়েছিল । সার সার
গাড়ি চলেছে রাস্তায় ।
সন্ধ্যে নেমেছে ,রাস্তায় দুদিকে
তিনটে করে বাতি ।
এত আলো ঝলমল আগে
ছিল না ।
টাইটা আলগা করলেন অঞ্জনবাবু ,ঠিক সেই সময় জানলা দিয়ে এক বাচ্চা ছেলে এক গুচ্ছ গোলাপ বাড়িয়ে ধরল -- নিন বাবু, নিন আজ গোলাপ দিবস । টাটকা লাল গোলাপ সুরভি ছড়াচ্ছে মৃদু ।
তিনি না,লাগবে না বলে
মুখ ফিরিয়ে নিলেন ।
এসব বিলাসিতা তার কোনকালেই
ছিল না ।
ছেলেটা কিছুতেই ছাড়বে না
। কেমন মায়া হল
বলে কিনেই ফেললেন শেষপর্যন্ত
। গাড়িটা আবার চলতে
শুরু করেছে । বেশ কয়েক
বছর রিটায়ার্ড করে মধ্যমগ্রামে একটা
একতলা বাড়ি কিনেছেন তিনি
। ফ্ল্যাট তাঁর কোনকালেই
পছন্দ নয় ।আজ একটা কনফারেন্সে
সল্ট লেক অফিসে যেতে
হয়েছিল । গাড়িও অফিস থেকেই
পাঠিয়ে দিয়েছিল ।
গেট পেরিয়ে দরজার চাবি
খুললেন অঞ্জনবাবু । তারপর ঘরের
আলো জ্বাললেন । কতদিনের খালি
পুরনো ফুলদানিটা পড়েছিল ধুলোমাখা
।একটু
জল দিয়ে গোলাপগুচ্ছ দিতেই
অবহেলায় পড়ে থাকা ফুলদানিটা
হেসে উঠল । চোখ পড়ল
কেয়ার ছবির দিকে ।
মুখে সেই পরিচিত মৃদু
মধুর হাসি । ক্যালেন্ডারের তারিখটাও
জ্বলজ্বল করছে । আজ
? হ্যাঁ আজই তো বিবাহবার্ষিকী । 'সারাজীবন শুধুই অর্থের
কেরিয়ারের পিছনে ছুটে বেড়ালাম
কেয়া --এই ছোট ছোট
মুহূর্ত কখন সময়ের হাত
ধরে চলে গেল বুঝে
উঠতে পারলাম না
'-- গভীর ব্যথাভরা দীর্ঘশ্বাস সারা
ঘরে ঘুরে বেড়াতে লাগল
। কেয়ার মুখে সেই
এক অভিযোগহীন হাসি আর
ফুলদানিতে হাসছে টাটকা এক
গুচ্ছ গোলাপ ।