গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৫

তাপসকিরণ রায়

ছেলেটি


রক্ত গলগল করে গড়িয়ে যাচ্ছিল।
ট্রেনের কামরায় ভয়ার্ত শোরগোল চলছে। তার মধ্যে কেউ কাঁদছে, কেউ মিনতি করছে, আমায় মের না, আমার কাছে আর কিছু নেই !
--চুপ, বের কর টাকা !
--আর কিছু নেই বিশ্বাস করো
ঠিক তখনই এক ডাকু তার হাতের চাকু এক যাত্রীর কাঁধে মেরে দিল। আর সঙ্গে সঙ্গে ক্ষত থেকে গলগল হরে রক্ত গড়াতে লাগলো। ডাকাত দলের সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। ওরা যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা, হাত কান গলার গয়না, মূল্যবান যা পাচ্ছে, ছিনিয়ে নিচ্ছে । সোনা, রুপা, না কি ইমিটেশন তা দেখার সময় নেই তাদের ! 
আঙ্গুলের সোনার আংটি আর সঙ্গের এক হাজার টাকা ডাকাতদের হাতে তুলে দিয়ে আমি অনেকটা নিশ্চিন্তে সব দেখে যাচ্ছিলাম।
ডাকাত দলে চারজন ছিল, তার মধ্যে একজন নব্য যুবক। ওকে দলে নতুন, আনকোরা মনে হচ্ছিল। ও এক দিকে দাঁড়িয়ে ছিল। মুখে হিংস্রতার বদলে একটা অমায়িক, ভিতী ভাব ফুটে উঠেছিল তার। ছেলেটার সাদামাটা চেহারায় কোথাও ডাকাতের ছাপ নেই। সে কাঁধ থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়া লোকটির দিকে বারবার সহানুভূতির দৃষ্টি নিয়ে তাকাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল পারলে ও তার হাতের ছুরি ফেলে দিয়ে ওই আর্ত মানুষের সেবায় লেগে যাবে !
দলের সর্দার হবে ছেলেটার কাছে এসে ধমকে উঠলো, এই আহাম্মক, কি দেখছিস ? আমাদের কাজ শেষ, চল--