বাবার বদলীর সূত্রে ভুবনেশ্বরের আগের বাড়ী ছেড়ে এসেছি আড়িয়াদহের গঙ্গারধারের দোতলা ভাড়াবাড়ীতে। চারপাশটা এখনও সবুজ গাছগাছালিতে ঢাকা। ভোরবেলা পাখির কিচিরমিচির এখানে নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। বাড়ীর ছাদের একটেরে চিলেকোঠার ঘরটা এখন আমার একার। শুনতে চিলেকোঠা হলেও বেশ বড় আর আরামদায়ক ঘরটা। বাড়ির আগের ভাড়াটের গুচ্ছের হাবিজাবি জিনিষে ভরতি ছিল। কালই মা লোক ডেকে সাফাই করিয়েছে। একটা লাল ভেলভেট টাইপের কভার দেওয়া পুরোনো খাতার মত কি একটা পড়েছিল মেঝেয়।কিছু না ভেবেই তুলে নিয়েছিলাম। খুলে দেখি পাতাগুলো হলদেটে হয়ে গেছে, তাতে কোন এক নাম না জানা লোকের কিছু চিঠির খসরা লেখা আছে। অধিকাংশ পাতাই খালি, মাঝেসাঝে দু’ একটি পাতায় কাটাকুটি করে লেখা রয়েছে কয়েকটি খসরা চিঠি। কোন চিঠিতেই লেখকের নাম নেই। সব কটি চিঠিই জনৈকা ‘সাবি’কে উদ্দেশ্য করে লেখা।
চিঠি আর খসরা ডায়েরীর মধ্যবর্তী আত্মকথন। একটা মানুষের নিজের চোখে দেখা নিজের প্রতিফলন।
যেমন ১২ পাতার চিঠিটায় ছিল
“সাবি,
আজ আবার আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি নেমেছে। তুমি যেরকম উথালপাথাল ঝোড়ো বৃষ্টি ভালবাসো ঠিক সেইরকম। ঘোর লাগা দৃষ্টিতে আমি দেখতে পাচ্ছি পুরো শহরটা যেন জলরঙে আঁকা হয়েছে ।সব আগের মত আছে সাবি শুধু তুমি নেই। দেখো না বৃষ্টি তে স্নান করে গাছের পাতার রঙ কি রকম চোখ ধাঁধানো সবুজ ! ঠিক যে রঙের শাড়ী পড়তে তুমি ভালবাসো, ঠিক সেইরকম ,
আমি বহুদিন সবুজ দেখিনি
বহুদিন সবুজ স্পর্শ করিনি
বহুদিন সবুজ অনুভব করিনি ।
বহুদিন সবুজ স্পর্শ করিনি
বহুদিন সবুজ অনুভব করিনি ।
বলেই আমি চমকে উঠলাম । এক গভীর অপরাধবোধ আমাকে ঘিরে ধরলো । আমি সামান্য সময়ের জন্য ভুলে গিয়েছিলাম যে আমি অস্পৃশ্য , আমি নষ্ট মনের ভ্রষ্ট চরিত্রের একজন মানুষ । আমি একজন অপরাধী,ভয়ংকর খুনী, খুন করেছি আমার ভালোলাগাদের, আার একান্ত ভালোবাসাকে। আজও প্রতিনিয়ত কেমন অবলীলাক্রমে খুন করে যাচ্ছি আমার জীবন এবং স্বপ্ন । আমি তো এমন ছিলাম না , তুমি আমায় একটু ছুঁয়ে দেবে সাবি? ঠিক আগের মত ভালবেসে? আদর করে? আমার পরশপাথর তুমি। তোমার ছোঁওয়ায় আবার সোনা হয়ে উঠবো আমি।“
চিঠি এখানেই শেষ। তারপর সাদা পাতা কয়েকটা। অপটু হাতের এক মহিলার স্কেচ কয়েকটা, দু’ একটি অসমাপ্ত কাটাকুটি ভরা কিসব লেখা, রবিঠাকুরের রাহুর প্রেম কবিতার খন্ডাংশ । আবার ৩৭ পাতায় মোটামুটি পড়া যাচ্ছে,
“একরাশ মল্লিকার ভালোবাসা নিও, সাবি, আমার সাবুসোনা। তোমাকে আজ এক নতুন নামে ডাকলাম। নিত্য নতুন নামে তোমায় ডাকা আর নিত্য নতুন করে তোমার প্রেমে পড়া। কতদিন হয়ে গেছে তোমার হাত ছুঁইনি ,গালে গাল ঠেকাইনি, কোলে মাথা রেখে শুইনি, নরম গোলাপী ভেজা ভেজা ঠোঁটদুটোতে আলতো করে চুমু খাইনি, আঙ্গুল গুনে তিন বছর, আট মাস, বারো দিন। জানি-আমার এ লেখা তোমার পড়ার বা দেখার সুযোগ নেই। তবু স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি তোমার নূপুরের চেনা সুর., নিশ্বাস ভরে উঠছে তোমার সুগন্ধী মেয়েলি ঘামে , আমার চুলে তোমার চাঁপার কলির মত আঙ্গুলের স্পর্শ গুলো গুটি গুটি পায়ে চুপিসাড়ে ফিরে আসছে আলো আঁধারে, আমি বেশ বুঝতে পারছি , তোমার সতীন, ঐ রঙিন বোতলের গলানো আগুন বিষ আমার শিরায় ছড়িয়ে পড়ছে, আমার নেশা ধরে যাচ্ছে । ফিরে এসো সাবি।“
পরপর এই রকম ছন্নছাড়া এক একলা মানুষের কথা, বা গল্প। কোন এক সাবিকে লেখা মনের একান্ত গোপন অনুভব। ভালোলাগা ভালোবাসার কোলাজ।মনটা পড়তে পড়তে ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে। এক প্রেমিক মানুষের আর্তি, চেয়ে না পাওয়ার আকুতি, প্রিয়জনের অদর্শনের দুঃখ, মন ছুঁয়ে যায়। জানি অন্যের ব্যক্তিগত জীবনে উঁকি দেওয়া উচিত নয়। চিঠি পড়াটা তো আরো গর্হিত কাজ। তবু কেমন নেশা লাগে। নিজেকে শোধরাতে পারিনা। পাতার পর পাতা উল্টে চলি।খাতার মাঝামাঝি এসে চোখ আটকে যায়। ১০৫ পাতা।
“সাবি,
তুমি আমার সাথেই তো আছো। অথচ আমি কি বোকা দেখ, বুঝতেই পারিনি। আমার নিঃশ্বাসে আমার অনুভবে আমার দৃষ্টিতে , কোথায় নেই তুমি? আমার সাথেই তো আছ, ছায়ার মত। জানো তো, সবাই কিন্তু কথা দিয়ে কথা রাখতে পারে না, কিংবা এমনিই রাখে না। সবাই বলে প্রমিস করা হয় তা ভেঙ্গে ফেলার জন্য ! তাই হয়তো ! কিন্তু তুমি বলেছিলে তুমি ফিরে আসবে। যেদিন আমি নিজের বিশ্বাস অবিশ্বাসের দ্বন্দ্ব যেদিন ঘোচাতে পারব, যেদিন ভুলে যেতে পারব তোমার ওপর আমার একক অধিকার সঙ্কীর্ণ গন্ডী, যেদিন আমি তুমি সম্পর্কের বেড়াজালটা ভেঙে ফেলতে পারব সেদিন ঠিক ফেরত আসবে তুমি। আর ঠিক সেটাই করেছ তুমি। কথা দিয়ে শেষ অবধি কথা রেখেছ। তোমাকে দূরে ঠেলে… দূরে সরিয়ে… জীবন থেকে হারিয়ে ফেলেই নতুন করে পেয়েছি তোমায়। একদম নিজের করে পেয়েছি। একান্ত গোপনে একার করে পেয়েছি তোমায়।
জানি ভাবছ এ আমার নতুন পাগলামি বুঝি। হ্যা, আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি, টের পাচ্ছি আমি। আর কতদিন এভাবে লুকিয়ে রাখবো আমার ঘৃণ্যতম পাপের কথা, আমার নারকীয় অপরাধের কথা। যে সম্মান, যে ভালোবাসা. যে সম্ভ্রম আমি পাই আমার পরিবার, আমার চেনা পরিচিত জগত থেকে, তা যে পুরোটাই ফাঁকি, সবটাই মেকি, এ তো তুমি আমি ছাড়া কেউ জানে না সাবি, জানবেও না। তোমাকে হারিয়ে না ফেলার তাগিদে আমার মনের ভিতর বাসকরা পশুটা যেদিন নখদাঁত বার করে আদিম হয়ে উঠেছিল সেদিন থেকেই একটু একটু করে পাগলামো বাড়ছে আমার। দু’হাতের দশটা আঙ্গুল যখন চেপে বসেছিল তোমার গলায়, তখন তোমার সেই অবিশ্বাস ভরা বিস্ফারিত দৃষ্টি আজও তাড়া করে বেড়ায় আমায়। আমি ঘুমাতে পারিনা। কিন্তু আমি যে ঘুমাতে চাই সাবি, আমায় সেই আগের মত গান গেয়ে একটু ঘুম পাড়িয়ে দেবে? দাও না সোনা। একটু ঘুম পাড়িয়ে দাও।“
এরপর অনেকগুলো পাতায় কালির আঁচড় অবধি নেই। টানা সাদা পাতা, ঠিক সাদা নয়, সময়ের আঁচে ঈষৎ হলদেটে।আবার ১৩৮-১৩৯ পাতাদুটোয় লেখা কয়েকটি লাইন।
“এমন কিছু দুঃখ আছে,হাজার সুখেও ধোয়া যায়না।
এমন কিছু সুখ আছে,এক জীবনে পাওয়া যায়না...।”
পরের কয়েকটা পাতায় অসংখ্য কাটাকুটি। পড়া যাচ্ছেনা কি লেখা আছে। কয়েকটা অসমাপ্ত স্কেচ, যেন আঁকতে আঁকতে মনমত না হওয়ায় কালির আঁচড়ে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চেয়েছে কেউ। আবার একটা চিঠি:
“সাবি…
জানো, রাস্তা থেকে কেউ যদি দোতলার এ ঘরটার দিকে তাকায়, কিছুটা অবাকই হবে! ঘরের বাতি একবার জ্বলছে একবার নিভছে। বেড সুইচ অন-অফ হচ্ছে অনবরত , তোমার সাথে আলো-অন্ধকারের এই খেলাটা কতদিন যে খেলা হয়না! আজ বুঝি সব ফিরে এসেছে আবার? কি অদ্ভূত! বছর তিনেক আগেও ঠিক এ সময়টায় তুমি আমার পাশে শুয়ে ঘুমিয়ে থাকতে। এখনও মনে হচ্ছে বিছানায় আমার পাশের জায়গাটা ঐরকমই ভরা আছে। ঐ ভাবেই ঈষৎ কাত হয়ে চোখের ওপর হাত চাপা দিয়ে শুয়ে আছ তুমি, এত কাছে যে হাত বাড়ালেই ছুঁয়ে দেওয়া যায় এমন। অথচ কত দূরেই না চলে গেছ সাবি ! আর কোনদিন কি আসবেনা কাছে? কেন আসবেনা? বিয়ের পরের তিনটা বছর খুব কি অল্প সময়? কোন মায়া ছিলনা? কিংবা কোন বাঁধন? তোমার একবারও মনে পড়েনা এই অসহায় মানুষটার কথা? ফিরে এসো সাবি, আমায় তোমার সাথে নিয়ে যাও। সবিতা ছাড়া এই আকাশে যে অন্যকোন আলো নেই। এই আকাশকে অন্ধকারমুক্ত কর সাবি, সবিতা, তোমার এই আকাশকে পথ দেখাও।“
এতক্ষনে নাম জানা গেল, সবিতা ওরফে সাবি আর আকাশ। আর কিছু লেখা নেই বললেই হয়। খাতার শেষপাতায় অসংলগ্ন হরফে লাল কালিতে কয়েকটা লাইন,মাঝে একটু ধেবড়ে গেছে, জলের ফোঁটা নাকি চোখের জল? কে জানে!
" তবু এক বিপন্ন বিস্ময় আমাদের
অন্তর্গত রক্তের ভেতর খেলা করে __
অন্তর্গত রক্তের ভেতর খেলা করে __
আমাদের ক্লান্ত করে __ ক্লান্ত করে !
লাশকাটা ঘরে সেই ক্লান্তি নাই "
মনটা ভারী হয়ে গেল। একটা অদ্ভুত মনখারাপের মেঘ ঘিরে নিল আমায়। কে এই আকাশ? সবিতাই বা কে? জানি না শুনিনা, বলা কওয়া নেই কয়েকটা অর্ধসমাপ্ত ব্যক্তিগত চিঠি, একটা শেষ হয়েও শেষ না হওয়া সম্পর্কের বিনি সুতোর টান কেমন মাকড়সার জালের মত অবসাদ বুনে চলল আমার মাথার ভেতর। কি দরকার ছিল খোরোর খাতাটা তুলে পড়তে বসার? জঞ্জালের গাদায় ফেলে দিলেই ভালো হত।
আমরা আসার আগে এ বাড়ীটা মোটামুটি খালিই পড়েছিল। বাবার কলকাতা অফিসের কলিগ নায়ার আঙ্কেল আর ওনার স্ত্রী থাকতেন। তাও আন্টি আবার ওনার ছেলে কর্মসুত্রে ত্রিবান্দ্রামবাসী বলে বছরের অনেকটা সময় সেখানেও কাটাতেন। ফলে এত বড় বাড়ীর গোটা দুই তিনেক ঘর ব্যবহৃত হত। বাকি তালাবন্ধই থাকত। নায়ার আঙ্কেল বদলী হয়েছেন দিল্লীতে।লাগেজ তো কবেই চলে গেছে, উনি বোধহয় অফিসের কোন পেন এন্ড পেপার কাজ মেটতে দিনকয়েকের জন্য এসে রয়েছেন কোলকাতায়। অফিসিয়াল গেস্টহাউসে উঠলেও বাবার সাথে দেখা করতে এসেছেন। আমরা ভুবনেশ্বরে থাকতেই ওনাকে চিনতাম। টাইটেল নায়ার হলেও জন্ম কর্ম কলকাতায়। সুন্দর বাংলা বলেন। আমার তো মাঝে মধ্যে সন্দেহ হয় তামিল ভাষাটা আদৌ জানেন কিনা। রবিবারের সকাল, শীত পড়ব পড়ব করেও পড়েনি তবে কমলালেবু রঙ রোদটা ভারী মিস্টি লাগছ। আঙ্কেল আর বাবা ছাদে উঠেছেন, বোধহয় সিগারেটের জন্য। আমার দাদু ঠাকুমা আছেন বলে বাবা পারতপক্ষে ঘরে সুখটান দেননা। তবে নায়ার আঙ্কেল দেখলাম চেন স্মোকার। দোতলার ছাদের ওপরই বড়সড় চিলোকোঠা ঘর। আমি আর আমার ভাই মিলে ঘর গোছাচ্ছিলাম। নায়ার আঙ্কেল সেদিকে তাকিয়ে সিগারেট-এ একটা টান দিয়ে বললেন,
বুঝলে রঞ্জন, তোমার বউদি থাকতে পারতপক্ষে ছাদে উঠতাম না। বড্ড কুসংস্কার মেনে চলে। আমরা এবাড়ীতে আসা থেকে শুনছি এই ঘরটায় যিনি থাকতেন, আই মিন,বাড়ীর মালিক, তিনি নাকি শেষ বয়সে ছাদ থেকে পড়ে মারা যান। ব্যস মরে গিয়েও এ ঘরটার মায়া তিনি কাটিয়ে উঠেছেন কিনা এটা তোমার বউদিকে জানিয়ে মারা যাননি বলে উনি ধরে নিয়েছিলেন এ ঘরটায় ভুতের আস্তানা। তাই ছাদটা তালাবন্ধই থাকতো।
আত্মহত্যা?
ঠিক জানিনা ভাই। নানাজনে তো নানা কথা বলে কোনটা সতি আর কোনটা মিথ্যে কে জানে! ভদ্রলোক শুনেছি খুব ভালোমানুষ ছিলেন। পূণ্যাত্মা লোক। দানধ্যান করতেন। সবাই মানতো, শ্রদ্ধা করত। ওনার লাইফে একটা ট্রাজেডী ছিল। বউ অসম্ভব সুন্দরী ছিলেন। খুব ভালোবাসতেন স্ত্রীকে। কিন্তু সে মহিলা কাউকে কিছু না বলে হঠাৎ উধাও হয়ে যাওয়ার পর থেকেই দেবদাস না কি বলো তোমরা সেই রকম হয়ে যান ভদ্রলোক। দিনের বেলায় বোঝা যেতনা কিন্তু অন্ধকার নামলেই এই ঘরে নিজে ঘরবন্দী হয়ে বোতলে পর বোতল মদ টেনে যেতেন।
তোমায় এসব আজগুবি গল্প কে বলেছে তোমায় নায়ারদা?
আরে কাজের লোক রাখছো তো? টোটাল ফিডব্যাক আরো ভালো পাবে। দ্যাখোনা।
বাড়ীর এখনকার মালিক মানে সুপ্রতিমবাবু কি ওনার ছেলে?
না, ভাগনে। বললাম না ওনার স্ত্রী খুব কম বয়সে ঘর ছাড়েন এবং তারপর ঐ ভদ্রলোক,আকাশ স্যান্যাল আর বিয়ে থা না করে দেবদাস হয়ে যান।
আকাশ স্যান্যাল ? নামটা বেশ চেনা লাগছে।
হ্যাঁ, সমাজসেবা করতেন, বললাম না, পূণ্যাত্মা লোক। দানধ্যান করতেন। স্কুল কলেজ খুলেছেন, বাবা মা বউয়ের নামে। একটা অনাথআশ্রমও চলে ওনার রেখে যাওয়া টাকায়।
তাই বলো….
কাজ করলেও কানটা ব্যস্ত ছিল বাবা আর আঙ্কেলের কথাবার্তা শোনায়। এতক্ষনে দুই আর দুই চার হল। কে আকাশ, কে সবিতা, সেটাও যেমন বুঝলাম, তেমনি, আকাশবাবুর দেবদাস হওয়ার অকথিত কাহিনী, আর হতভাগিনী সবিতার হারিয়ে যাওয়ার রহস্যও জলের মত পরিস্কার হয়ে গেল।
বিকালে লালখাতাটা শার্টের তলায় ঢুকিয়ে সোজা গঙ্গার তীর। এখানটায় ঘাট নেই। উঁচু পাড়, গঙ্গা আনমনে বইছে। ঠাকুমা বলেন, গঙ্গা সবার পাপ হরন করেন।খাতাটা গায়ের জোরে ছুঁড়ে ফেললাম যতটা দূরে পারি।টুপ করে একটা আওয়াজ হল। এক বিবেকের তাড়নায় পাগল হতে বসা ভালো(?)মানুষের অপকর্মের লিখিত সাক্ষ্যপ্রমাণ নির্বিকারে গ্রাস করে গঙ্গা বয়ে চললো আগের মত।