গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

বুধবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২০

গোপেশ দে

 


মধুরেণ সমাপয়েৎ

কাকু একটা গল্প শুনবেন ?

আমি একটা চায়ের দোকানে বসে ধ্যানে ছিলাম।আমার ধ্যানভঙ্গ হল।

একটা ছেলে আমার পাশে বসে বেশ উৎসুক চোখে তাকিয়ে আছে।আমি ছেলেটির দিকে সেলুলয়েডের মোটা কাচের চশমার ভেতর দিয়ে ভ্রু কুঁচকে তাকালাম।

অল্প বয়সী ছেলে।বয়স আন্দাজ করলাম।পঁচিশ- ছাব্বিশ।

আমাকে ছেলেটি এরকম একটা প্রশ্ন করায় বেশ অবাক হলাম।এই প্রথম মনে হয় অচেনা কেউ আমাকে এরকম প্রশ্ন করল।

আমি তার কথাটা না বোঝার ভান করে বললাম, কি বললে ?

ছেলেটি বলল, গল্প শুনবেন ?

কি গল্প ?

এবার ছেলেটি বুকপকেট থেকে চশমা বের করে বলল, প্রেমের গল্প।

ছেলের বয়সী একটা যুবক আমার মত পঞ্চাশ বছরের এক মানুষকে প্রেমের গল্প শোনাবে।ব্যাপারটা অদ্ভুত লাগলো আমার কাছে।

আমি বললাম, তুমি কি প্রত্যেককেই গল্প বলে বেড়াও ?

ছেলেটি হাসল, না কাকু।ইউ আর ফার্স্ট।

আমি আগ্রহ হারিয়ে বললাম, দুঃখিত।

ছেলেটি চশমাটি চোখ থেকে খুলে পকেটে পুরলো।

আমি একটা বিষয় লক্ষ্য করলাম, ছেলেটি গল্প বলার জন্যই বোধহয় চশমাটা পরেছিল।আমি না বলায় সে চশমাটা রেখে দিল পকেটে।

ছেলেটি চুপচাপ বসে আছে আমার পাশে।

ছেলেটিকে বেশ ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলাম।না চেনা মনে হচ্ছে না তো।

আমি ছেলেটিকে বললাম, আমি কি তোমার পরিচিত কেউ ?

গল্পটা শুরু করব? ছেলেটা আমার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে যেন প্রসঙ্গ পাল্টালো।

তুমি কি এখানেই বলতে চাও নাকি অন্যকোথাও ?

আপনার ইচ্ছা।

আমি চায়ের কাপটা রেখে দোকানীকে টাকা দিয়ে ওকে বললাম, চল কফিশপে বসে তোমার গল্প শুনি।

বেশ, চলুন চলুন।

ছেলেটির মাথায় কোনো গন্ডগোল থাকতে পারে কি?না হলে এইভাবে কেউ গল্প শোনাতে চায় না।আমি ছেলেটাকে সাথে নিয়ে হাঁটছি আর ভাবছি গল্পটা শুনলে মন্দ হয় না।

আমরা এখন কফিশপে বসে আছি।কফির অর্ডার দেওয়া হয়েছে।তবে বিলটা ওই ছেলেটিই দেবে এটা আমাকে বলে দিয়েছে।

তোমার কোনো তাড়া নেই তো ?

একটু আছে।আপনাকে গল্প শুনিয়েই আমি শান্তিপুর লোকাল ধরব।

শান্তিপুরে থাকো তুমি ?

হ্যাঁ।আপনি কাকু ?

আমি কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে বললাম, আপাতত পাটনায় আছি।আমাদের আদি বাড়ি বেহালা।

ছেলেটি আমার কথায় কোনো মনোযোগ দিল বলে মনে হল না।

বল গল্পটা বল....

ছেলেটি এবার বলল, আমি ফেসবুকে একটা মেয়ের সাথে প্রেম করতাম।

আচ্ছা।তারপর....

মেয়েটিকে আমি কখনই দেখিনি।কারণ তার কোনো ছবি ছিল না ফেসবুকে।

আমি একটা ফ্লেক বের করে টানছি আর ভাবছি খুব কমন প্রেমের গল্প হবে হয়ত।আরে ফেসবুকে তো হরহামেশাই এরকম হচ্ছে।খুব সস্তা দরের গল্প কি এটা ? আরেকটু শুনলেই বুঝতে পারব সস্তা দরের কি না।

মেয়েটি আমার সাথে প্রথমে খুব ফ্রেন্ডলি গল্প করতে লাগল।সকালে ঘুম থেকে উঠেই আমাকে গুড মর্নিং তারপর রাতে গুড নাইট...

আমি রেগে গিয়ে ওর কথা শেষ করতে না দিয়ে সিগারেট টানতে টানতে বললাম, আরে এইসব কেচ্ছা অন্যকোথাও বল।মূল প্রসঙ্গ টানো।

ছেলেটি বেশ ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল আমার কথায়, না মানে পুরোটা সুন্দর করে বললে বেশ গুছিয়ে বলতে পারব।শুনুন প্লিজ।

প্রেম হল কিভাবে সেটা বল।আমি মোটামুটি গল্পের ক্লাইম্যাক্স টা জানার জন্যই শুনছি।

মেয়েটিকে আমি তখনো দেখিনি যখন থেকে চ্যাট করি তার সাথে কিন্তু এক প্রকারের ভালো বন্ধুত্ব হয়ে যায়।

তারপর....

একদিন হঠাৎ করে এক সকালে মেসেজ বক্সে যেয়ে দেখি সে আমাকে প্রপোজ করেছে।

কি বলেছে ?

আই লভ ইউ...বলেছে

আমি সিগারেটের দিকে তাকিয়ে দেখলাম, ফিল্টার ধরে এসেছে।তাই সিগারেটটা এশট্রে তে ঠাসলাম।

চোখ মুখ শক্ত করে বললাম, চশমাটা পকেটে রাখো।

ছেলেটি খুব বিস্মিত হয়ে গেল।এমন ভাবে আমার দিকে তাকাল যেন এরকম বিস্ময় সে তার এই জীবনে প্রথম পেল।

আমার তোমার গল্প শুনতে ভাল্লাগছে না।

না না শুনুন ভালো লাগবে।

যেটা ভালো লাগে সেটা শুরু থেকেই লাগে যেটা ভালো লাগে না সেটা কখনই লাগে না।

আপনার তাড়া না থাকলে শুনুন।

এই গল্পটা বোধহয় তোমার কোনো সমবয়সী কিংবা বন্ধুদের বললে ভালো হয়।

ছেলেটি নিরুত্তর থাকল।

আমি নির্লিপ্ত হয়ে কাঁচের জানলার দিকে তাকিয়ে বললাম, আচ্ছা বল তারপর....

আমি ওর প্রোপজালটা পেয়ে পুরো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম।আমি ওর প্রপোজ টা ফার্স্ট মেনে নিতে পারলাম না।আমি ভাবলাম ফেক আইডি হবে।ছেলে সেজে হয়তো আমার সাথে ফান করছে।আমার অনেক ছেলেবন্ধুরই তখন ফেক আইডি আছে।এখনকার বাজার তো ফেক আইডির ছড়াছড়ি।হা হা হা....

আমি ছেলেটার হাসির উৎস খুঁজে পেলাম না।এতে হাসির কীই বা আছে !

আমি মেয়েটির মোবাইল নাম্বার চাইলাম বাট সে দিতে রাজি হল না।

আমি ছেলেটিকে বললাম, তুমি তখন কি ?

আমি তখন সবে কলেজ পাশ করেছি জিওগ্রাফি নিয়ে।চাকরির পরীক্ষায় বসবো।কম্পিটিশন সাকসেস বই পড়ি।

আর ওই মেয়েটা ?

ও তখন ক্লাস টুয়েলভে পড়ে।

ও আচ্ছা।তারপর...

আমি চ্যাট করা বন্ধ করে দিলাম।কারণ আমি ভেবেই নিলাম ওটা ফেক আইডি।আমি ছবি চেয়েছি দেয়নি।আমি নাম্বার চাইলাম তাও দিল না।

ও আমাকে রোজ মেসেজ করে ফেসবুকে বাট আই ডন্ট রিপ্লাই।এরপর এভাবে এক সপ্তাহ কেটে গেল।হঠাৎ এক রাত্রিবেলা ফেসবুক খুলেই দেখি মেয়েটা আমাকে নাম্বার দিয়েছে।

তারপর দেখা করলে প্রেম হল এই তো বলতে চাইছ?আরে কি সব গল্প বলছ একেবারে বস্তা পচা লভ স্টোরি ! বেশ নরম সুরেই বললাম।

আমাকে প্লিজ বলতে দিন।

হ্যাঁ বল বল শুনছি।আমার এবার মনে হচ্ছে কিছুটা ইন্টারেস্টিং হলেও হতে পারে।

এরপর আমাকে ও একদিন অমুক জায়গায় দেখা করতে বলে।জায়গাটার নাম বলব না।

ঠিক আছে তারপর...

তারপর আমি দেখা করতে যাই।তখনও মেয়েটিকে আমি দেখিনি।মানে ওর ছবি আমাকে দেয়নি।আমি খুব উৎসাহ নিয়ে দেখা করতে গেলাম।

কিন্তু দেখা হল না এই তো।

ছেলেটা এবার খুব চুপ হয়ে গেলো।ঢকঢক করে জল খেল।

আমি আরেকটা ফ্লেক ধরালাম।ভুস ভুস করে ধোঁয়া ছাড়লাম।ছেলেটির চুপ করা দেখে বুঝে নিলাম ট্রাজেডি কিছু একটা হবে।না হলে কেউ এইভাবে চুপ হয়ে যায় না।হয়ত তার বলতে খুব কষ্ট হচ্ছে।

আমি খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিতে বললাম, মেয়েটা দেখতে ভালো না তাইতো ?

মেয়েটা দেখতে অনেক সুন্দর।সে ব্যাপারে কোনো প্রবলেম নেই।

তারপর বল...তুমি চুপ দেখেই অনুমান করলাম বিষয়টা।

আমি দেখা করতে ওই জায়গাটায় যাই।আমি একগুচ্ছ গোলাপ ফুল নিয়ে ওর জন্য জায়গাটায় ওয়েট করি।

ছেলেটি আবার চুপ হয়ে গেল।

আমি ছেলেটির মুখের দিকে তাকিয়ে আছি।কিছুটা বিষণ্ণভাব চেহারায়।চশমার ভেতর থেকেও সেটা স্পষ্ট বোঝা যায়।

আমি সিগারেট টেনেই যাচ্ছি।আমি ওকে বললাম, ওই মেয়েটি দেখা করতে আসেনি ?

না এসেছিল।তারপর ওর সাথে দেখা হল।ও আমাকে সেখান থেকে টোটো গাড়িতে একটা জায়গায় নিয়ে গেল।আসলে ওই যায়গাটা আমি ঠিক চিনিও না।সেখানে বেশ কিছু সময় কাটালাম।এরপর সন্ধ্যা হয় হয়।এরপর একটা ভয়ানক কাণ্ড ঘটে গেল।

আমি গল্পের মাঝে একটা সিরিয়াস কিছু খুঁজে পেলাম, সেটা কী !

ও আমাকে একটা নির্জন গলির ভেতরে নিয়ে গেলো।তারপর ও এদিক ওদিক তাকিয়ে হাসল।চারজন ছেলে আমার কাছে এল।আমি বুঝতে পারলাম আমার সামনে একটা বিপদ রয়েছে।

মানে ওরা ছিনতাইকারী কী ?

হ্যাঁ।

মেয়েটাও ?

হ্যাঁ।

কিভাবে বুঝলে মেয়েটাও জড়িত ?

ছেলেটি চেয়ারে হেলান দিল, মেয়েটি নিজেই স্বীকার গেল আর ওদের সাথে হাসাহাসিও করছিল।

আমার খুব কৌতুহল জন্মে গেল গল্পের প্রতি।তারপর...

আমার মানিব্যাগ, ঘড়ি, মোবাইল ফোন, জামা প্যান্ট সব নিয়ে গেল।

সর্বনাশ।

হ্যাঁ।

তুমি চিৎকার করনি ?

না।আমি তখন স্ট্যাচু হয়ে মেয়েটিকে দেখছি।

এগুলো সচরাচর হচ্ছে।কিন্তু মেয়ে মানুষ এতোটা ডেঞ্জারাস হবে আমি তা ভাবিনি।খুব স্যাড।

হুম প্রথম দিকে স্যাড।এখন ইন্টারেস্টিং খবর শুনবেন ?

হ্যাঁ হ্যাঁ বল।

ওই মেয়েটিই এখন আমার বউ।

আমি চোখ বড় বড় করে বললাম, মানে ? আমি বলব বলে ভাবছি, শিওর ঢপ দিচ্ছ।গল্প ফাঁদতে বেশ জানো।কিন্তু বললাম না।মানেটা বলেই উত্তরের আশায় থাকলাম।

ছেলেটি আবার গল্প শুরু করল, আমি ওকে ফেসবুক থেকে ব্লক করি।ও আমাকে কিছুদিন পর কল করতে থাকে।আমি কল রিসিভ করি না।ও আমাকে সারাক্ষণ মোবাইলে মেসেজ করতে থাকে।

কি মেসেজ ?

আমার সাথে দেখা করতে চায়।

তুমি কি বললে?

আমি ওকে গালিগালাজ শুরু করি।তারপরও আমার সাথে কথা বলতে চায়।আমাকে বলে আমি যেখানে আসতে বলব ও নাকি সেখানেই আসবে।

আমি এই ফাঁকে আরও দু'কাপ কফির অর্ডার করি।কফি খেতে খেতে বলি, তারপর কী করলে ? ন্যাড়া কিন্তু একবারই বেলতলায় যায়।

হ্যাঁ আমি আর দেখা করলাম না।ছেলেটি হেসে ফেলল।

বিয়েটা কিভাবে হল ?

আমি সিম চেঞ্জ করে ফেলি।এভাবে প্রায় দশ বারোদিন কেটে গেলো।হঠাৎ মেয়েটা আমার বাড়িতে এসে উপস্থিত।

আমি বুঝতে পারছি ছেলেটা বানিয়ে বানিয়েই বোধহয় গল্প ফাঁদছে।

ছেলেটি নিজ থেকেই বলল, আমি তো পুরো থ।আমার বাড়ির লোকজন ওকে আমার বন্ধু ভেবেছিল তাই কেউ খুব বিচলিত হয়নি।আমি তখন ঘেমে নেয়ে উঠেছি।মেয়েটিকে কি বলব বুঝলাম না।আমি ব্যালকনিতে গিয়ে দেখলাম ছেলেগুলো বাইরে আছে কি না।

ও আমার মায়ের সামনে বলল, বাইরে কেউ নেই।

আমার মা বলল মেয়েটিকে, বাইরে কে নেই মা ?

না কাকীমা কেউ না।

এরপর আমার মা একটু অন্য ঘরে যেতেই ও আমার হাত ধরে বলল, প্লিজ কিছু কথা আছে।বাইরে চল।

আমি প্রথমে না বলাতে ও কেঁদে ফেলল।

তারপর মায়ার টানে বাইরে গেলে।এইত ?

হ্যাঁ।ঠিক তাই।

তারপর....

বাইরে গিয়ে একটা পার্কে গেলাম।আমার পরিচিত পার্ক।তখন সকাল পেরিয়ে দুপুর হবে হবে।দিনের বেলা তাই কিছুটা সাহস আছে।ও আমাকে জড়িয়ে ধরল।আমি কি করব তা বুঝে উঠতে পারলাম না।আমি ওকে আলগা করে বসতে বললাম।

তারপর....

তারপর ও ওইদিনকার ঘটনা যা বলল তা হচ্ছে ওর মামী একজন নেশা গ্রস্থ।নেশার টাকা জোগার করতে ভাগ্নিকে প্রেসার ক্রিয়েট করে।আর বুদ্ধি দেয় ফেসবুকে ছেলেদের ফাঁদে ফেলে টাকা নেবে।

আর ওই ষন্ডামার্কা ছেলেগুলো ?

ওগুলো ওর মামীর ভাড়া করা ছেলেপেলে।

ওর মামা কোথায় তখন ?

উনি দেশে থাকেন না।অন্য স্টেটে থাকেন।আর ওর মামীর সাথে কোনো যোগাযোগ রাখতেন না।কারণ উনিও হয়তো জানতেন ওনার ওয়াইফ নেশাগ্রস্থ।

আর মেয়েটির মা বাবা ?

মা বাবা কেউ বেঁচে নেই।

খুব দুখী মেয়ে।আমার ভেতর বেশ দুঃখ নাড়া দিয়ে উঠল।

আমি ছেলেটিকে বললাম, তারপর কি করলে তুমি ?

আমি ওকে তক্ষুনি বিয়ে করে বাড়ি নিয়ে যাই।

তোমার মা বাবা মেনে নিয়েছিল ?

হ্যাঁ।এক্কেবারে।তখনি মেনে নিয়েছিল।

শুনে খুব ভালো লাগলো।তুমি তাহলে এখন খুব হ্যাপি তাই না ?

হ্যাঁ খুব খুব।

আচ্ছা এই প্রেমের গল্পটা তুমি চাইলে তোমার বয়েসি বন্ধুদের বলতে পারতে।কিন্তু আমাকে কেন বুঝলাম না।

কারণ আমি যে মেয়েটির গল্প বললাম আপনি তার মামা।

আমি ঢোক গিলে বললাম, মানে তুমি সুনীতার বর ?

হ্যাঁ মামা।আমি জয়।জয় মল্লিক।প্রথমে কাকু বলেছি।স্যরি!

না স্যরি কেন ? ঠিক আছে।

আমি জয় নামের ছেলেটার দিকে হাঁ করে তাকিয়ে আছি।কি সুদর্শন যুবক!মেয়েটা খুব সুখেই আছে বোঝা যাচ্ছে।মামা হয়ে এ লজ্জা রাখব কোথায় ?

আমি ওর হাত ধরে বললাম, আমি খুব লজ্জিত।ভেরি স্যরি!আমার ভাগ্নীর সাথে এমনটা হয়েছে এত কিছু জানতাম না।

না না।আপনি খুব ভালো।সুনীতা বলেছে।আপনাকে ও দেখতে চায়।

হ্যাঁ হ্যাঁ যাব।এখনি যাব।

মামীকে কিচ্ছু বলবেন না মামা।

একটা বিষয় কি জানো তোমার মামীর সাথে আমার ডিভোর্স হয়ে গেছে।

কেন ?

সে অনেক কথা।আমি একটা দীর্ঘশ্বাস গোপন করলাম।আমি জয়কে বললাম, তুমি আমাকে প্রথম দেখাতেই চিনলে কি করে?

সুনীতা ওর একটা অ্যালবামে আপনার ছবি আমায় দেখিয়েছে।আপনার বেশ কিছু ছবি।ছবিতে দেখেছি আপনার বা গালে একটা তিল আছে।আপনাকে আমি অনেকদিন ধরেই ফলো করছিলাম ওই চায়ের দোকানে।আপনি ওই দোকানটায় প্রায়ই চা খান।সেটা আমি দেখেছি।চায়ের দোকানটার পাশেই যে আপনার অফিস সেটাও আমি জানি।

হ্যাঁ দুবছর হলো এখানে পোস্টিং হয়েছে।

আপনি আমাকে খেয়াল করেননি।আমার অনুমানটা যে সত্যি হবে সেটা আমি জানতাম।

দারুণ অনুমান তোমার।চল এখনি আমার ভাগ্নি টাকে দেখে আসি।আহারে!

জয় খুব বিনম্রভাবে আমাকে সাথে নিয়ে ওর ঘরের উদ্দেশ্য রওয়ানা দিল।আমি খুব আগ্রহ নিয়ে ছেলেটার সাথে হেঁটে চলছি।