“গল্প হবে কেন ? যেটা সত্যি ঘটেছে সেটাই শোনাচ্ছি তোমাকে ।” নব্যেন্দু হাসে মৃদু
শব্দ করে । দরজার বাইরে আলোআঁধারিতে দাঁড়িয়ে আছে বলে মুখখানা অদেখাই থেকে যায়
।
“এই মাঝরাতে এসে ঘুম থেকে ডেকে তুলে সত্যি ঘটনা শোনাতে এসেছো ? আমাকে মানতেও হবে
সেই কথা ?”
“খামোখা মিথ্যে বলতে যাবো কেন ? শোনোই না একবার । ঘটনাটা হয়তো না-বলাই থেকে যাবে যদি তোমাকে না বলতে পারি ।”
“বেশ । শোনাও তোমার সেই সত্যি ঘটনা ।” আমার গলায় চাপা উষ্মা প্রকাশ পায় ।
নব্যেন্দু তাতে
এতটুকুও আমল না দিয়ে বলতে শুরু করে – “ট্রেনে চেপে আসছিলাম চেন্নাই থেকে ।
শুয়েছিলাম স্লিপার কোচের লোয়ার বার্থে । মাঝখানের বার্থে ছিলেন একজন বিশালদেহী
মাঝবয়সী সাউথ ইণ্ডিয়ান । মাঝরাত্রে হঠাৎ করে ঘটলো একটা দুর্ঘটনা । লোহার চেইনের
ক্লিপ আলগা হয়ে মাঝখানের বার্থটা এসে আছড়ে পড়লো আমার ওপর । সেই বিশালদেহী মানুষটাও
বাদ গেল না । সঙ্গেসঙ্গে জ্ঞান হারালাম ।”
নব্যেন্দু এতটা বলে
কয়েক মুহূর্ত চুপ করে থেকে একসময়ে বিষণ্ণ গলায় বলে - “জানো বিমল , তারপরই ঘটলো সেই অবাক করা কাণ্ডখানা ।”
নব্যেন্দু আবার চুপ
করে যায় । ওর মুখ দেখা না গেলেও বুঝতে অসুবিধা হয় মুখানা থমথম হয়ে আছে । অস্বস্তি
কাটানোর জন্য মরিয়া গলায় বলি – “ কী হলো চুপ করলে কেন ? তারপর কি ঘটেছিলো
বলো ।”
“তারপর ? জ্ঞান ফিরে পেয়ে দেখি কোথায় ট্রেন দাঁড়িয়ে আছি তোমার বাড়ির হাতায় ! এবার যাই । এতক্ষণে বাড়িতে নিশ্চয়ই সংবাদ
পৌঁছে গিয়েছে ।”
নব্যেন্দু বলা শেষ করে নিমেষে মিলিয়ে যায়
অন্ধকারে ।