গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

বৃহস্পতিবার, ২৬ মার্চ, ২০১৫

উৎসব দত্ত


গর্বিত মা

অফিসের পার্টিতে নিমন্ত্রিত অভীক বোস স্ত্রীকে নিয়ে এসেছেন । আরও অনেক সহকর্মীর গিন্নিরাও এসেছেন। মিসেস মিত্রকে দেখে এগিয়ে গিয়ে কথা বলতে শুরু করলেন মিসেস বোস।
- আরে মিসেস মিত্র ক্যামন আছেন? এই জানেন তো আমার ছেলে টেক্সাস যাচ্ছে। ওদের অফিস থেকে পাঠাচ্ছে। ওর ইচ্ছে আছে ওখানেই পাকাপাকি ভাবে থেকে যাওয়া। আমার আর ওর বাবারও সেরকমই ইচ্ছে। বাবুকে তো আমি চিনি ওর ছোটবেলার স্বপ্ন আমেরিকা যাবে। ওখানেই থাকবে।
মিসেস বোস কে থামিয়ে মিস্টার বোস বলতে শুরু করলেন ছেলেকে আজ এই জায়গায় আনতে প্রচুর ইনভেস্ট করেছি। সব চেয়ে ভালো ইন্সটিটিঊশানে পড়িয়েছি । আরে বাবা  কার ছেলে দেখতে হবেতো !
মিস্টার বোসের কথা কেড়ে নিয়ে মিসেস বোস আবার বলতে শুরু করলেন -
-আমার বাবু পড়াশোনায় বরাবরই ভালো ক্লাসে ফার্স্ট ছাড়া সেকেন্ড কোনোদিন হয়নি। ওর বন্ধুরা তো ওকে নিয়ে পাগল। এই বিদেশ যাওয়ার খবরটা শুনে সবাই কি ভীষণ খুশি। কজন এই সুযোগ পায় বলুন তো ।

মিস্টার অ্যান্ড মিসেস বোসের কথা গুলো চুপ করে মন দিয়ে শুনছিলেন মিস্টার অ্যান্ড মিসেস মিত্র। এতক্ষণ ধরে চুপ করে শোনার পর কোন প্রত্যুত্তর না পেয়ে মিসেস বোস কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে স্বগোতোক্তির স্বরে হাসব্যান্ডকে বললেন "অ্যায়ই এবার চলো। "
মিসেস বোস চলে যেতে মিস্টার মিত্র বিরক্ত হয়ে মিসেস মিত্রকে বললেন
-তুমি চুপ করে সব শুনলে একটা কথাও বললেনা। যে ছেলে জার্মানি যাওয়ার অফার ছেড়ে সরকারি হাসপাতালে ডাক্তারি করে তার মায়ের তো গর্ব হওয়া উচিত। তুমি কিছু বললেনা ক্যানো?
এতক্ষণ চুপ করে থাকার পর মিসেস মিত্র হাসতে হাসতে বললেন
-বোবা কালার কোনো শত্রু নেই কেউ হিংসে করেনা । মাঝে মাঝে কালা কিম্বা বোবা হলে ক্ষতি কি ।