যুগান্তর
সেদিন বিকালের দিকে পাশের বাড়ির দিদি সহেলির মার সামনেই ঋজু দুষ্টু-দুষ্টু
হেসে বলে বসলো ওর বৌ শিপ্রাকে,'তোমার ব্রা আনতে বলেছিলে না ? কত সাইজ যেন ?'
শুনে শিপ্রা হাঁ । সহেলির
মা খুব লজ্জা পেয়ে অন্যদিকে তাকাল ।
খুব বিরক্ত হয়ে শিপ্রা
বলে উঠলো ঋজুকে,'তোমার লজ্জা বলে কিছু নেই ? ওনার সামনে বল কীভাবে ?'
সেই দুষ্টু-হাসি মুখে ঋজু উত্তর দিলো,'যা বাব্বা ! আমি তো পোশাক ভেবেছি
। এতে আবার লজ্জা কী ? আমি তো ওপর থেকেই ছেড়ে দিয়েছি । তার কিছু বেশি কি ?’
সহেলির মা তখন লজ্জায় জড়সড় একেবারে । খুব গোপনে ইশারা করে চুপ থাকতে
বলল শিপ্রাকে ।
কিন্তু শিপ্রা রাগে গজগজ করতে-করতে বলল ঋজুকে,'এ আবার কেমন কথা ? ওপর
থেকে মানে ? সে আবার কী কথা ?’
ঋজু ফিক করে হেসে বলল,'সে কে না জানে । পোশাক কি শুধু ওপরের হয় ? ধুর,যুগের
সঙ্গে চলতে শিখলে না দেখছি । তা আনবো কি ?'
শিপ্রা বসেছিল সহেলির
মার পাশে ।
উঠে মাজায় হাত দিয়ে বলল সরোষে,'তোমার কিছুই আনতে হবে না । সে আমিই পারি
। দিদির সঙ্গে সঙ্গে যাবো । তুমি নিজের কাজে যাও দেখি ।'
‘কিন্তু তোমরা দুজনে কেমন করে বলবে পুরুষ দোকানদারের কাছে সাইজের কথা
? আমি বললে বেশ হয় না ?’
মজার সুরে ঋজু একথা বললে সহেলির মা এবার বলল শিপ্রাকে,'থামো তো এবার
। কোথাকার জল কোথায় গড়াবে তুমি জানো ? বরকে অন্য জায়গায় নিয়ে গিয়ে সাইজের কথা বল ।
এনে দেবে ।'
সাথে-সাথে ঋজু মুখে চাপা-হাসি নিয়ে বলে বসলো,'সে সাইজ দেখেই বুঝতে হবে
।'
'আরে,এসব কী বলছ তুমি
? পাগল হলে নাকি তুমি ?'
ঝাঁঝালো সুরে শিপ্রা
বলে বসলো ঋজুকে ।
কিন্তু ততোক্ষণে ঋজু এলোমেলো হাসতে- হাসতে ঘর ছেড়ে বারান্দা,বারান্দা
থেকে একেবারে বাড়ির বাইরে চলে গেছে ।
এরপর সহেলির মা একগাল হেসে বলল শিপ্রাকে,'আসলে আমি আছি বলেই তোমার বর
অমন কথা বলল । আসলে ওর দোষ না । এখনকার বররা খুব ক্লান্ত এক বৌতে । কিন্তু কিছুই করার
নেই । এক সুতোয় বাঁধা পড়ে গেছে । ছিঁড়তে চাইলে আইন আছে না ? বলে মজা আর কি । বলুক ।
এবার থেকে আমিও উত্তর দেবো খন । কি আর হবে তাতে ।'
শিপ্রা তার কথা শুনে রাগের মধ্যেও এক চিলতে হেসে ফেলে বলল,'বলে কিনা
ওপর থেকে ছেড়ে দিলাম ।'
সাথে-সাথে সহেলির মা টোল-পড়া-গালে হেসে উত্তর দিলো,'ওখানেই তো যত মজা
। আমাদের মজা হয় না বুঝি ? আসলে লজ্জায় বলতে পারি না আমরা । তাই না ?’
'তুমি এবার থামো,দিদি
। কোথা থেকে আবার চলে আসবে ।'
শিপ্রা একথা বলার পরেই দেখা গেলো ঋজু কানে ফোন দিয়ে বেশ গম্ভীর মুখে
ফিরে এলো ।
দুজন বেশ অবাক দেখে ।
সহেলির মা জিজ্ঞেস করলো
ঋজুকে,'কী হল,ঠাকুরপো ?'
'নাহ । তেমন কিছু না । এক বন্ধুর ফোন । কি একটা সমস্যা বুঝি । খুলে
কিছু বলল না । আমাকে একটু বেরোতে হবে এখন । তবে আমি ভুলছি না । আর একদিন কথা হবে ।'