(১)
এই
পাহাড়ি জায়গায় দুদিন ধরে শুধু বিদ্যুতের ঝলক, বজ্রের
গর্জন আর অবিশ্রান্ত বৃষ্টি। ঘন্টা দুয়েক হলো প্রকৃতির আক্রোশ একটু কমের দিকে। চারটে
বাজে। রাতে ঠিক চারঘন্টা ঘুমোন স্বামী অগ্নিকায়। সারা হৃষিকেশ অঝোর বৃষ্টির আদরে নিদ্রামগ্ন।
কিন্তু গুরুর নির্দেশে ভোর সাড়ে চারটের মধ্যে প্রাথমিক ব্যায়াম করে, পূণ্যসলিলা গঙ্গাতে স্নান সেরে ধ্যানে বসেন স্বামী অগ্নিকায়। গত বিশ বছর
ধরে তাই করে আসছেন। বিশ বছর। দেখতে দেখতে বিশ বছর কেটে গেলো? সন্ন্যাসীর পূর্বাশ্রমের স্মরণ নিষিদ্ধ, তবু কেন
আজ হঠাৎ মনে ভেসে উঠলো মায়ের মায়া ভরা অপূর্ব সুন্দর সেই আয়ত চোখ দুটো। মানুষের আসল
সৌন্দর্য তো তার চোখে। আর সেই হিসেবে দেখলে তাঁর মা তো বিশ্বসুন্দরী। অমন
চোখ জগতে কি আর কারো আছে? স্বামী অগ্নিকায়ের গৌর
সুঠাম সুদীর্ঘ শরীর, অপূর্ব মুখশ্রী, সুন্দর তীক্ষ্ম নাসা
সব হার মেনে যায় তাঁর দুই চোখের কাছে। অবিকল তাঁর মায়ের প্রতিরূপ। মিশন থেকে স্ট্যান্ডকরা,
দিল্লি আই আই টি-র সোনার পদক পাওয়া ছেলে
কেন, কিসের খোঁজে পরিব্রাজক? ঠিক
কুড়ি বছর আগে সেদিন কিন্তু হৃষিকেশের এই আশ্রমের মোহান্ত স্বামী অগ্নিশ্বর সেই প্রশ্ন
করেননি, বরং প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন। কিছু বলার আগেই বলেছিলেন
- ‘বেটা, ম্যায় বচন দেতা হুঁ, যানে সে পহলে, তুঝে সব দে কর, মালিকসে মিলায়েঙ্গে জরুর। ইয়ে মেরা বচন। প্রাণ যায়ে পর বচন না যায়ে।’
সেই
থেকে গুরুর দেওয়া পরিচয়ে নতুন জন্ম স্বামী অগ্নিকায়ের। এক সাথে সাধনা আর আরাধনার শুরু।
কারণ এই তপস্যা, এই শিক্ষা পুরোটাই গুরুমুখী,
গুরুর দান। এখন তিনি অনেক ওপরের স্তরে। গুরুজি বলেন - ‘যিতনা উমিদ থা, তু উসসে জাদা হি নিকলা। লাগতা হ্যায়
ওয়াক্ত আনেবালা হ্যায়। মালিক সে তেরা দর্শন জলদি হি হোগা।’ চুরাশি বছরের গুরুজি এখন একা পায়ে হেঁটে গেছেন অনেক ওপরে হিমালয়ের এক গোপন
গুহায়, তপস্যায়। পরের বার তাঁর একমাত্র সঙ্গী হওয়ার অধিকার
দিয়েছেন স্বামী অগ্নিকায়কে আর সর্বত্র, সবাইকে জানিয়ে দিয়েছেন,
তাঁর দেহ রাখার পর, বিশাল এই বেদান্ত মঠ,
যোগাশ্রম সব দেখবেন পরম প্রিয় শিষ্য স্বামী অগ্নিকায়। যদিও এই নিয়ে
মোটেই প্রীত নন আশ্রমের অলিখিত দ্বিতীয় প্রধান ষাটোত্তীর্ণ স্বামী অগ্নিতীর্থ,
যিনি এই আশ্রম চালান, টাকাপয়সার হিসেব রাখেন।
আশ্রমের খরচপত্র তাঁর হাতেই হয়। তাঁর ইচ্ছা আশ্রম শুধু সাধন স্থান নয়, এক প্রতিষ্ঠান হিসাবে বড় হোক। দেশে বিদেশে ছড়িয়ে পড়ুক। টাকা পয়সা ক্ষমতায়
সবচেয়ে উপরে থাকুক এই যোগাশ্রম। শুভ্র শ্মশ্রু-গুম্ফ-কেশ শোভিত গুরুজি স্বামী অগ্নিশ্বর এসবের কোনো খবর রাখেন না। তিনি মগ্ন
বেদ, বেদান্ত, পূজাপাঠ আর শ্রীমদ্ভাগবত
গীতার ভাষ্যে। বাকি সময় ধ্যান আর যোগাভ্যাসে। আশ্রমের নিয়ম অনুযায়ী, আশ্রম প্রধান হিসেবে শুধু গুরুজি-ই চুল দাড়ি গোঁফ
রাখতে পারেন, বাকিরা মুন্ডিত মস্তক, শ্মশ্রু-গুম্ফহীন।
আজ
যেন হঠাৎ বিজুরি ঝলকের মতো ঝলসে উঠলো খবর পেয়ে বিশ বছর আগে এই আশ্রমে ব্রহ্মচর্যরত
পুত্রকে দেখতে মায়ের প্রথম ও শেষ আসার দিনটা আর শান্ত ধীর কন্ঠে মায়ের বলা কথাগুলো
- ‘বাবুসোনা,
তোমার বাবা আমাকে গভীর ভাবে ভালোবাসতেন, তবুও আমাকে ছেড়ে গেছেন। নিয়তির দেওয়া সেই কঠিন শোক আমি তোমার মুখ চেয়ে মাথা
পেতে সয়েছি। ধীরে ধীরে আমার আঘাত সহ্যের ক্ষমতা আরো বেড়েছে। ভেবোনা আমি তোমাকে ফেরাতে
চাই বলে এসব বলছি। কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে আসিনি। তুমি সবসময়ে তোমার মনের নির্দেশে
চলেছো। আমি আজ পর্যন্ত তোমার কোন ইচ্ছাকে অবজ্ঞা করিনি। তোমার মন যা চায় তাই করো। আমি
শুধু তোমাকে আশীর্বাদ জানাতে এসেছি। তোমার অনুভূতি জাগুক, উপলব্ধি আসুক।’ সেদিন মায়ের চরণ স্পর্শ করার সেই
অনুভব আজ বিশ বছর বাদে যেন হঠাৎ ফিরে এলো।
সন্ন্যাস
নেওয়ার পর বিশ বছর কেটে গেছে। মা আর আসেনি, কোন খবরও
দেয়নি। সন্ন্যাসীর পূর্বাশ্রমের সংশ্রব বা সংবাদ রাখা নিষিদ্ধ, তাই স্বামী অগ্নিকায়ও কোনো খোঁজ রাখেননি। আর প্রয়োজনও নেই। কলকাতায় তাঁদের
বনেদী বিশাল বসতবাটিকে লোকে রাজবাড়ি বলে জানে। আত্মীয়স্বজন প্রচুর। অভাব নয়,
বরং ঐশ্বর্যের প্রাচুর্য আর প্রাবল্যই ছোট থেকে দেখা। এখানকার অনাড়ম্বরতার
সঙ্গে তার কোন তুলনা চলে না।
বৃষ্টিতে
পথ সামান্য পিছল। খড়ম পরে যেতে কোন অসুবিধা নেই তাঁর। অভ্যাস হয়ে গেছে। এখন খড়মেই স্বচ্ছন্দ।
গঙ্গার তীরে এসে দেখলেন অনেক গুলো ধাপ ডুবে গেছে। জল বেড়েছে। হয়তো বন্যা হয়েছে। বন্যা,
ভূমিকম্প, মহামারি যাই হোক না কেন স্বামী অগ্নিকায়
গুরুজির নির্দেশ অমান্য করতে পারবেন না। পৃথিবী উল্টে গেলেও না। ঘাটের কাছে খড়ম রেখে
আস্তে আস্তে জলে নামলেন। গলাজলে দাঁড়িয়ে চোখ বুজে মনে মনে শুরু করলেন গঙ্গা স্তব। এই
গলাজলে দাঁড়িয়ে রোজ স্তব প্রার্থনা করেন, যতক্ষণ
না ঊষার আলোয় প্রথম পাখিটি ডেকে ওঠে। তারপর গৈরিক বস্ত্র তীরে রেখে, কৌপীন পরে জলে ডুব দিয়ে একবার গঙ্গার এপার ওপার করে সিক্তবস্ত্রে আশ্রমে
ফিরে যাওয়া। এই রুটিন রোজকার হলেও, আজ গঙ্গার রূপ ভয়ঙ্করী।
কিছু কিছু মৃত গবাদি পশু জলে ভেসে যাচ্ছে। স্তব শেষ করে ডুব দিতে যাবেন, এমন সময় ঘাড়ের কাছে কি যেন একটা ঠেকলো।
(২)
আশ্রমে
হৈচৈ পড়ে গেছে। প্রচন্ড রেগে গেছেন স্বামী অগ্নিতীর্থ। গঙ্গায় স্নান করতে গিয়ে স্বামী
অগ্নিকায় ফিরেছেন মাথায় একটা হাওয়ায় ফোলানো বাথটাব নিয়ে। তার মধ্যে বাচ্চার জামাকাপড়
আর - আর একটি ছ সাত মাসের ফুটফুটে শিশুকন্যা। গোলাপি
রং লাল হয়ে গেছে প্রচন্ড জ্বরে, নেতিয়ে অঘোর। বোঝা যাচ্ছে
জল বাড়ছে দেখে শিশুটিকে মাথায় নিয়ে তার বাবা-মা হয়তো উঁচু
জমির খোঁজে বেরিয়ে
পরেছিল, কিন্তু উন্মত্ত বন্যার জলে সলিল সমাধি হয়েছে তাঁদের
আর ভেসে গেছে বাচ্চাটা। গুরুজির কাছ থেকে অনেক বন্য ওষধি ও তার প্রয়োগ অধিগত করেছেন
অগ্নিকায়। কিছু ওষধি পাতা তুলে খলনুড়িতে বেটে লাগিয়ে দিলেন শিশুর কপালে। কিছুক্ষণের
মধ্যেই উত্তাপ নেমে আসবে। এবার একটু দুধের ব্যবস্থা করতে হবে। একটা ফিডিং বটলও চাই।
একটা কাগজে কি কি চাই লিখে পাঠালেন স্বামী অগ্নিতীর্থর কাছে। কৌতূহলী হয়ে তিনি নিজে
এসে হাজির ঘটনার বিশদ বিবরণ জানার জন্য। তার পরেই বিস্কোরণ। এই আশ্রমে কোনো মেয়ের স্থান
নেই। এখনই বিসর্জন দিয়ে আসতে হবে এই আবর্জনা। শান্ত ভাবে সব শুনে অগ্নিকায় মৃদু হেসে
জানালেন গুরুজির নির্দেশ ছাড়া তিনি কারো কথা শুনতে রাজি নন। আর দুধ ও অন্যান্য সরঞ্জাম
তাঁর এখনই চাই।
জ্বর
কমেছে। দুধ খেয়ে শিশু চোখ মেলে একদৃষ্টিতে অগ্নিকায়ের দিকে তাকিয়ে হাসছে। শিশুর মাথায়
হাত বুলোতে বুলোতে তিনি বললেন -
‘তোর নাম দিলাম দেবাদৃতা।’ উত্তরে দেবাদৃতা
তাঁর আঙুল শক্ত করে ধরে হেসে উঠলো। আর এক বয়স্ক আশ্রমিক বাচ্চাটাকে দেখতে এসে নাম দিলেন
সীতামা। অগ্নিকায় বললেন- ‘ঠিক আছে। আজ থেকে আপনারা ঐ নামেই
ওকে ডাকবেন।’
বৃষ্টি
থেমেছে। নেমেছে বন্যার জলও। এই কদিনে সীতামা অগ্নিকায়কে খুব চিনেছে। একদৃষ্টে তাকিয়ে
থাকে তাঁর দিকে, তিনি ফিরলেই খিলখিলিয়ে হেসে হাত পা
ছুঁড়তে থাকে। তিনি আঙুল বাড়ালেই চট করে ধরে নেয় আর ছাড়তে চায় না। তিনি দুধের বোতল বাড়িয়ে
দিলে দুহাতে ধরে চুকচুক করে খেয়ে নেয়। তিনি ঘুম পাড়াতে বুকে তুললে তাঁর গলা জড়িয়ে ধরে
ঘুমিয়ে পড়ে। তিনি দেবাদৃতা বলে ডাকলে তাকিয়ে হাসে। তিনি সীতামা বললে হাত পা ছুঁড়ে হেসে
ওঠে। তিনি কাছে আসলে পাশ ফিরে তাঁর কাছে আসতে চায়। তিনি পাশে শুয়ে থাকলে ‘আআ উবুবু‘ আওয়াজ করে তাঁকে জাগিয়ে রাখে।
(৩)
সাতদিন
পর গুরুজি আজ ভোরে আশ্রমে ফিরেছেন। সবাই সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করছে,
তবে দূর থেকে। গুরুজি কে এখন স্পর্শ করা যাবে না। কথাও না। এ সময়ে
তিনি মৌণব্রত পালন করেন। তিনি দূর থেকে সবাইকে আশীর্বাদ করে নিজের ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ
করে দিলেন। দ্বিপ্রাহরিক বিশ্রামের পর আবার স্বাভাবিক হবেন। গুরুজির আহার বলতে সারাদিনে
যে কোন একটি ফল। রাতে কিছু না।
অগ্নিকায়ও
পরিমিত আহার করেন। দিনে ফলমূল, রাতে একটি রুটি ও
ডাল। সারা বছরে কোন পরিবর্তন নেই। রাতের খাওয়া তাড়াতাড়িই সারা হয়ে যায়। তারপর মন দেন
বেদপাঠে। আজ অবশ্য সীতামার চোখে ঘুম নেই। খালি হাত পা নাড়ছে আর আপন মনে হেসে যাচ্ছে।
রাত দশটা নাগাদ মুখেচোখে চাপা উল্লাস নিয়ে স্বামী অগ্নিতীর্থ নিজে এসে জানালেন গুরুজি
ঠিক বারোটায় দেখা করতে বলেছেন। বোঝাই যাচ্ছে সীতামার কথা স্বামী অগ্নিতীর্থ নিজের মত
করে গুরুজিকে বুঝিয়েছেন। হয়তো বিতাড়নের ব্যবস্থাও পাকা হয়ে গেছে।
ঠিক বারোটায় অগ্নিকায় গুরুজির ঘরে প্রবেশ করলেন।
ব্যাঘ্রচর্মাসনে মেরুদণ্ড সোজা করে বসে আছেন গুরুজি।
- ‘আকেলা
কিঁউ? বেটি কো লে আ।’
প্ল্যাস্টিকের
হাওয়া ফোলানো বাথটাবে সব জামাকাপড় সহ দেবাদৃতাকে মাথায় করে নিয়ে গুরুজির পায়ের সামনে
নামিয়ে রাখলেন অগ্নিকায়। ঘুমের মধ্যেও হাসি অম্লান। গুরুজি তার কপালে আঙুল স্পর্শ করে
অগ্নিকায়কে বললেন - ‘ইয়ে কিসকো লায়া হ্যায়
তু? সাকসাত মায়া। তু ইতনা নজদিক আ গ্যয়া। বেটা ইসে ত্যাগ দেনা
পড়েগা। আকেলা তু ইধার রহ্ সকতা। নেহি তো তুম দোনোকো আশ্রম ছোড়না পড়েগা।’
- ‘ইসে ক্যা করু, গুরুজি?’ সপ্রশ্ন চোখে তাকালেন গুরুজির চোখে।
- ‘ঠিক
জ্যাইসে আই থি, অ্যাইসা হি যানে দে।’ তারপর ঠোঁটের কোনে এক রহস্যময় মৃদু হাসি হেসে বললেন - ‘নেহি তো তুম দোনোকো যানা পড়েগা ইধারসে।’
- যো আজ্ঞা
গুরুজি” বলে সীতামাকে তুলতে যাবেন, গুরুজি স্মিত হাসি হেসে বললেন - ‘আ মেরা পাশ। বৈঠ
ইধার। ওয়াদা কিয়া থা জানে সে পহলে, তুঝে উনসে মিলায়ুঙ্গা।
আগর ও না হো পায়ে তো মেরেকো জিতনা মিলা উতনা তো দে সকুঁ। কেয়া জানে কব মালিক বুলায়ে।’
সীতামাকে পাশে সরিয়ে গুরুজির চরণে প্রনত হলেন
অগ্নিকায়।
একটি
পাখি ডেকে উঠলো। আরো একটি। আরো, আরো। পাতা ঝরার মর্মর
ধ্বনি নিয়ে স্তব্ধ রাত্রি ভিজে যাচ্ছে পাখির কলকাকলিতে। তমসাভেদী অরুণাভা ছড়িয়ে ধীরে
ধীরে প্রকাশিত হচ্ছেন আলোর দেবতা। ‘ঔঁ জবাকুসুম সঙ্কাশং….।’ অগ্নিকায় ধীরে ধীরে গঙ্গার জলে ভাসিয়ে দিলেন প্ল্যাস্টিকের হাওয়া ফোলানো
বাথটাব। সঙ্গের গৈরিক ঝোলায় রয়েছে একটি গীতা, আশ্রম থেকে পাওয়া
বেবি ফুডের কৌটো আর ফিডিং বটল, বাচ্চার সাথে ভেসে আসা জামাকাপড়,
কৌপীন ইত্যাদি। পরিধানের দ্বিতীয় বস্ত্রখন্ডে ঘুমন্ত দেবাদৃতাকে শুইয়ে
পিঠে বেঁধে নিলেন সন্ন্যাসী। ঘুমের মধ্যেও সীতামা তাঁর গলা জড়িয়ে ধরলো। ঝোলাটা কাঁধে
ঝুলিয়ে, পথ চলার সঙ্গী তাঁর পুরনো পরিব্রাজক লাঠি হাতে নিয়ে,
কপর্দকশূন্য সন্ন্যাসী মনে মনে গুরুজিকে প্রণাম করে, অলব্ধ ঈশ্বর উপলব্ধির থেকে মুখ ফিরিয়ে এগিয়ে চললেন সূর্যাভিমুখে,
তাঁর পূর্বাশ্রমের দিকে। ঈশ্বরের আবিষ্কারে।