তাহাদের কথা
একই পাড়ায়
বাস চার কাজের মাসীর । সকাল হলেই যে যার মতো কাজে বেরিয়ে পরে খুব ব্যস্ততার সঙ্গে । কাজের পথে দেখা হলে কথা হয় টুকটাক । তারপর বাড়ি-বাড়ি কাজের শেষে ওরা ঘরে ফিরে আসে । স্নান সেরে রান্না চড়ায় উনুনে । তারপর
খাওয়া-দাওয়ার শেষে একটু বুঝি ঘুম ।
তারপর
বিকাল আসে । সারাদিনের জমা কথা এক জায়গায় জড়ো হয়ে চারজন বলতে শুরু করে । কত কথা । কথার পর কথা । কথা যেন ওদের শেষই হতে চায় না । হাসির চেয়ে রাগ বেশী । রাগের সঙ্গে ঘৃণা ।
সবচেয়ে
বেশী কথা বলে নমিতামাসী । আর খুব হাসে । ও বুঝি কাজ করে সবচেয়ে সুখী । আসলে কি তাই ? নমিতামাসী
বলে দত্ত-বাড়ির মালিকের কথা । তার ঢুলুঢুলু চাউনি । মুখে হাসি তার লেগেই আছে । সামনে আসে বারবার । কাজের কথার
চেয়ে অকাজের কথা বেশী বলে । দূর থেকে দত্ত-বাড়ির বউটা দেখে চোখ কটমটায় । তবু নমিতামাসী ছাড়ার পাত্রী নয় । সেও কথা বলে
যায় তার সাথে । দেখতে চায় তার দৌড় ।
নমিতামাসীর স্বামী মারা গেছে সেই
কবে ।
খুব সুপুরুষ ছিল সে । কথাতেও ছিল সুচারু । মাসী মেলাতে চায় তার সাথে । কিছু মেলে । কিন্তু যেই বোঝে,আর কিছুই মিলছে না,তখন মনে মনে তার মুখে থুথু ছিটিয়ে কাজ সেরে বেরিয়ে পড়ে পথে ।
ফিরতে ফিরতে নমিতামাসীর চোখে জল আসে রোজ তার স্বামীর কথা ভেবে ।আবার ভাবে,ওদিকে বুঝি দত্ত-বাড়ির বউ ঝগড়া শুরু করেছে স্বামীর সঙ্গে । তা ভেবে নমিতামাসীর মুখে হাসি ফুটে ওঠে ।
খুব সুপুরুষ ছিল সে । কথাতেও ছিল সুচারু । মাসী মেলাতে চায় তার সাথে । কিছু মেলে । কিন্তু যেই বোঝে,আর কিছুই মিলছে না,তখন মনে মনে তার মুখে থুথু ছিটিয়ে কাজ সেরে বেরিয়ে পড়ে পথে ।
ফিরতে ফিরতে নমিতামাসীর চোখে জল আসে রোজ তার স্বামীর কথা ভেবে ।আবার ভাবে,ওদিকে বুঝি দত্ত-বাড়ির বউ ঝগড়া শুরু করেছে স্বামীর সঙ্গে । তা ভেবে নমিতামাসীর মুখে হাসি ফুটে ওঠে ।
বয়সে কিছু ছোট
বাকি তিনজনের থেকে দুলিমাসী খুব ঘৃণার সাথে বলে ঘোষ-বাড়ির বউয়ের কথা । সে বড় কিপটে । কত ছড়াছড়ি যায় । তবু তুলে দেবে না হাতে কিছু । খুব কাজ বুঝে নিতে চায় । তার কথা বলতে বলতে দুলিমাসী মাটিতে থুথু ছিটোতে থাকে । বাকি তিনজন ওকে সান্ত্বনা দেয় খুব ।
বলে,''ও আমাদের কপালে লেখা আছে রে । কষ্ট পাস না একদম ।''
বলে,''ও আমাদের কপালে লেখা আছে রে । কষ্ট পাস না একদম ।''
সবিতামাসী বলে যায়
প্রায় প্রতিদিন,''সেন-বাড়ির একটা ছেলে-মেয়েও মানুষ নয় গো । মা-বাবাকে মানতেই চায় না । মুখের সামনে কীসব যে কথা বলে । দেখে আমার গা-পিত্তি জ্বলে যায় । আমার পঞ্চুকে দেখো তো একবার তোমরা । কত
সুন্দর আমার কথা শোনে
। তবে বাবাকে পছন্দ করে না । আর করবেই বা কেন ? সে তো মাতাল । ছেলে আমার দেখছে না মার কষ্ট ? ওদের বাবা তো তা নয় ।''
তিনজন একসঙ্গে বলে হেসে-হেসে বলে সবিতামাসীকে,''বাদ দাও ওদের কথা । ওরা চকচকায়,তবে কেউ সোনা নয় । তুমি তোমার সোনার গোপাল নিয়ে সুখে থাকো ।''
তিনজন একসঙ্গে বলে হেসে-হেসে বলে সবিতামাসীকে,''বাদ দাও ওদের কথা । ওরা চকচকায়,তবে কেউ সোনা নয় । তুমি তোমার সোনার গোপাল নিয়ে সুখে থাকো ।''
একটু কম কথা বলে দুলালীমাসী ।
সব শোনার শেষে স্মিত হেসে বলে,''আমাদের যে কত সমস্যা । সেসব সমস্যায় আমাদের মন দেওয়াই ভালো । বাবুরা বাবুদের জায়গাতেই থাকবে । আমরা আরও অন্ধকারে নেমে যাবো । এ তাদের অভিশাপে নয় গো । ভগবান না কি বলে ? সেই আমাদের ভালো চায় না । চুপ কর সব ।''
সব শোনার শেষে স্মিত হেসে বলে,''আমাদের যে কত সমস্যা । সেসব সমস্যায় আমাদের মন দেওয়াই ভালো । বাবুরা বাবুদের জায়গাতেই থাকবে । আমরা আরও অন্ধকারে নেমে যাবো । এ তাদের অভিশাপে নয় গো । ভগবান না কি বলে ? সেই আমাদের ভালো চায় না । চুপ কর সব ।''
কিন্তু প্রতি বিকালে কথা চলতেই
থাকে ।
কত কথা । কথার পর কথা । কথা আর শেষ হতে চায় না ।
থামিয়ে দেয় শেষে প্রায় প্রতিদিন সেই দুলালী মাসী,''সন্ধ্যে হল না ? চল ,এবার ঘরের মঙ্গলের কথা ভাবি । প্রদীপ তো দেখাতে হয় ঘরে ।''
কত কথা । কথার পর কথা । কথা আর শেষ হতে চায় না ।
থামিয়ে দেয় শেষে প্রায় প্রতিদিন সেই দুলালী মাসী,''সন্ধ্যে হল না ? চল ,এবার ঘরের মঙ্গলের কথা ভাবি । প্রদীপ তো দেখাতে হয় ঘরে ।''
সবাই তখন
একসাথে সকালের ব্যস্ততার থেকেও বেশী ব্যস্ত হয়ে নিজেদের ঘরে ঢুকে পড়ে । রাত পেরোলেই আবার সকাল । সূর্যদেব তাদের চলতি পথে অদৃশ্য অন্ধকারে হাঁটার মন্ত্র শেখাতে থাকে ।