গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

সোমবার, ২৬ জুন, ২০১৭

সুধাংশু চক্রবর্ত্তী

 নব্যেন্দু

গল্প হবে কেন ? যেটা সত্যি ঘটেছে সেটাই শোনাচ্ছি তোমাকে ।নব্যেন্দু হাসে মৃদু শব্দ করে । দরজার বাইরে আলোআঁধারিতে দাঁড়িয়ে আছে বলে মুখখানা অদেখাই থেকে যায় ।  

 এই মাঝরাতে এসে ঘুম থেকে ডেকে তুলে সত্যি ঘটনা শোনাতে এসেছো ? আমাকে মানতেও হবে সেই কথা ?”

 খামোখা মিথ্যে বলতে যাবো কেন ? শোনোই না একবার । ঘটনাটা হয়তো না-বলাই থেকে যাবে যদি তোমাকে না বলতে পারি ।

 বেশ । শোনাও তোমার সেই সত্যি ঘটনা । আমার গলায় চাপা উষ্মা প্রকাশ পায় ।

নব্যেন্দু তাতে এতটুকুও আমল না দিয়ে বলতে শুরু করে – “ট্রেনে চেপে আসছিলাম চেন্নাই থেকে । শুয়েছিলাম স্লিপার কোচের লোয়ার বার্থে । মাঝখানের বার্থে ছিলেন একজন বিশালদেহী মাঝবয়সী সাউথ ইণ্ডিয়ান । মাঝরাত্রে হঠাৎ করে ঘটলো একটা দুর্ঘটনা । লোহার চেইনের ক্লিপ আলগা হয়ে মাঝখানের বার্থটা এসে আছড়ে পড়লো আমার ওপর । সেই বিশালদেহী মানুষটাও বাদ গেল না । সঙ্গেসঙ্গে জ্ঞান হারালাম ।

নব্যেন্দু এতটা বলে কয়েক মুহূর্ত চুপ করে থেকে একসময়ে বিষণ্ণ গলায় বলে  - জানো বিমল , তারপরই ঘটলো সেই অবাক করা কাণ্ডখানা ।

নব্যেন্দু আবার চুপ করে যায় । ওর মুখ দেখা না গেলেও বুঝতে অসুবিধা হয় মুখানা থমথম হয়ে আছে । অস্বস্তি কাটানোর জন্য মরিয়া গলায় বলি – “ কী হলো চুপ করলে কেন ? তারপর কি ঘটেছিলো বলো । 

 তারপর ? জ্ঞান ফিরে পেয়ে দেখি কোথায় ট্রেন দাঁড়িয়ে আছি তোমার বাড়ির হাতায় ! এবার যাই । এতক্ষণে বাড়িতে নিশ্চয়ই সংবাদ পৌঁছে গিয়েছে ।নব্যেন্দু বলা শেষ করে নিমেষে মিলিয়ে যায় অন্ধকারে ।