তাই বলছি কি ঠাকুর গাঁমুহানের খিল টাঁইড়টায় ইবার হামাকে বিরহি বুনতে দেন,যদি বাঁচ্যে বিত্তে থাকি, তাহিলে আদ্ধেক ভাগ আপনার।"
বাঁড়ুজ্জ্যে মশায়
জানেন একদা এই টাঁড়
লফরা রাজোয়াড়েরই ছিল। দাদন
শোধ করতে না পারার
কারনে জমির দখল নেন
বাঁড়ুজ্জে মশায়। সে অনেক
দিন আগের কথা। হাড়
জিরজিরে লফরাকে দেখে বাঁড়ুজ্জে
মশায়ের করুণা হয় এবং
সম্মতি দেন।
ছেলে বৌএর
কথা ভেবে হাল দেয়
লফর জান লড়িয়ে। ঢেলা
ভাঙে,
আগাছা পরিস্কার করে গোটা
দিন। রুখা মাটি মেখে
স্বপ্ন দ্যাখে, দশমন বিউলি
হলে পাঁচমন তার। চল্লিশ
টাকা দরে বিক্রি করলেও
আটহাজার টাকা। বীজ আর
হালের ধার শোধ করেও
পাঁচ হাজার টাকা। বৌএর
শাড়ী,
ছেলের জামা কাপড় আর
দুবেলার খাবারের জোগাড়টা হয়েই
যাবে।
বিউলির (বিরি)
ফলন দেখে আনন্দে মেতে
ওঠে লফর। সে ঘাড়
বাঁকাতে শেখেনি। তাই কাকে
ভোট দিয়েছে আর কাকে
দেয়নি সে কথা ভুলেও
ভাবে না।
ভাদ্রের ঠা ঠা রদ্দুরে ছেলে বৌকে নিয়ে আসে বিউলি ওঠাতে। আনন্দে চিৎকার করে,
"জয় বাবা গরমথানের জয়। পাঁড়কা কাড়ার গঢ়ারি খাওয়া ত হামার দ্বারা নাই হবেক, হামিই রগদাঁয় মারব্য। লাল, লীল, সবুজ হামি নাই বুঝি, পেট আর মাটির কিরা গতর ঠিক থাকলে কোন শালা ঢুঁসমাতে নাই পারবেক।"
চিৎকার করতে করতেই দমকে
দমকে কাশি ওঠে লফরের।
রক্তবমিতে রক্তাক্ত হয় বিরি
টাঁড়।ভাদ্রের ঠা ঠা রদ্দুরে ছেলে বৌকে নিয়ে আসে বিউলি ওঠাতে। আনন্দে চিৎকার করে,
"জয় বাবা গরমথানের জয়। পাঁড়কা কাড়ার গঢ়ারি খাওয়া ত হামার দ্বারা নাই হবেক, হামিই রগদাঁয় মারব্য। লাল, লীল, সবুজ হামি নাই বুঝি, পেট আর মাটির কিরা গতর ঠিক থাকলে কোন শালা ঢুঁসমাতে নাই পারবেক।"
সব বিউলি কেমন যেন রক্তলাল হয়ে ওঠে। গড়িয়ে পড়ে। ঠিক যেন বিউলির চোখে জল।