ঈশ্বর ! ঈশ্বর! বিদায়
কার যেন ডাকে কেঁপে ওঠে—বাদুড়বাগানের মধ্যরাত ।
বাইরে শ্রাবণের শব্দ । নিবুনিবু আলোতে ঘরের কানাচে ভূতভূত ছায়া ।বৃষ্টিতে , বিদ্যুতে নিভে যেতে যেতে জ্বলে ওঠে – রাত দুটো আঠারো মিনিট !
:ঈশ্বর , আমরা এসেছি । বিদায় তাহলে – বিদায় ..
ঈশ্বরের চোখ খোলাই ছিল , এখন শুধু ওই চোখে চিৎ আলোটি ফিরে আসে ক্ষণিকের জন্যে । কিছু একটা খোঁজেন বা খোঁজার চেষ্টা করেন । উঠে বসে আধশোয়া হন ঈশ্বর।
তারপর একে একে বিদায় জানান –শ্লোকমঞ্জরী। বর্ণপরিচয়। ঋজুপাঠ। বেতাল পঞ্চবিংশতি । শকুন্তলা । সীতার বনবাস ।
আঙুল নেড়ে বিদায় জানান ঈশ্বর । এই সময় কোলে এসে বসে আদুরে কমা । বসে বসে লেজ নাড়ে । কোলন দুইচোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে । বন্ধনীতে ওম পোহায় প্রশ্ন বোধক – আশ্চর্য’রা ।
:বিদায় যতি , বিদায় !
কিন্ত ঈশ্বর ইতিউতি তাকান । কাকে যেন খোঁজেন । দেখেন দরজায় দাঁড়ানো সে— দাঁড়ি ।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মুচকি হেসে চোখ বোজেন ।
৭০ বছর ১০ মাস ৩ দিন । দাঁড়ি , দাঁড়ি টেনে দেয় ।
! সবার চোখে জল ।
জুলেখার বাপ
জল-ছপছপ-করা নদীঘাটে বসে বসে ঝিমায় জুলেখার বাপ । কাঁদায় পোতা লগিতে বাঁধা কোশা নাও । কমবেশি ছলাত ছলাত শব্দে উঠা নামা করে আলকাতরা-ঘষা গলুই ।
ছানি পড়া চোখে দুরে তাকায় ।পায়ে হাঁটা পথ পড়ে আছে একা একা ।পৌষের ওশে ভেজা ।কেউ নেই ।খেয়াঘাট জনমনুষ্যহীন । কলার কাঁদি হাতে কাজীবাড়ির তুজাম মিয়া হাটখোলায় যায় ।গিরা পানি ভেঙে ।
পাশে, ভেসাইলে বসে মাছ মারে হাসমত । বলে – জুলেখার বাপ , গাঙ শুকাইয়া খাল— তুমি এহনো নাও নিয়া আছো ? গাঙ পারাপারের লোক পাইবা কই মিয়া ?
জুলেখার বাপ কথা বলে না । ভেতরে ভেতরে হাসে । বৈঠার হাতলে হাত রাখে ।
হাসমত আবার বলে- জুলেখার বাপ , মাছ মারো । জোলা পাড়ার লগে যোগ দ্যাও । একখান ঝাঁকি জাল নিয়া নাইমা পড় মিয়া । মিঠা পানিতে কালি বাউস মারো ।
হাসমত ভেসাইল ওঠায় । জালে অনেক কালি বাউস ধরা পড়েছে ।
জুলেখার বাপের মন কেমন করে ওঠে ।চোখের কোনে যেন আরও পিঁচুটি জমা হয় ।আজো কি চুলা জ্বলবে না !
হা হুতাশে মন ভারী হয় তার । ভাবে, জুলেখা আর কতদিন ‘না না’ করবে? চেয়ারম্যানের পোলা যে পেছন লেগেই আছে । বাড়ির পাশেই যে নিরালা শ্যালো মেশিনের ঘর । ওইখানে ডাক পাড়ে জুলেখারে । খিদে যদি চিত হয়ে পড়ে যায় চাটাইয়ে— তবে ?
ভাবে , জুলেখার বাপ । ভাবতে থাকে ।
ছানি পড়া চোখে দুরে তাকায় ।পায়ে হাঁটা পথ পড়ে আছে একা একা ।পৌষের ওশে ভেজা ।কেউ নেই ।খেয়াঘাট জনমনুষ্যহীন । কলার কাঁদি হাতে কাজীবাড়ির তুজাম মিয়া হাটখোলায় যায় ।গিরা পানি ভেঙে ।
পাশে, ভেসাইলে বসে মাছ মারে হাসমত । বলে – জুলেখার বাপ , গাঙ শুকাইয়া খাল— তুমি এহনো নাও নিয়া আছো ? গাঙ পারাপারের লোক পাইবা কই মিয়া ?
জুলেখার বাপ কথা বলে না । ভেতরে ভেতরে হাসে । বৈঠার হাতলে হাত রাখে ।
হাসমত আবার বলে- জুলেখার বাপ , মাছ মারো । জোলা পাড়ার লগে যোগ দ্যাও । একখান ঝাঁকি জাল নিয়া নাইমা পড় মিয়া । মিঠা পানিতে কালি বাউস মারো ।
হাসমত ভেসাইল ওঠায় । জালে অনেক কালি বাউস ধরা পড়েছে ।
জুলেখার বাপের মন কেমন করে ওঠে ।চোখের কোনে যেন আরও পিঁচুটি জমা হয় ।আজো কি চুলা জ্বলবে না !
হা হুতাশে মন ভারী হয় তার । ভাবে, জুলেখা আর কতদিন ‘না না’ করবে? চেয়ারম্যানের পোলা যে পেছন লেগেই আছে । বাড়ির পাশেই যে নিরালা শ্যালো মেশিনের ঘর । ওইখানে ডাক পাড়ে জুলেখারে । খিদে যদি চিত হয়ে পড়ে যায় চাটাইয়ে— তবে ?
ভাবে , জুলেখার বাপ । ভাবতে থাকে ।