নার্ড
ইংরেজীতে এই প্রকৃতির মানুষকে বলা হয় নার্ড
। সমসাময়িক আসাক পোষাক আদব কায়দা থেকে পিছিয়ে পড়া মেয়েটাও নিজেকে নার্ড ভাবতেই ভালোবাসে । কিন্তু
ভাবনা আর বাস্তব যে
খুব ফারাক । এই ফারাক বা গ্যাপ পূরণ করতে গিয়েই অনেকে পড়ে ফাটা বাঁশের মধ্যিখানে । মেয়েটারও সেই একই
অবস্থা ।
অন্য মেয়েরা প্রেম করছে । সে পারছেনা । ভাবনায় সে
এখনও কালিদাস । পোষাকে ডরোথি কিংবা লেডি ম্যাকবেথ । আহারে বিহারে একদশক পুরাতন ঠাকুমার
মত যে কিনা প্রতিটি
নাতি নাতনিকে আদেশ করে প্রতিটা দানার মর্ম বুঝতে । তো সেই পড়ল পাফড়ে । অন্য
বান্ধবীর ঠোটে তার প্রেমিকের ঠোট রাখা ছবি দেখে সে বুঝতে পারল তার শরীরের মধ্যে যে
কোনো পরিবর্তন হচ্ছে ।
পিটুইটারী কি ? প্রশ্ন করে সে নিজেকে । হ্যা
পিটুইটারীই তো । সে ই তো বড় শয়তান । বলে নিজেকে সে সামলে নিয়েছে বারে বারে । তারপরেও
সে মানুষ । ইর্ষা লোভ মদ মাৎর্যও তো তাকেও গিলে ফেলে কখনো কখনো । কখনো কখনো তার
ইচ্ছে হয় সে নিজেকে লাগাম ছাড়া ঘোড়া করে ফেলবে । কিংবা অশ্বমেধ যঞ্জের সেই
ঘোড়ারা । যতটা ছেলেকে
তার পছন্দ হবে সব তার ।
তার পরেও সে তার ভাবনার র্য়াডক্লিফ রেখা পেরতে
পারে না । ভয় পায় ভীষন । মেকি সভ্যতা, সামাজিকতার রাইফেল উচিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মনগড়া অনুশাসনের কড়া
চোখ তার ভয় লাগে খুব । দোনামোনার দুমুখো সাপ তার বুকের অর্ধেক অংশ খেয়ে ফেলে । সে
চায় বেরিয়ে আসতে তার নার্ডনেস থেকে । বেরিয়েও আসে । কিন্তু গল্প থেমে যায় নদীর এপারের
দির্ঘনিশ্বাসে । কারণ সকল সুখ যে ওপারেই আছে কে গ্যারান্টি দিতে পারে ? পারেনি সে নিজেও । যাদের কাছেই সে
নিজেকে সে সোপে দিতেই
চাই তারাই তো তাকে গিলে ফেলতে চায় ময়াল সাপের মত । ভয় লাগে তার আরও একবার । ভীষন ভয় ।
বাথরুমে বসে কাঁদে সে । বাইশ বছরে
রুমমেটদের সামনে কান্না মানায় ! কাঁদে ভীষন । তার মনে হয় আধুনিকতা একটা
বিলাশিতা । আধুনিকতা একটা পতিতার সুখের মত । সামান্য কিছু সময়ের সুখের জন্য
সারা জীবনের সুখ কেড়ে নেয় যে সুখ তাকে সে পতিতা বলতে ভালোবাসে ।