ইন্টারন্যাশানাল ডিপারচারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সুপ্রতীম। সেদিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে শ্রীতমার মনে পড়ে যাচ্ছে অনেক কিছু । সেই কলেজ দিন গুলোর কথা, তারপর পাঁচ বছর প্রেম । আমেরিকা যাবার আগে সুপ্রতীম যখন তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিল,একটা দোটানা তার মনটাকে এমনভাবে নাড়া দিল,সে কিছুতেই হ্যাঁ করতে পারল না । তা না হলে তারা দুজনে একসাথে হাতধরে এগিয়ে যেত ঐ ডিপারচার গেটের দিকে।
ভালবাসার জন্য
লোকে কত কিছুই ত্যাগ করে অথচ সে কোনও
কারণে ছেড়ে
যেতে পারবে না ওদেরকে । সুপ্রতীম অবশ্য জোর
করেনি । শ্রীতমা
তার কাছ থেকে কিছুটা
সময় চেয়ে নিয়েছে ।
সেও কোনওভাবে জোর করেনি
সুপ্রতীমকে এদেশে থেকে
যাবার জ ন্য।
সুপ্রতীম পৌঁছে গেছে
ডিপারচার গেটে । এতক্ষণ একবারের
জন্য পিছন ফিরে তাকায়নি ।
গেটে পৌঁছে হাতব্যাগটা সিকিউরিটি
চেকে দেবার আগে একবার
হাতটা আলগোছে তুলল । চোখ দুটোতে
একরাশ অভিমান এতদূর থেকেও
টের পেল শ্রীতমা । এরপর
সে নিজেকে কোনওরকমে
সংযত করল ।
একটা কান্নার দলা তার গলার কাছে আটকে
আছে। সেটাকে কোনমতে গিলে
সে হনহন করে হাঁটতে
লাগল ট্যাক্সিসট্যান্ডের দিকে । তাকে
এক্ষুনি
পৌঁছতে হবে বাড়িতে সেখানে
অপেক্ষা করছে
তার ক্যান্সার আক্রান্ত বাবা
আর অথর্ব মা ।
গাড়ীতে বসে
সে তাকাল আকাশের দিকে
। ঝমঝম করে বৃষ্টি
পড়ছে । ধূসর বিষন্ন আকাশে
বৃষ্টির ওড়না ছিঁড়ে উড়ে
যাচ্ছে প্লেনটা । সেদিকে তাকিয়ে
থাকতে থাকতে শ্রীতমা মনে মনে বলল,সুপ্রতীম অপেক্ষা কোরো
নয়তো বন্ধু হয়েই থেকে
যেও সারাজীবন।